‘জোরপূর্বক বিয়ে’ মানে
একজন নারীকে জবরদখল করে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে বিয়ে
করা। কোনো নারীকে বিয়ে করে তার সঙ্গে যৌনমিলন করলে সেটা ধর্ষণের পর্যায়ে পড়ে। এমন
বিয়েকে নিন্দা করার জন্যে নিন্দাসূচক কোনো ভাষা বা বিশেষণই যথেষ্ট নয়। যথেষ্ট নয় কুৎসিৎ,
কদর্য, পাশবিক, বর্বরোচিত, জঘন্য, অমানবিক, ইত্যাদি কুশব্দগুলিও। এরূপ বিয়ে এতোই অসভ্য প্রকৃতির যা কোনো সভ্য সমাজের পক্ষেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রাচীন
কালে ও মধ্য যুগে যখন দাসপ্রথা চালু ছিলো তখন রাজা-বাদশা-সম্রাটরা এভাবে তাদের
দখলে থাকা দাসীদের মধ্যে যারা খুবই রূপসী তাদের বিয়ে করতো। সেদাসপ্রথার যুগে রাজ্য বা
সাম্রাজ্য বিস্তারের যুগে রাজা-মহারাজারা যুদ্ধ করতো। যে রাজা বা সম্রাট যুদ্ধে
বিজয়ী হতো সে যেমন বিজিত রাজার রাজ্যের দখল নিতো তেমনই সেখানকার মানুষদেরও বন্দী
করে নিয়ে এসে দাস বানাতো। বলা বাহুল্য যে বন্দীদের মধ্যে নারীরাও থাকতো। তাদের মধ্যে
যাদের যৌবন ও রূপ দেখে তারা মোহিত হয়ে যেতো তাদের বিয়ে করতো। বিয়ে করতো
শুধু ভোগ করবে বলে। ফলে রাজা-বাদশা-সম্রাটদের হারেম সদা রূপসী নারীদের ভিড়ে
টইটম্বুর থাকতো। সেই রূপসী জায়াদের
সঙ্গে রাজা-বাদশা-সম্রাটদের শুধু দৈহিক
সম্পর্কই থাকতো, সেখানে প্রেমের প্রবেশ ছিলো নিষিদ্ধ। হারেমের বাসীন্দা ঊর্বশীদের রাণী বা সম্রাজ্ঞী নামে অভিহিত করা হতো এবং
তাদের সেবায় অনেক দাসদাসী নিযুক্ত
থাকতো বটে, কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তাদের
কোনো অধিকার ও স্বাধীনতা ছিলো না। দেওয়া হতো না তাদের
এতটুকু সম্মান ও মর্যাদা। সুতরাং সংশয়ের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই যে দাসীদের বেছে
বেছে বিয়ে করাটা ছিলো বিয়ের নামে এক প্রকারের
প্রহসন ও তামাশা। সে প্রহসন ও তামাশা করা হতো
বস্তুতঃ সমগ্র নারীজাতিরে সঙ্গে। ফলে
রাজা-বাদশাদের ঐ তামাশা-বিয়ে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি
পেলেও সামাজিক স্বীকৃতি পায়নি। রাজা, বাদশা বা সম্রাটরা সর্ব যুগেই নিজেদের
ঈশ্বরের প্রতিনিধি বলে দাবি করতো। তারা বলতো যে তারা যা বলছে তা ঈশ্বরের কথা, তারা
যে আইন প্রণয়ন করছে তা ঈশ্বরের আইন। কিন্তু তারা কেউ দাসীদের জোর করে বিয়ে করার অপরাধকে ঢাকবার জন্যে
ঈশ্বরের নামে বৈধ বলে প্রচার করেনি। ফলে যে যুগে দাসপ্রথার
রমরমা ছিলো সে যুগেও ‘জোরপূর্বক বিয়ে’ সামাজিক প্রথা হিসেবে স্বীকৃতি ও প্রতিষ্ঠা
পায়নি।
সব যুগেই রাজা, বাদশা বা
