Saturday, June 27, 2015

ভগবান রাম নারী ও শুদ্রদের মানুষই মনে করত না



হিন্দু ধর্মের সাধারণ মানুষদের নিয়ে কোনো সমস্যা নেই । সমস্যা হিন্দুত্ববাদীদের নিয়ে । তারা ভারতের বুকে, পারলে পৃথিবীর বুকেও হিন্দুত্ব কায়েম করতে চায় । সেটা কিন্তু ভয়ঙ্কর এক তত্ত্ব । হিন্দুত্বের তত্ত্ব মানে ভারতের মাটিতে রামায়ণ ও মহাভারতের যুগ ও আদর্শকে ফিরিয়ে আনা, প্রাচীন বৈদিক সমাজের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা । হিন্দুত্বের তত্ত্ব কী ভয়ঙ্কর তা বোঝাতে বেদ, রামায়ণ ও মহাভারত থেকে নিয়ে কয়েকটা কথা লিখে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলাম । তাতেই গোঁড়া হিন্দুরা চটে লাল । তারা চটলো না ফাটলো তাতে কিছু যায় আসে না । কিন্তু  অনেক হিন্দুই আছেন যারা হিন্দুত্ববাদের মৌলবাদী রাজনীতিকে সমর্থন করেন না,  তাদেরও কিন্তু রামায়ণ, মহাভারত ও বেদ সম্পর্কে গভীর আস্থা ও শ্রদ্ধা রয়েছে । তারাও আমার লেখায় ব্যথিত হয়েছেন হয়তো এটা ভেবে যে আমি মিথ্যা কথা লিখে হিন্দুদের ঐ ধর্মগ্রন্থগুলিকে কলঙ্কিত করেছি । তাদের জন্যেই এই পোস্টটি । পরে আরো কয়েকটি পোস্ট সময় পেলে লিখতে হবে । এই পোস্টটির কয়েকটি কথা কেবল রাম ও রামায়ণকে নিয়ে । 
রাম হিন্দুদের কাছে ভগবান । সেই ভগবানও যে তার স্ত্রী সীতাকে অপমান করতে পারে তা ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের বিশ্বাসের অতীত । কিন্তু নির্মম সত্যিটা হলো যে সীতা রামের কাছে চূড়ান্ত অপমানিত ও লাঞ্ছিত হয়েছিলো । এই সত্যিটাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি । না, তারজন্যে একটাও মনগড়া কথা লিখি নি । সুকুমারী ভট্টাচার্যের লেখা  ‘বাল্মীকির রাম ফিরে দেখা’  পুস্তিকা থেকে মাত্র কয়েকটা কথার উল্লেখ করেছিলাম । সেই পুস্তিকা থেকেই তুলে এখন আবার দিচ্ছি রাম ও সীতার কথোপকথনের কিছু অংশ । সীতাকে উদ্ধার করার পর প্রথম দর্শনে রাম সীতাকে কী বলে সম্ভাষণ করেছিলো তার বর্ণনা প্রসঙ্গে সুকুমারী ভট্টাচার্য লিখেছেন,
·         “সীতা রামের কাছে এসে প্রণাম করে দাঁড়ালে নতমুখী মৈথিলীকে দেখে রাম তাঁর হৃদয়ের অন্তর্গতভাব ব্যক্ত করতে শুরু করলেন [৩/১১৫/১] । কী সেই ভাব ? যে – সীতাকে না দেখতে পেয়ে বনে বনে হা হুতাশ করে বেড়িয়েছিলেন রাম, তাঁকে দেখতে পেয়েই কী বললেন ? ‘যুদ্ধে শত্রুকে জয় করেছি, তোমাকেও মুক্ত করেছি, ভদ্রে । পৌরুষ দিয়ে যা করবার ছিল তা আমি করেছি । বৈরভাবের শেষ প্রান্তে পৌঁছেছি, ধার্ষণ প্রমার্জনা করেছি । শত্রু এবং অপমান একই সঙ্গে শেষ করেছি। আজ আমার পৌরুষ প্রকাশিত হয়েছে, আমার