Tuesday, May 26, 2020

করোনা ডায়রি - (তিন)ঃ করোনাকে কেনো ভয়

এক 

হিস হিস করে এ পাশ ও পাশ দিয়ে 

ছুটে গেছে কতো বুলেট 

ডানে বামে সামনে সমানে নাগাড়ে 

পড়েছে বোমা, 

বিকট শব্দে ফেটেছে একটার পর একটা 

কেউ কেউ হয়তো থেকেছে পাশে জীবন বাজি রেখে 

বাকিরা সবাই সরে গেছে 

কমরেডরা শুভান্যুধায়ীরা চিৎকার করেছে – 

গিয়াসদা পালান পালান পালান, 

আমি নির্বিকার গুটি গুটি পায়ে পিছিয়ে এসেছি 

কিন্তু পালাইনি কখনো, 

মৃত্যু-ভয় আমাকে ছুঁতে পারেনি কোনোদিন। 

দুই 

না কোনো গল্পকথা নয় তা - 

 তখন আগুন ঝরানো সাতের দশক 

নক্সাল নিধন যজ্ঞ শেষে 

সিদ্ধার্থ মেতেছে সিপিএম নিধন যজ্ঞে 

আর আমরা লাল ঝাণ্ডা হাতে 

মেতেছি তেরঙ্গার দূর্গগুলি ভাঙতে 

দখল নিতে 

জেলা জুড়ে মুর্শিদাবাদে, 

জোতদার-জমিদারদের চোখে চোখ 

রেখেছি আমরা, 

চোখ রাখতে শুরু করেছে 

গ্রামের ক্ষেতমজুর ভাগচাষী প্রান্তিক কৃষকও 

যাদের আজন্ম ঠাঁয় ছিলো জমিদারের পায় 

ভৃত্যরা পদসেবা ছেড়ে লালঝাণ্ডা ধরে 

হুঙ্কার ছেড়ে কয় 

আর বঞ্চনা নয় 

ফসলের ন্যায্য ভাগ চায় 

ক্ষেতের মালিকানাও চায় - 

এ সব চোখ রাঙানি 

সহ্য হবে কেনো ওদের 

যারা সামন্ত প্রভুদের গোলাম আর তাদের সেবাদাস, 

তারা গুণ্ডা আর পুলিশ লেলিয়ে দিয়েছে 

নিরস্ত্র গণ মানুষদের উপর 

মুছে দিতে লাল পার্টি আর তার নিশান 

গোটা বাংলায়। 

তিন 

ঊনিশ শো তিয়াত্তর সাল 

গণতন্ত্রের গভীর সংকট কাল - 

হাতে মারার পাশাপাশি ভাতে মারার অভিযানে 

মেতেছে বুর্জোয়া-জমিদারদের তাঁবেদার 

তেরঙ্গা ঝাণ্ডাওয়ালা সিদ্ধার্থ রায়ের সরকার, 

পাইকারী হারে চাকরিচ্যুত করেছে তাদের যারা 

মাথা নত করেনি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কাছে -

নির্মমভাবে, 

চাকরিচ্যুতদের দলে একদিন নাম তুলে দিয়েছিলো 

আমারও অকস্মাৎ - 

১ লা ডিসেম্বর ঊনিশ শ’ তিয়াত্তর 

স্কুলে ঢুকতে গিয়ে বাধা পেলাম - 

স্কুলের গেট ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকা 

একদল চেনা অচেনা যুবকের একজন গম্ভীর কণ্ঠে 

যেন ফাঁসীর রায় ঘোষণা করলো, বললো – 

যান ইনকিলাব জিন্দাবাদ আর ধর্মঘট করুন 

স্কুলে আসতে হবেনা। 

স্কুলে আর ঢুকতে দেয়নি কোনোদিন 