সম্রাটদের হুকুম তামিল করাই ছিলো ধর্মগুরুদের কাজ। তারা তো আসলে রাজা-মহারাজাদের
উচ্ছিষ্টভোগী ভৃত্যই ছিলো। এই ভৃত্যরা তাদের প্রভুদের স্বার্থে ধর্মের বিধান তৈরী
করতো এবং সেগুলো ঈশ্বরের নামে প্রচার করতো। পরে সেই বিধানগুলোই ধর্মগ্রন্থে
লিপিবদ্ধ হতো ঈশ্বরের বিধান বলে। কিন্তু কোনো ধর্মগুরু ‘জোরপূর্বক বিয়ে’কে ঈশ্বরের
দোহায় দিয়ে বৈধতা দিয়েছে বলে শোনা যায় না।
ফলে কোনো ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থই এরূপ বিয়েকে ঈশ্বরের নামে বিধিসম্মত বলে
স্বীকৃতি প্রদান করেনি। তবে এক্ষেত্রে একমাত্র
ব্যতিক্রম হলো ইসলাম ধর্ম। ইসলামে এরূপ জোরপূর্বক বিয়ে করা দোষের কিংবা অপরাধের
নয়। এভাবে বিয়ে করা ইসলাম ধর্মে জায়েজ তথা বিধিসম্মত। ইসলামের প্রবর্তক মুহাম্মদ এই
বিয়েকে আল্লাহর নামে মান্যতা ও বৈধতা দেন। শুধু বৈধতা প্রদানই করেন নি, আরবে এবং সমগ্র ইসলামি
সাম্রাজ্যে মুসলিম সমাজে এই বিয়ের ব্যাপক প্রচলন ও প্রসার ঘটিয়েছিলেন। তিনি নিজেও কয়েকজন
অপরূপ সুন্দরী যুবতীকে জোরপূর্বক বিয়ে করেছিলেন। এর মধ্যে দিয়ে নারীজাতিকে তিনি কী চোখে দেখতেন তার সম্যক পরিচয়
পাওয়া যায়। শুধু পণ্যই নয়, নারী ছিলো তাঁর চোখে স্থাবর সম্পত্তিও যাদের লুঠ করা ও
ভোগ করা যায়।
না, শরিয়তি আইনে কিন্তু
‘জোরপূর্বক বিয়ে’র উল্লেখ নেই যেমন ‘চুক্তি বিয়ে’ (contractual
marriage), ‘হিল্লা বিয়ে’ এবং ‘মুতা বিয়ে’র উল্লেখ আছে। থাকার কথাও
নয়। কারণ, জোরপূর্বক বিয়ে করার ঘটনা আজো ঘটে, কিন্তু সে কথা কেউ স্বীকার করে না। বরং নিজেদের
কুকীর্তি ঢাকা দিতে সবাই অন্য গল্প বলে। মুহাম্মদ ও তাঁর শিষ্যরাও তাই সে
কথা মুখে স্বীকার করেন নি এবং তাঁরাও তাঁদের কুকীর্তিগুলি ঢাকতে বহু গল্প
বানিয়েছেন। এ সব কথা থাক। মূল কথা হলো, এটাই নির্মম সত্য ও বাস্তব যে জোরপূর্বক বিয়ে ইসলামে আইনসিদ্ধ। এটা যে বাস্তব এবং সত্যি তার হাজারো প্রমাণ রয়েছে কোরান, হাদিস এবং মুহাম্মদের জীবনচর্চায়।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে মক্কা থেকে মদিনা যাওয়ার পর মুহাম্মদ
এ বিয়ের প্রবর্তন করেন। মক্কায় এটা প্রচলন করার
কথা তাঁর পক্ষে ভাবা সম্ভবই ছিলো না। কারণ, প্রথমতঃ প্রথম জায়া খাদিজার উপস্থিতি এবং
দ্বিতীয়তঃ সাংগঠনিক দুর্বলতা। খাদিজা শুধু তাঁর জায়া ছিলেন না,
তিনি তাঁর মনিবও ছিলেন। কারণ বিয়ের আগে
খাদিজা তাঁকে তাঁর বাণিজ্য দেখভাল করার জন্যে কর্মচারী নিযুক্ত ছিলেন। সুতরাং
খাদিজার অধীনে থেকে নারীবিরোধী ও নারীবিদ্বেষী আইন প্রণয়ন করার কথা তাঁর পক্ষে
স্বপ্নেও ভাবা সম্ভব ছিলো না। আর নতুন আইন বা প্রথা্র প্রচলন ঘটাবার জন্যে শক্তি