শ্রম সফল হয়েছে । প্রতিজ্ঞা থেকে আজ উত্তীর্ণ হয়েছি, নিজের প্রভুত্ব ফিরে পেয়েছি , [৬/১১৫/১-৪] । একথা শুনে সীতার চোখ দুটি মৃগীর মত  উৎফুল্ল হয়ে উঠল, জল ভরে এল চোখে [৬/১১৫/১০] তারপর, তা দেখেও রাম বলতে লাগলেন, ‘তোমার কুশল হোক, জেনে রাখ, এই যে যুদ্ধের পরিশ্রম, বন্ধুদের বীরত্বের সাহায্যে যা থেকে উত্তীর্ণ হয়েছি, তা তোমার জন্যে নয় । আমার চরিত্র মর্যাদা রক্ষা করার জন্যে এবং প্রখ্যাত আত্মবংশের  কলঙ্ক মোচন করার জন্যেই তা করেছি । তোমার চরিত্র সন্দেহজনক হয়ে উঠেছে । আমার সামনে তুমি আছ, চক্ষুপীড়াগ্রস্তের সামনে প্রদীপ যেমন পীড়াদায়ক হয় তেমনই । তাই জনকাত্মজা, এই দশদিক পড়ে আছে, যেখানে ইচ্ছা তুমি চলে যাও আমি অনুমতি দিলাম তোমাকে – তোমাকে আর আমার কোনো প্রয়োজন নেই । কোন সদ্বংশজাত তেজস্বী পুরুষ বন্ধুত্বের লোভে পরগৃহবাস করেছে যে, স্ত্রী, তাকে ফিরিয়ে নেবে ? রাবণের কোলে বসে পরিক্লিষ্ট, তার তার দুষ্ট দৃষ্টিতে দৃষ্টা তুমি, তোমাকে গ্রহণ করে আমি আমার উজ্জ্বল বংশের গৌরব নষ্ট করব ? যেজন্যে যুদ্ধ জয় করেছি তা পেয়েছি, তোমার প্রতি আমার অভিলাষ নেই, যেখানে খুশী চলে যাও তুমিঃ বুদ্ধিমান আমি তোমাকে বলছি, লক্ষণ, ভরত, শত্রুঘ্ন, সুগ্রীব বা বিভীষণ এদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা মনোনীত করে নাও । তোমার মত দিব্যরূপা মনোরমা নারীকে দেখে রাবণ নিজগৃহে খুব বেশীদিন চুপচাপ সহ্য করে নি’ [৬/১১৫/১৫-২৪] । [পৃ-১০]
সুকুমারী ভট্টাচার্য লিখেছেন যে মহাভারতে বনপর্বের অন্তর্গত রামোপখ্যানে রামের বয়ান একটু অন্য রকম এবং আরো বেশি অপমানকর । সেখানে  রাম সীতাকে কী বলছেন সে কথাগুলি  সুকুমারী ভট্টাচার্য বর্ণনা করেছেন  এভাবে –
·         ‘যাও বৈদেহী, তুমি মুক্ত । যা করণীয় ছিল তা করেছি । আমাকে স্বামী পেয়ে তুমি রাক্ষসের  বাড়িতে বুড়ো হয়ে যাবে এটা হয় না, তাই রাক্ষস [রাবণ]-কে হত্যা  করেছি । আমার মত ব্যক্তি ধর্ম ও অধর্মের ভেদ জেনেও পরহস্তাগতা নারীকে কেমন করে এক মুহূর্ত ধারণ করবে ? তুমি সচ্চরিত্রই হও আর অসচ্চরিত্রই হও, মৈথিলী তোমাকে আমি ভোগ করতে পারিনে, [তুমি[ যেন কুকুরে চাটা ঘি ।’ [৩/২৭৫/১০-১৩] । [পৃ-১১]
·          
·         রামের এই উক্তির তাৎপর্য বাখ্যা করতে গিয়ে সুকুমারী ভট্টাচার্য লিখেছেন, “রাম স্পষ্টই বলেছেন সীতার চরিত্র ভাল হলেও তাকে গ্রহণ করা যায় না, কারণ সে ‘পরহস্তাগতা’ হয়েছিল,  অতএব কুকুরে চাটা ঘি দিয়ে যেমন যজ্ঞীয় কর্ম করা যায় না, তেমনি সীতাকে তিনি ‘পরিভোগ’ করতে পারেন  না । প্রাচীন ভারতবর্ষে স্বামি-স্ত্রী সম্পর্কের মূলমন্ত্র উচ্চারিত