সিদ্ধার্থ জমানায়। 

চার 

পঁচিশে জুন ঊনিশ শ’ পঁচাত্তর ঘোষিত হলো 

অভ্যন্তরীণ জরুরী অবস্থা - 

গোটা দেশটাকেই মিসা (কালা কানুন) দিয়ে 

জেলখানায় আটক করলেন ইন্দিরা গান্ধী, 

বেকার জীবনে নিত্য সঙ্গী তখন আমার 

অভাব অনটন আর অনিশ্চয়তা - 

ঠিক তখনই আমার সঙ্গীরা অনেকে মিসার ভয়ে 

সই করলো দল বেঁধে একে একে, 

সই করলো ইন্দিরার বিশ দফা আর সঞ্জয়ের পাঁচ দফায় - 

চরম সেই দুর্দিনেও প্রায় নিঃসঙ্গ একা আমি একদিকে 

যুঝেছি প্রাণপণে প্রবল দারিদ্রের সঙ্গে 

আর অন্যদিকে 

হয় জেল না হয় বুলেট আর বোমার ভ্রূকুটি 

তখনও লালঝাণ্ডা ছাড়িনি ভয়ে 

বরং ধরেছি আরো শক্ত করে মুষ্টিবদ্ধ হাতে 

ভয়ের কাছে আমি নতো হইনি 

ভয়ই নতো হয়েছে আমার কাছে। 

পাঁচ 

দু হাজার পাঁচ কি ছয় - 

তখন হাতে লালঝাণ্ডা আর নেই 

হাতে তুলে নিয়েছি তখন 

একটা কলম। 

জানো করোনা, সেটাও ছিলো বড়ো অপরাধ 

লাল ঝাণ্ডা ধরার চেয়েও বড়ো - 

ইসলাম আর নবী-নিযুক্ত মোল্লারা বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করলো 

আমার মৃত্যুদণ্ড, 

আমার মাথার দাম ধার্য করলো পাঁচ লাখ। 

জানো করোনা, 

মৃত্যু-ভয়ে মোল্লাদের কাছে তখনও 

মুচলেকা লিখে দিয়ে কলম তুলে রাখিনি। 

 ছয় 

জানো করোনা, 

লজ্জা সরম দূরে সরিয়ে বলি - 

ভয় কিন্তু এখন পাচ্ছি আমি 

ভয় ঢুকেছে বুকে মস্তিষ্কে ও মনে 

ভয় পাচ্ছি দিনে রাতে শয়নে স্বপনে। 

এখন কী মনে হয় জানো - 

ব্যাঙ্গালোর থেকে আমার বাড়ি 

দু’ হাজার কিমি পথ জুড়ে সর্বত্র 

ওৎ পেতে রয়েছো তুমি, 

যেদিকে তাকাই সেদিকেই দেখি যেন 

তুমি পেতে রেখেছো ফাঁদ 

বাড়ির দরজার চৌকাঠ পের হলে 

কোথাও না কোথাও নাগাল পাবে আমার 

খপ করে ধরে তখন গপ 

করে গিলবে আমায়  -

মনে হয় কী জানো – 

করোনা রূপী মৃত্যুটা ছায়ার মত যেন 

ঘুর ঘুর করছে আমাকে ঘিরে 

আমি হাঁটি সেও হাঁটে 

আমি বসি সেও বসে 

আমি উঠি সেও ওঠে 

আমি ঘুমায় সেও ঘুমায় 

ও যেন সর্বক্ষণ আমার সঙ্গে লেপ্টে রয় 

নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারিনা 

মাঝরাতে যখন ঘুম ভাঙে 

তারও ঘুম ভাঙে 

যখন বাথরুমে যাই সেও যায়। 

সাত 

আগে পাইনি কিন্তু 

এখন ভয় পাচ্ছি কেন জানো করোনা? 