ও সংগঠন থাকা আবশ্যক তার কোনোটাই মুহাম্মদের ছিলো না যতদিন তিনি মক্কায় ছিলেন। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে খাদিজার জীবদ্দশায়
নারীবিরোধী আইন তো দূরের কথা,
নারীবিরোধী একটা উক্তিও মুহাম্মদের কণ্ঠে
শোনা যায় নি।
মদিনায় গিয়ে মুহাম্মদ
অচিরেই তাঁর মত ও পথের আমূল পরিবর্তন আনেন। শান্তি, সহিষ্ণুতা ও ধৈর্যের পথ ছেড়ে
বলপ্রয়োগ ও হিংসার পথ অবলম্বন করেন। আর সে পথটাই ইসলামের
পরিভাষায় হলো পবিত্র জিহাদ (The holy war)। ইসলাম প্রচার
ও প্রসারের হিংসাত্মক মত ও
পথকে ঢাকবার জন্যে মুহাম্মদ তার
গায়ে ‘পবিত্র জিহাদ’-এর চাদর (তত্ত্ব) জড়িয়ে দেন। জিহাদের অর্থ হলো আল্লাহর আইন
প্রতিষ্ঠার জন্যে আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক
সশস্ত্র যুদ্ধ। তিনি শত্রুর নতুন সংজ্ঞা বাঁধলেন। বললেন, যারা আল্লাহ ও আল্লাহর
প্রেরিত
পুরুষকে অস্বীকার করে তারাই আল্লাহর
শত্রুদের। ইসলামের পরিভাষায়
আল্লাহর শত্রুদের অবিশ্বাসী বলা হয়। মুহাম্মদ আরো
বললেন যে জিহাদ করা
প্রত্যেক মুসলমানের জন্যে ওয়াজিব অবশ্য পালনীয় কর্তব্য)। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে
ইসলাম প্রতিষ্ঠা ও প্রসারের ক্ষেত্রে মুহাম্মদের
প্রধান অস্ত্রই ছিলো জিহাদ।
জিহাদে শত্রুদের উপর বিজয় অর্জিত হলে শত্রুদের
অধিকারে থাকে ভূমিতে ইসলামের পতাকা ওড়ানো হতো। তারপর তাদের সোনা-দানা, হীরে-জহরত যতকিছু মূল্যবান সম্পত্তি
থাকতো সবই লুঠ করে মদিনায় নিয়ে আনা হতো। আর সেই সঙ্গে
শত্রুদের মধ্যে যারা পালাতে পারতো না তাদের নারী, পুরুষ ও শিশু নির্বিশেষে সকলকেই
বন্দি করে নিয়ে আসা হতো। বন্দি মানুষগুলো-সহ লুণ্ঠিত সমস্ত দ্রব্যই পাঁচ
ভাগের চার ভাগ মুহাম্মদ বণ্টন করে দিতেন জিহাদে অংশগ্রহণকারী
মুসলমানদের মধ্যে। একদা স্বাধীন মানুষগুলোকে মুহাম্মদ এভাবে
দাসত্বের শিকলে বেঁধে ফেলতেন। বিশ্বজুড়ে যখন সমাজ বিকাশের অনিবার্য নিয়মে দাসপ্রথা
অবসান হওয়ার পথে তখন মুহাম্মদ সেই দাসপ্রথাকে পুনরায় ইসলামে প্রবর্তন করলেন বল্গাহীনভাবে। বলা
বাহুক্য যে প্রবর্তন করলেন আল্লাহর নামে। মুহাম্মদ তাঁর শিষ্যদের বললেন যে তোমরা যা অর্জন
করেছো তা পবিত্র জেনে ভোগ করো – এটাই আল্লাহর হুকুম। অবিশ্বাসী নারীদের প্রসঙ্গে
বললেন যে তোমাদের ভাগে যে নারীরা পড়েছে তাদের তোমরা তোমাদের স্ত্রীর ন্যায় যথেচ্ছ ভোগ করতে পারো, পছন্দ হলে
তাদের বিয়ে করতে পারো, তাদের বিক্রি করেতেও পারো। মুসলমানরা তাই স্বভাবতই অবিশ্বাসী বন্দি নারীদের স্ত্রীরূপে যথেচ্ছ ভোগ করতো এবং এরই পাশাপাশি অতিশয় সুন্দরী