হল, ‘পরিভোগ’ । খুব নির্মমভাবে  সীতাকে বলেছেন রাম, যে সীতাকে উদ্ধারের জন্যে রাম মোটেই যুদ্ধ করেননি, করেছেন ইক্ষুবাকু কূলের রাজবধূ রাক্ষসের বাড়িতে বুড়ো হয়ে গেলে তাঁর বংশ মর্যাদা হানি হয়, তাই । ... সীতাকে পরিত্যাগ কালে রাম অনায়াসেই বলছেন লক্ষণ, ভরত, শত্রুঘ্ন, সুগ্রীব, বিভীষণ যাকে ইচ্ছা পতিত্বে বরণ কর । বিধবা নারীর পক্ষেই শুধু শাস্ত্রের বিধান ছিল, দেবরকে বরণ করা । তবে কি রাম বলতে চান, সীতার পক্ষে তিনি মৃত ? স্বামী পরিত্যক্তা নারী কি বিধবার তুল্য ? আর সুগ্রীব, বিভীষণ ? বানর রাক্ষসকেও সীতা গ্রহণ করতে পারেন ? এ অপমান করার অধিকার রাম কোথা থেকে পেলেন ? শূর্পণখাও রামকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন, তবে রামও কি কুকুরে চাটা ঘি ? সীতার জন্যে এত যে বিলাপ তা কি শোকোচ্ছ্বাস না পরিভোগবঞ্চিত কামুকের আর্তনাদ ?” [পৃ-১১]  

রামের মুখ থেকে ওই সব কুৎসিত ও কদর্য কথাবার্তা শুনে চরম লাঞ্ছিত ও অপমানিত সীতা কী বলেছিলেন ? তা শোনা যাক সুকুমারী ভট্টাচার্যের লেখনি থেকেই । তিনি লিখেছেন, রামের মর্মন্তুদ কথা শুনে সীতা বললেন,
·         ‘আমার গাত্র যে স্পর্শ করা হয়েছে তখন ত আমি বিবশা দুর্বল বলে প্রবলের বশে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম । স্বেচ্ছায় আমি সেটা ঘটাই নি, এখানে অপরাধ দৈবের । আমার অধীন যেটা,  আমার হৃদয়, সেটা ত তোমাতেই সমর্পিত । দেহটা পরের অধীনে গেলে অসহায় আমি কি করব ? হে, মানদ, তোমার সঙ্গে এক সঙ্গে বেড়ে উঠেছি । তাও যদি তুমি আমাকে না জেনে থাক, তাহলে চিরিদিনের মতই আমি অভিশপ্ত । ... লঘুচিত্তে মানুষের মত তুমি আমার নারীত্বকেই সামনে রাখলে, জনকের সামনে পৃথিবী থেকে উত্থিত হয়েছিলাম সে কথাটা, আর, হে চরিত্রজ্ঞ আমার চরিত্রের বহুতর নিদর্শন ছিল তাকে প্রাধান্য দিলে না । স্বীকার করলে না যে বালিকা বয়সেই তুমি আমার পাণি গ্রহণ করেছিলে, আমার ভক্তি, চরিত্র এসব পেছনে ফেলে দিলে’ [৬/১১৬/৬,৯,১১০,১৫,১৬] । [পৃ-১২]   
·          
সীতাকে অকারণে যেভাবে রাম অপমান করে পরিত্যাগ করেছে তা শুধু ব্যক্তি নারী সীতার অপমান নয় । এ অপমান সমগ্র নারী জাতির এই রাম হিন্দুদের কাছে বিশ্বাসে ভগবান হতে পারে, কিন্তু রামের এ আদর্শ গ্রহণযোগ্য নয় । তাই রামরাজ্য আরএসএস ও বিজেপি চাইতে পারে কিন্তু যারা নারীর স্বাধীনতা ও সমান অধিকারে বিশ্বাস করে তাদের কাছে রামরাজ্য  কাঙ্খিত নয় । সুকুমারী ভট্টাচার্য রামের এই আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন এবং তাকে প্রশ্নে প্রশ্নে ক্ষত-বিক্ষত করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “বালিকাবয়সে