শোনো করোনা তবে অকপটে বলি – 

বুলেট বোমা ছুরিতে ভয় পাইনি কোনোদিন 

কারণ মৃত্যুর জন্যে প্রস্তুত ছিলাম তখন 

ভয় পাইনি কারণ জানতাম 

এক গিয়াস মরলে 

হাজার গিয়াস জন্ম নিবে, 

ইসলামের তলোয়ারকেও ভয় পাইনি 

যদিও জানতাম মোরতাদের শাস্তি তো মৃত্যুদণ্ডই। 

এখন মৃত্যুকে ভয় পাচ্ছি থুড়ি, 

ভয় পাচ্ছি তোমাকে করোনা – 

কেনো পাচ্ছি শোনো তার কারণ, 

এক - বয়স আমার সত্তরের কাছাকাছি 

ডায়াবিটিস উচ্চ রক্তচাপ থায়রডের 

সঙ্গে আমার বাস আজ এক যুগ 

আমরা তো তোমার উপাদেয় খাবার। 

দুই – আমি এখন মৃত্যুর জন্যে প্রস্তুত নই 

আমি যে বাঁচতে চাই আরও দশ বছর, 

নিদেন পক্ষে বছর পাঁচ 

আমার যে বাঁচা ভীষণ দরকার 

সে বাঁচা শুধু নিছক বাঁচা নয় 

কিংবা নিছক আমার কারণে নয় 

আমি বাঁচতে চাই কারণ, 

আমি বাঁচলে আমার কলমটা বাঁচবে তাই। 

তিন - ইসলাম, জিহাদ আর নবীর স্বরূপ উন্মোচনে 

এখনও যে অনেক কাজ বাকি 

সে কাজ ফেলে রেখে মরতে চাই না 

একদম, 

তারপরেও করোনা, তোমার থাবায় 

যদি অকালে মৃত্যু ঘনায় 

কলমটা আমার চিরতরে থেমে যায় 

তবে তুমি নিশ্চিত জেনো 

দ্বিতীয় গিয়াস জন্ম নেবে না আর 

ভণ্ড সেক্যুলারদের এ দেশে 

যে আমার কলমটা তুলে নেবে নির্ভয়ে 

আমার বাকি কাজ এগিয়ে নিতে। 

২৭ শে মে ২০২০

Saturday, May 9, 2020

করোনা ডায়রি (দুই) - জান থেকে মান বড়ো

   
        জান থেকে মান বড়ো



    এক 

২৩শে মার্চের ট্রেনে
ঘরে ফেরার টিকিট কাটা ছিলো
কিন্তু ঊনিশ থেকেই
চাইছিলাম মন থেকে যেন
যাত্রীবাহী সব ট্রেন যেন স্তব্ধ হয়ে যায়
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে।
করোনা বাসা বেঁধেছে তখন
বড় জোর দেড় হাজার মানব দেহে
তাতেই দেশজুড়ে কাঁপন ধরেছে মানব মনে
দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিট বাতিল করার
ধূম পড়ে গেছে তাই দিকে দিকে।
কাঁপন ধরেছে ভয়ে আমার মনেও -
কিন্তু মেয়ের কাছে ব্যাঙ্গালোরে আছি অনেক দিন
চক্ষু লজ্জায় তাই বলি কী করে
যাবোনা এখন,  
অন্তর থেকে চাইছিলাম তাই
যাত্রীবাহী ট্রেনগুলো সব স্তব্ধ হয়ে যায়
যেনো তেইশের আগেই। 

           দুই 

রেলভ্রমণ বিমানভ্রমণ মনে হতো  
যেনো একটা মস্ত বড়ো মরণফাঁদ
করোনা ওৎ পেতে রয়েছে যেনো
রেল আর বিমানের প্রকাণ্ড দেহজুড়ে -  
প্রতিটি কামরায় প্রতিটি আসনে শৌচালয়ে
প্রতিটি দরজায় আর কোনায় কোনায়     
ভয়ে তাই কাঁটা হয়ে থাকতাম সর্বক্ষণ
ঠিক মতো ঘুম হয়না রাত্রে
করোনা তো নয় যেনো যমদূত
ফোঁস ফোঁস করে
নিঃশ্বাস ফেলছে ঘাড়ের উপর  
অবশেষে বহু আকাঙ্ক্ষিত ঘোষণাটি হলো
করোনা ঠেকাতে -
২৩শে মার্চ থেকে বন্ধ থাকবে
যাত্রীবাহী সব প্লেন ও ট্রেন,  
ক’দিন পর রাতে ঘুমালাম সেদিন
পরম স্বস্তিতে নিশ্চিন্তে নির্ভয়ে।

       তিন

লকডাউনের আজ ৪৭তম দিন
তৃতীয় দফার লকডাউন চলছে দেশজুড়ে
আড়াই লক্ষ প্রাণ সংহার করে এ গ্রহের
আক্ষরিক অর্থেই করোনা
আজ প্রকটিত ভয়াল করাল রূপে,
ভীত-সন্ত্রস্ত জবুথবু গোটা বিশ্ব
পরাক্রমশালী ট্রাম্প থেকে মোদি  
সবার কণ্ঠে পরাজিত সেনা নায়কের করুণ আর্তনাদ -  
বাঁচতে হবে আমাদের করোনাকে সঙ্গে নিয়েই।

            চার

ভারতেও করোনা সংহারের বলি ইতিমধ্যেই দুই সহস্রাধিক
সংক্রমণ ছুঁলো বলে লক্ষ শরীর
নিয়ন্ত্রণ শব্দটিকে দলে পিষে মাড়িয়ে
করোনা ছুটছে পাগলা ঘোড়ার মতন
ভারতকেও নিয়ে যেতে মৃত্যুপুরীর দিকে।
ঘরে বাইরে দরজার মুখেই দাঁড়িয়ে আছে যেনো
করোনা-রূপী মৃত্যুর সাক্ষাৎ যমদূত,
সত্তর ছুঁই ছুঁই আমি বহন
করে চলেছি দেহে তিন তিনটি মারণ রোগ –
বহুমূত্র রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, থায়রয়েড
করোনা তো খুঁজছে হন্যে হয়ে আমাদেরই  
খাঁচাবন্দী পাখির মতন
তাই যাপন করছি বন্দীজীবন
ভয়ে ঘরের চৌকাঠ মাড়াইনি দেড় মাস।