ও অল্পবয়সী নারীদের রূপলাবণ্য দেখে মুগ্ধ হলে বিয়েও করতো। বলা বাহুল্য যে অবিশ্বাসী অসহায় নারীদের প্রবল অনিচ্ছা, অনীহা, অসম্মতি
ও
আপত্তিকে অগ্রাহ্য করেই তারা বিয়ে করতো। অবিশ্বাসী
নারীদেরতো প্রবল আপত্তি থাকায় স্বাভাবিক ছিলো। কারণ, তাদের চোখে জেহাদে
অংশগ্রহণকারী মুসলমানরা ছিলো এক একজন ভয়ঙ্কর দস্যু। সেই দস্যুদের তারা তারা মনে
মনে প্রচণ্ড ঘৃণা করতো। ঘৃণা করাটাই
স্বাভাবিক ছিলো, কারণ তারাই তো তাদের চোখের সামনে তাদের পতি-পিতা-ভ্রাতা-সহ
আত্মীয়-স্বজনদের হত্যা করেছে নির্মমভাবে। অথচ কী আশ্চর্য যে, সেই হত্যাকারী
দস্যুদেরই মুহাম্মদ সমাজের সর্বশ্রেষ্ঠ মহান সন্তান বলে আখ্যায়িত করেছেন। সুতরাং এ কথা বলার অপেক্ষা থাকে না যে, কোনো
অবিশ্বাসী বন্দি নারীদের যখন মুসলমানরা বিয়ে করতো তখন তারা সেই বিয়ে মন থেকে কখনোই
মেনে নিতে পারতেন না। অসহায়
নারীদের জোরপূর্বক এই বিয়েকে মুহাম্মদ তবুও বৈধতা
দিতে কুণ্ঠা ও দ্বিধা করেন নি।
লুঠ করে নিয়ে আসা
কতিপয় অবিশ্বাসী বন্দিনারী তথা দাসীকে মুহাম্মদ নিজেও
বিয়ে করেছিলেন। তার জন্যে তাঁর প্রবল সমালচনাও হয়েছিলো সমগ্র
আরবে। সমালোচনা শুধু বাইরেই হয় নি, প্রবল গুঞ্জন হয়েছিলো তাঁর শিষ্যদের মধ্যে এবং এমনকি তাঁর পত্নীদের
মধ্যেও। সে সব সমালোচনা বন্ধ করার জন্যে অবশ্য আল্লাহ তাঁর সহায় হতে ভোলেনি!
আল্লাহ তৎপরতার সাথে তাঁকে
বৈধতার সীলমোহর প্রদান
করেছিলো! কোরানের সেই সীলমোহরের বয়ানটি
লিপিবদ্ধ রয়েছে। দেখা যাক সে বয়ানে আল্লাহ কী বলেছে - “হে নবী! আমি তোমার জন্য বৈধ করেছি তোমার স্ত্রীগণকে যাদের তুমি দেনমোহর দান করেছ এবং এবং বৈধ করেছি – তোমার অধিকারভুক্ত দাসীগণকে, যাদের
আমি দান করেছি, এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি তোমার চাচাতো ভগ্নী ও ফুফুতো ভগ্নী, মামাতো ভগ্নী ও খালাতো ভগ্নী যারা তোমার জন্যে দেশ ত্যাগ করেছে, এবং কোনো বিশ্বাসী নারী নবীর নিকট নিবেদন করতে চাইলে – সেও
বৈধ, এটা বিশেষ করে তোমার জন্য, অন্য বিশ্বাসীদের জন্য নয়, যাতে
তোমার কোনো অসুবিধা না হয়। বিশ্বাসীদের স্ত্রী এবং
তাদের দাসীগণ সম্বন্ধে যা নির্ধারিত করেছি তা আমি জানি । আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়াময়।” (সুরা
আহযাব, ৩৩/৫০) কোরান বলছে ‘এবং
বৈধ করেছি – তোমার অধিকারভুক্ত দাসীগণকে, যাদের
আমি দান করেছি’। বলা
বাহুল্য যে এই ‘অধিকারভুক্ত দাসীগণ’ হলো সেই অবিশ্বাসী অসহায় নারীগণ যাদের লুঠ করে
নিয়ে এসে ক্রীতদাসী বানানো হয়েছে। অবিশ্বাসী অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে তাদের