বিবাহের উল্লেখের তাৎপর্য হল, সীতার যৌবন কেটেছে রামের সান্নিধ্যে, তাতে কখনই কি কিছু সন্দেহের লেশ মাত্র পেয়েছেন রাম ? আর একটা তাৎপর্য আছে দেহ ও মনের পার্থক্যে । যে দেহটাকে পরের স্পর্শ থেকে বাঁচানোর বল বা সামর্থ ছিল না সেইটেই বড় হয়ে উঠল ? যে-মনটা আকৈশর অবিচল-ভাবে রামের উদ্দেশ্যে সমর্পিত থেকেছে, তার কোন মূল্য নেই ?  আগেই বলেছি রামের সঙ্গে বনে আসার কোন দরকারই ছল না সীতার ।  শুধু রামকে ছেড়ে থাকা তাঁর পক্ষে দুঃসহ ছিল বলেই জোর করে সঙ্গে এসেছিলেন । এসব তুচ্ছ হয়ে গেল, শুধু তার গায়ের জোরটা রাবণের চেয়ে কম ছিল বলে ? ... লোকাপবাদের ভয়ে তিনি নির্দোষ অন্তঃসত্ত্বা নারীকে বনবাস দিচ্ছেন। নিত্যদিন প্রেমের একনিষ্ঠতা নিয়ে যে নারী স্বামীর সহচারিণী ছিলেন, তাঁকে ত্যাগ করবার আগে প্রজাদের কাছে নিজে একবার বলাও দরকার মনে করলেন যে সীতা লঙ্কায় অগ্নিশুদ্ধা, রাম ও লক্ষণ তার সাক্ষী । সমস্ত কর্তব্য শুধু ভ্রান্ত সন্দেহে সন্দিহান প্রজাদের  প্রতি, দীর্ঘদিনের নিষ্কলুষ অন্তঃশুদ্ধা সঙ্গিনীর প্রতি কোন কর্তব্য নেই ?” [পৃ – ১২]
রামরাজ্যে নারীর সম্মান, মর্যাদা, স্বাধীনতা ও অধিকার যেমন ছিল না তেমনি নিম্ন বর্ণের হিন্দুদের অবস্থাও ছিলো তদ্রুপই । বরং বলা যেতে পারে তাদের অবস্থান ছিলো আরো হীনতর । হিন্দুত্ববাদীরা 'ঘর ওয়াপসি' করছে । তাদের কাছে প্রশ্ন, তারা যাদের হিন্দু করে ঘরে তুলছে তাদের বর্ণগত অবস্থান কী হবে ? নিশ্চয় ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় তথা উচ্চ বর্ণে তাদের বরণ করা হবে না । তাদের অবস্থান হবে নিম্ন বর্ণের সমতুল্য বা তাদেরও নীচে । শুদ্ররা হলো সর্ব নিম্ন বর্ণের মানুষ যাদের রামরাজ্যে মানুষ বলেই মনে করা হতো না । তা ভগবান রামের চোখে শুদ্রদের অবস্থান কত নিম্নে ছিলো তা শোনা যাক রামায়ণের বর্ণনা থেকেই । সেই বর্ণনা দিচ্ছেন সুকুমারী ভট্টাচার্য তাঁর ‘বাল্মীকির রাম ফিরে দেখা’ পুস্তিকাতেই ।  তিনি লিখেছেন –
·         এর কিছুদিন পরে এক ব্রাহ্মণের বালকপুত্র অসময়ে মারা যায় রাজপুরোহিতরা রামকে বলেন, রাজ্যে কেউ পাপ করেছে, যার ফলে এই অঘটন ঘটল । খোঁজ করতে করতে দেখা গেল শম্বুক নামে এক শুদ্র সশরীরে দেবত্ব পাবার জন্যে তপস্যা করছে, সে নিজেই সে কথা স্বীকার করল [৭/৬/২] । ‘সেই শুদ্রটি কথা বলতে বলতেই উজ্জ্বল খড়্গ কোষ থেকে বের করে তার মুণ্ডু ছেদ করলেন রাঘব ।’ তখন দেবতারা রামকে সাধুবাদ দিয়ে বললেন, ‘রাম তুমি দেবতাদের কার্যসাধন করলে, তোমার জন্য এই শুদ্র স্বর্গভাক হতে পারল না ।’ [পৃ – ১৩]  