           পাঁচ

সেই আমি দিন রাত জপছি   
ট্রেন প্লেন চলতে শুরু করুক এখনই 
লকডাউন থাকুক
কিন্তু ট্রেন চলুক প্লেন চলুক,  
করোনা তাণ্ডবে কাঁটা ভীত ত্রস্ত আজও
তবু আমার চাই এখনই
একটা ট্রেন কিংবা প্লেনের টিকিট,  
করোনা হানায় যদি জান যায় যাক
কিন্তু মন বড়োই উদগ্রীব উতলা আজ
যেভাবেই হোক ঘরে ফিরতে

        ছয় 

মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে চাওয়া
কি শুধু ঘরে ফেরার তাগিদে?
এমন মরিয়া মনোভাব কি হতোই
মেয়ের বদলে ছেলের কাছে এসে থাকলে,   
কিংবা মেয়ে আমার গৃহবধূ না হয়ে  
উপার্জনশীল স্বাবলম্বী ব্যক্তিত্ব হলে?
মেয়ের কাছে এসেছিলাম মেয়ে-জামায়েরই কাজে
তাদেরই একান্ত অনুরোধে   
কিন্তু সে প্রয়োজন ফুরিইয়েছে অনেক দিন
এখন তাই নিজেকে কেবলই মনে হয়
বোঝা জামাইয়ের সংসারে,  
যত দিন যায়
এ অনুভূতি তত তীক্ষ্ণ হয় -
নিষ্কৃতি চাই তাই এ জীবন থেকে।

         সাত 

জীবন আজ এক নির্মম উপলব্ধির সাক্ষী -
শুধু দিন বদলায় না দ্রুত
দ্রূত বদলায় পরিবেশ পরিস্থিতি
আর বদলায় দ্রুত মানুষের মনও -
জীবন তখন তুচ্ছ ক্ষুদ্র মনে হয় 
আর মনে হয়
আত্মসম্মান আত্মমর্যাদাই সব থেকে বড়ো
তার চেয় কিছু নয়।
আত্মসম্মান তখন বড়ো হয়ে ওঠে জীবনের চেয়েও।

১০ই মার্চ ২০২০ ব্যাঙ্গালোর  









Thursday, May 7, 2020

করোনা ডায়রি (এক)ঃ কখনো কি এতো মৃত্যুভয় পেয়েছি?


কখনো কি এতো মৃত্যুভয় পেয়েছি?

আমি এখন সত্তর ছুঁই ছুইঁ করছি
জীবনের চৌত্রিশটা বসন্ত কেটেছে রাজনৈতিক প্রাঙ্গণে
সাড়ে তিন দশকের দীর্ঘ জীবনটা ছিল না
মসৃণ, ফুল বিছানো
মৃত্যু ছিলো নিত্যসঙ্গী, ছায়াসঙ্গী,
পায়ে পায়ে মৃত্যু যেনো বেড়ি পরিয়ে রাখতো
কানের কাছে হিশহিশ শব্দের ঢেউ তুলতো,
একবার একটা বুলেট তো কানের পাশ দিয়ে হুশ হুশ
শব্দ তুলে বেরিয়ে গেলো,
তার আগেই একদিন প্রতিপক্ষের লোকজন
পেয়ে গেলো একেবারে হাতের মুঠোয়,
অদূরেই ফিসফিস করে ফন্দি আঁটা হচ্ছে
কুচি কুচি করে কেটে বস্তাবন্দি দেহটা
কীভাবে পাচার করা হবে তার,
ফন্দিটা অবশেষ ব্যর্থ করে দিলো একজন কনস্টেবল এসে।
মৃত্যু আমার পায়ে পায়ে হেঁটেছে সদা যখন
তখন কি মৃত্যুর চোখ রাঙানিকে
ভয় পেয়েছিলাম আদৌ?
যখন কানের পাশ দিয়ে হুশ হুশ করে
বুলেটটা বেরিয়ে যায় লাস্ট ওয়ার্নিংগ দিয়ে
তখন কি ভয় পেয়েছিলাম?
যখন নিশ্চিত মৃত্যর কোলে শুয়ে ছিলাম
প্রতিপক্ষের বেষ্টনীর মধ্যে
তখন কি খুবই ভয় পেয়েছিলাম?
ভয় পেলে তো রাজনীতির প্রাঙ্গণটা আরও
বেশী করে আঁকড়ে পড়ে থাকতাম না,
পারতাম না ডিজির আমার জন্যে বরাদ্দ করা
সিকিউরিটি হেলায় ফিরিয়ে দিতে।
আজ ভাবছি কেউ যদি
একজন সিকিউরিটি দিতো করোনার থাবা থেকে বাঁচতে।

৮ই মার্চ, ২০২০ (১৫৯তম রবীন্দ্র জয়ন্তী), ব্যাঙ্গালোর 





KARBALA: Truth and Lies

  KARBALA : Truth and Lies           GIASUDDIN                 Translated by SRIJIB BISWAS        ...