গত ১লা জুলাই বাংলাদেশের ঢাকার গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারী কাফেতে আইএস
একটি ভয়ঙ্কর জঙ্গী হামলা চালায় যে হামলায় বিদেশী
নাগরিক-সহ কুড়িজন মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে জঙ্গীরা। জঙ্গীদের মধ্যে জীবিত ধৃত
একজন জঙ্গী বলেছে যে সে জাকির নায়েকের
ভাষণ শুনে জিহাদি তথা জঙ্গী হওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছে এবং আইএস-এর সঙ্গে যোগ
দিয়েছে। শাসক আওয়ামী লীগের একজন নেতার
পুত্র রোহন ইমতিয়াজ গুলশানে হামলার কয়েক দিন আগে ফেসবুকে জাকির নায়েককে উদ্ধৃত করে
জিহাদের পক্ষে পোস্ট দিয়েছিলেন বলে কয়েকটি
সংবাধ্যম জানিয়েছে। আইএস – এর ভারতের হায়দ্রাবাদ-মডিউলের প্রধান ইব্রাহিম
ইয়াজদানিও জাকির নায়েকের ভাষণ শুনে গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পিস টিভিতে জাকির নায়েকের
বক্তৃতা শুনতেন এবং ২০১০ সালে একবার
নায়েকে দশদিনের প্রচার শিবিরে স্বেচ্ছাসেবকও ছিলেন সরকারী সূত্রেজানা যাচ্ছে। জাকির
নায়েক (ভারতের মুম্বাইয়ের অধিবাসী) একজন মুসলিম ধর্মগুরু এবং ধর্ম প্রচারক। ধর্ম
প্রচার করার জন্যে তিনি ‘ইসলামিক রিসার্চ ফাউণ্ডেশন নামে’ একটি শক্তিশালী সংগঠন আছে,
এবং আছে পিস টিভি নামে নিজস্ব একটি বৈদ্যুতিন চ্যানেলও। পিস টিভির দৌলতে জাকির
নায়েক আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি ভীষণ পরিচিত নাম এবং ভীষণ জনপ্রিয় ধর্মগুরুও। ইংরাজী,
হিন্দি, উর্দু ও বাংলা-সহ অনেক ভাষাতে এবং ভারতের বাইরে বাংলাদেশ ও চীন-সহ বহু
দেশে পিস টিভি সম্প্রচারিত হয়। এক কোটি চল্লিশ লক্ষ তাঁর ফলোয়ার আছে এবং বিশ্বের
কুড়ি কোটি মানুষ তাঁর পিস টিভির শ্রোতা।
এই পরিসংখ্যান থেকে অনুমান করা যায় তিনি কতোটা জনপ্রিয়। মুসলিম জঙ্গীদের অনেকেই
তাঁর ভাষণ শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে আইএস-এ যোগ দিয়েছে
এই খবর জানার পর বাংলাদেশ ও ভারত সরকার
তাঁর পিস টিভির বন্ধ করে দেয়।
আমি বাক-স্বাধীনতা ও মত প্রাকাশের অধিকারের পক্ষে। যেদিন থেকে হাতে কলম তুলে নিয়েছি সেদিন থেকেই এই
অধিকারের পক্ষে লড়াই করছি। বই নিষিদ্ধ করা, ফেসবুক এ্যাকাউন্ট ক্লোজ করা,
ব্লগ বন্ধ করা, সিনেমা বন্ধ করা, টিভি চ্যানেলে সিরিয়াল বন্ধ করা ও টিভি চ্যানেল
বন্ধ করার তীব্র বিরোধী আমি। তসলিমা নাসরিনের বই (দ্বিখণ্ডিত) নিষিদ্ধ করা হলে,, তাঁকে কলকাতা
থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হলে, তাঁর একটি বইয়ের (নির্বাসন) আনুষ্ঠানিক প্রকাশ এবং ‘তারা’
টিভিতে একটি মেগা সিরিয়াল বন্ধ করে দেয়া হলে আমি প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছি।
বাংলাদেশে যখন মুক্তমনা লেখক ও ব্লগাররা যখনই আক্রান্ত ও খুন হয়েছেন তখনই তার
বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি। কলকাতায় যখন লেখক ও মাদ্রাসার শিক্ষক মোরসালিন মোল্লা ও কাজী মাসুম আক্তার
আক্রান্ত হয়েছেন তখনই প্রতিবাদে সরব হয়েছি। সেই আমি জাকির নায়েকের পিস টিভি বন্ধ
করাকে সমর্থন করছি। সমর্থন করছি, কারণ আমি
যেমন বাক-স্বাধীনতা ও মত
প্রকাশের পক্ষে তেমনই হিংসা ছড়ানো, হত্যা করা ও হত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার বিপক্ষে। হিংসা প্রচার
করা, হত্যা করা ও হত্যা করায় প্ররোচনা দেওয়া আমি মনে করি একটি ঘৃণ্যতম মানববিরোধী
কাজ। জাকির নায়েকের পিস টিভির বিরুদ্ধে এই অভিযোগগুলি উঠেছে। তাই আমি পিস টিভি
বন্ধ করাকে সমর্থন করি।
আমি যতোটা বাক-স্বাধীনতা ও লেখকের মত প্রকাশের পক্ষে ঠিক ততোটাই হিংসা