সুকুমারী ভট্টাচার্য রামায়ণ থেকে বর্ণ-বৈষম্যের আর একটি চিত্র তুলে ধরেছেন । সেটা এ রকম –
·         বনে যাবার পথে প্রথম রাত্রে তিনজন এলেন রামের বন্ধু নিষাদ রাজ গুহকের রাজ্যে । গুহক নানা খাদ্যসম্ভারে আয়োজন করতে চাইলে রাম বললেন, ‘তাঁরা বনবাসী, ফলমূলই খাবেন, অন্যের দান প্রতিগ্রহণ করবেন না [২/৫০/৪৩,৪৪] । গুহক যদি রথের ঘোড়াদের জন্যে খাদ্য দেন তাহলে উপকার হয়বনবাসে কিন্তু রাম-লক্ষণ-সীতা, অত্রি-অনুসূয়া, ভরদ্বাজ ও অন্যান্য মুনিদের দেওয়া ফলমূল ভোজন করেছেন, গুহকের কাছেও তা করতে পারতেন, কিন্তু তা না করে তারা রাত্রিতে তাঁরা উপবাসে কাটালেন । সেটা কি গুহক জাতিতে নিষাদ ছিল বলে?  [পৃ – ৭]
সুকুমারী ভট্টাচার্য রামের এই আচরণের তীব্র সমালোচনা  করেছেন । তিনি লিখেছেন, “গুহকের আতিথ্য গ্রহণ না করার মধ্যেও বর্ণ-বৈষম্যের প্রশ্ন ওঠে । ফলাহারী ঋষিরাও অন্যের দেওয়া ফল খেতে পারেন, বনবাসকালে রাম বেশ কয়েকজন মনুঋষির আতিথ্য নিয়েওছেন । গুহক চণ্ডাল,  তাই তার কাছে  শুধু পশুর খাদ্যই গ্রহণ করলেন ।” [পৃ – ১৫]   তিনি আরো লিখেছেন, “অন্ধমুনি বৈশ্য, তাঁর স্ত্রী শুদ্রা [২/৫৭/৬৩] । তিনি নিজেকে ‘বানপ্রস্থী’ বলেন কী করে ? তাহলে শম্বুকের সাধনাও তো অশাস্ত্রীয় হয় না ? এই শম্বুককে রাম বধ করেছেন এক ব্রাহ্মণের অকাল মৃত পুত্রকে বাঁচাতে । তাহলে প্রাণের মূল্য রামরাজত্বে বর্ণগতভাবে আপেক্ষিক, ব্রাহ্মণ-পুত্রের প্রাণ শুদ্রদের প্রানের চেয়েও দামি ? এটা মেনে নেওয়া হচ্ছে সমস্ত প্রক্ষিপ্ত অংশে । রামরাজ্যে চণ্ডালের সঙ্গে বন্ধুত্ব শুধু কথায় ? যে ফল জল ব্রাহ্মণ ঋষিদের কাছে নেওয়া যায় তা চণ্ডাল বন্ধুর কাছে নেওয়া যায় না ? শুদ্র শম্বূক  তপস্বী, কৃচ্ছ্রসাধনে রত কিন্তু সাধারণ এক ব্রাহ্মণ বালকের তুলনায় তার প্রাণের মূল্য কিছু নেই । [পৃ – ১৫]    
এই সেই রামরাজ্য যেটা সঙ্ঘ পরিবারের সদস্যরা ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে  ভারতের মাটিতে আবার পুনঃপ্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছে !

1 comment:

  1. mahashay balmiki ramayaner link dile khushi habo. Amijani oneke mangara kathao lekhe. feminism ekhon onek ta purush birodhi hoye geche. ram to kono garib ghare bridhar etho kheyechilo bole jani. please original link deben. jar lekha theke apni tule dhorlen tini ramayaner rachayita non. asha rakhi ami apnar uttar pabo.

    ReplyDelete

KARBALA: Truth and Lies

  KARBALA : Truth and Lies           GIASUDDIN                 Translated by SRIJIB BISWAS        ...