মাতা-পত্নী-ভগ্নীদের লুঠ করে নিয়ে এসে মুহাম্মদ বললেন যে ঐ নারীরা হলো আল্লাহর
দান। কী নিষ্ঠুর রসিকতা! সেই অবিশ্বাসী নারীদের ভোগ করা ও বিয়ে করা যে মুহাম্মদ
ছাড়াও সকল মুসলমানদের জন্যেই বৈধ সে কথা
আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কোরানের ভাষ্যটি হলো এ রকমঃ “এবং নারীদের মধ্যে সধবাগণ (অবৈধ); কিন্তু তোমাদের
দক্ষিণ হস্ত যাদের অধিকারী – আল্লাহ তোমাদের জন্য তাদেরকে বিধিবদ্ধ করেছেন।”
(সুরা নিসা, ৪/২৪) প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে এখানে
যে সধবা নারীদের অবৈধ করা হয়েছে তারা কেবল মুসলিম নারী, অবিশ্বাসী নারীদের জন্যে
এটা প্রযোজ্য নয়, তারা সধবা হলেও মুসলমানদের জন্যে তারা বৈধ। অধিকারভুক্ত দাসী তথা অবিশ্বাসী নারীগণ মুসলমানদের
জন্যে বৈধ এ কথা কোরানের অনেক আয়াতেই বলা হয়েছে। সে রকম আর একটি আয়াত হলো, “আর যদি তোমরা আশংকা কর যে পিতৃহীনগণের প্রতি সুবিচার
করতে পারবে না, তবে নারীগণের মধ্য হতে তোমাদের মন মতো দু’টি, ও তিনটি ও চারটিকে
বিয়ে করো;কিন্তু যদি তোমরা আশংকা করো যে, ন্যায় বিচার করতে পারবে না, তবে মাত্র
একটি অথবা তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যার অধিকারী
(ক্রীতদাসী), এটা অবিচার না করার নিকটবর্তী।” (সুরা নিসা, ৪/৩) প্রসঙ্গতঃ
সাহাবিদের অনেকের মধ্যেই যথেষ্ট মূল্যবোধ ও বিবেকবোধ ছিলো। ফলে তারা পরনারীদের ভোগ
করা ও বিয়ে করার বিধানটা তারা মেনে নিতে পারেনি। তাদের সেই বিবেক বোধ ও মূল্যবোধকে
ধ্বংস করতে মুহাম্মদ বারবার আল্লাহর ওহি আবৃত্তি করেছেন। সে রকম একটি ওহি হলোঃ “যুদ্ধে যা তোমরা লাভ করেছ তা বৈধ ও উত্তম ভেবে উপভোগ করো।”
(সুরা আনফাল, ৮/৬৯)
আগেই উল্লেখ করা হয়েছে
যে, অধিকারভুক্ত অবিশ্বাসী নারীদের সম্মতি ব্যতিরেকেই মুসলমানরা বিয়ে করতো। সুতরাং
এ ধরণের বিয়ে বলা বাহুল্য যে জোরপূর্বক বিয়ের শ্রেণিতেই পড়ে। পূর্বেই উল্লেখ করা
হয়েছে যে এরূপ জোরপূর্বক বিয়ে মুহাম্মদ
নিজেও করেছিলেন। সে রূপ বিয়ে করা পত্নীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনজন ছিলেন জুবেইরিয়া, সাফিয়া এবং রায়হানা। বলা বাহুল্য যে এই তিনজনই ছিলেন কম বয়সী এবং অতীব
সুন্দরী। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে এঁরা ছিলেন ইহুদী সম্প্রদায়ের অভিজাত পরিবারের
সধবা নারী যাদের পতিদের নির্মভাবে হত্যা করা হয়েছিলো। এঁদের বিষয়ে বিস্তারিত
আলোচনা করা হয়েছে ‘মুহাম্মদের হারেম সংবাদ’ অধ্যায়ে।
No comments:
Post a Comment