ছড়ানো, হত্যা করা ও হত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার বিপক্ষে। বাক-স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের
অধিকারের নামে হিংসা প্রচার করা, হিংসাকে প্রশ্রয় দেওয়া, হত্যা করা ও হত্যা করায়
প্ররোচনা দেওয়ার ঘোর বিরোধী আমি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে হিংসা প্রচার করা,
হিংসাকে সমর্থন করা বা মদত দেওয়া এবং হত্যাকে সমর্থন করা বা হত্যায় ইন্ধন জোগানো ও
প্ররোচনা দেওয়া মানবতাবিরোধী ও মানববিরোধী কাজ। জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে, তাঁর পিস
টিভির বিরুদ্ধে এই অভিযোগগুলি কিন্তু জোরালোভাবেই রয়েছে। গুরুতরো অভিযোগ রয়েছে তাঁর নিজের
তৈরী ও পরিচালিত সংগঠন ‘ইসলামিক রিসার্চ ফাউণ্ডেশন’ – এর বিরুদ্ধেও। নানা প্রলোভন
ও বলপ্রয়োগের মাধ্যমে গণহারে হিন্দু ও খৃস্টানদের ধর্মান্তরকরণ করার কাজ করছে ‘ইসলামিক
রিসার্চ ফাউণ্ডেশন’। ইতিমধ্যেই যে সব তথ্য ও প্রমাণগুলি সামনে এসেছে তাতে এই
অভিযোগগুলি অসত্য, অবাস্তব ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। এসব কারণে
জাকির নায়েকের পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়াকে সরকারের তরফে উপযুক্ত ও সঠিক পদক্ষেপ বলে
মনে করি।
পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করার সরকারী পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েও বলতে চাই
যে, পিস টিভি বন্ধ করার নৈতিক অধিকার নেই প্রধানমন্ত্রী
মোদিজির। কারণ তিনি ও তাঁর সরকার নীতিগতভাবে হিংসা ছড়ানো এবং হত্যায় প্ররোচনার
দেওয়ার বিরুদ্ধে নয়। তিনি সদম্ভে ঘোষণা করেন নিজেকে আরএসএস –এর একজন গর্বিত সৈনিক
সৈনিক হিসেবে যে আরএসএস স্পষ্টতঃ উগ্র হিন্দুত্ববাদে বিশ্বাসী এবং ভারতের বুকে
হিন্দুরাষ্ট্র স্থাপন করতে চায়। তাদের মূল লক্ষ্য হলো ভারত থেকে মুসলমান ও খৃস্টানদের তাড়িয়ে বা ধর্মান্তরিত করে মুসলিম ও খৃস্টান-মুক্ত হিন্দুভারত
নির্মাণ করা। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আরএসএস ও বিজেপির লোকেরা
প্রতিদিনই মুসলমান ও খৃস্টানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও হিংসা ছড়াচ্ছে, এবং তাদের
হত্যা করার প্ররোচনা দিচ্ছে। ‘ঘর ওয়াপসি’,
‘লাভ জিহাদ’ প্রভৃতি কর্মসূচী নিয়ে আরএসএস –এর লোকজন ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত তারা
দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বলা বাহুল্য যে এই কর্মসূচীগুলি কোনোটাই তারা অহিংস পথে প্রচার
বা রূপায়ন করছে। যারা এসব হিংসাত্মক ও
ধ্বংসাত্মক প্রচার চালাচ্ছে তাদের মধ্যে বিজেপির বিধায়ক, সাংসদ ও মন্ত্রীরাও
রয়েছেন। মোদিজি তাঁদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কোনো দৃষ্টিগ্রাহ্য রাজনৈতিক বা
প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নি। তাই পিস টিভি বন্ধ করার তাঁর নৈতিক অধিকার নিয়ে প্রশ্ন
উঠছে।
ফিরে আসি জাকির নায়েকের প্রশ্নে। তিনি এখন বলছেন তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয়
অভিযোগ মিথ্যে। গত ২৫ শে জুলাই আবু ধাবিতে ইণ্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি যা
বলেছেন তা হলো - এক. কোথাও কোনো অনুষ্ঠানে হিংসা ও হত্যার পক্ষে বলি নি। ২. কোনো
সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কখনো ঘৃণা ছড়ায় নি। তিন. আমি ধর্মনিরপেক্ষ নীতিতে বিশ্বাস
করি এবং সর্বদা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির
পক্ষেই প্রচার করি। ৪. কখনো সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করি নি এবং
ভবিষ্যতেও করবো না, কারণ কোরান সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না। কোরান বলে যে একজন
নির্দোষ ব্যক্তিকে হত্যা করা মানে সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করা। ৫. আইএস ইসলামিক
সংগঠন নয় এবং মুসলিম জঙ্গীরা ইসলামের
কলঙ্ক। ৬. কখনো কোনো মুসলিমকে আমেরিকা বা অন্য কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতে
বলি নি। ৭. আমি অভিন্ন দেওয়ানী বিধিকে সমর্থন করি যদি সেটা পক্ষপাতহীন ও ন্যায্য
হয়। তবে আমি মুসলিম ব্যক্তিগত আইনকেই সর্বোৎকৃষ্ট ও সর্বোত্তম মনে করি। ৮. আমার
কুড়ি কোটি গোঁড়া অনুরাগী আছে যাদের মধ্যে ১০-২০ জন যদি আমার বক্তব্যের ভুল মানে
করে তার জন্যে আমাকে দোষারোপ করা হবে
কেনো? নিজেকে নির্দোষ সাজাতে গিয়ে তিনি সব দোষ চাপিয়েছেন মিডিয়ার উপর। বলেছেন, মিডিয়া তার বিরুদ্ধে যা প্রচার করছে তা
মিথ্যা, বিকৃত, সাজানো ও ভেজালে ভরা। মিডিয়ার ঘাড়ে সব দোষ চাপালেও তিনি কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর
স্তুতি গেয়েছেন দরাজ গলায়। বলেছেন যে মোদিজির সরকার আমাকে কখনো বিরক্ত বা জ্বালাতন
করে নি। বলেছেন, মোদিজি হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন।
জাকির নায়েক নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্যে যা যা বলছেন তা মোটেই
বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না। একটি বিশেষ লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনে যে
দীর্ঘ বয়ান দিয়েছেন তাতে প্রধানমন্ত্রী মোদিজির বিন্দুমাত্র সমালোচনা নেই, বরং দরাজ
কণ্ঠে মোদিজির প্রশংসা করেছেন। বলেছেন, মোদিজি স্বল্প সময়ের মধ্যেই এতো বেশী মুসলিম দেশ
সফর সম্পন্ন করেছেন যা আগে কোনো প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকেও করেন নি।
বলেছেন, মোদিজির হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক গড়ে তোলার আন্তরিক প্রয়াস করছেন। এটা একটি
ইতিবাচক দিক এবং আমি এই কাজে তাঁর সঙ্গে
আছি ও থাকবো।
বলা বাহুল্য যে মোদিজি সম্পর্কে জাকির নায়েক যা বলেছেন তা সম্পূর্ণ তাঁর
বিশ্বাসের বিপরীত। তাঁর কণ্ঠে মোদিজির প্রশংসা আমাদের মনে করিয়ে দেয় একটা বাংলা
প্রবাদের কথা, ‘অতিভক্তি চোরের লক্ষণ’। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি সত্যি না হলে যে
মোদিজির আস্কারা পেয়ে হিন্দুত্ববাদীরা মুসলমানদের হাতে গলা কাটতে চাইছে তাঁর
স্তুতি কি তিনি গাইতেন? তিনি সাফাইকৃত
কথাগুলি বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায় তিনি যা
বলেছেন তা মিথ্যের ঠাসা বুনুন ছাড়া কিছু নয়। তিনি ইসলাম ধর্মের প্রচারক, অথচ দাবী
করেছেন, তিনি ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী। তিনি বলেছেন তিনি অভিন্ন দেওয়ানী বিধি
চান, আবার পরক্ষণেই বলেছেন ‘মুসলিম ব্যক্তিগত আইন’ই সবচেয়ে উত্তম ও উৎকৃষ্ট। বলা
বাহুল্য যে, দু’টো দাবীই পরষ্পরবিরোধী ও মিথ্যে। তিনি বলেছেন কখনো জিহাদ ও হিংসার পক্ষে বলেন নি,
কারণ কোরান হিংসা ও হত্যার কথা বলে না। এ
দাবী যে ভিত্তিহীন তার সাক্ষ্য বহন করছে কোরান
নিজেই। কোরানের পাতায় পাতায় রয়েছে অমুসলিমদের বিরুদ্ধে জিহাদের কথা, তাদের হত্যা
করার কথা, সারা বিশ্বে ইসলামী শাসন কায়েম করার কথা। তাছাড়া তাঁর সাগরেদরাই তো স্বীকার করেছে যে
তাঁর ভাষণ শুনে তারা জিহাদের অনুপ্রেরণা পেয়ে আইএস – এ যোগ দিয়েছে। তিনি বলেছেন যে তারা তাঁর বক্তব্যের ভুল মানে
করেছে। না, তারা ভুল মানে করে নি, তারা যে সঠিক মানেই বুঝেছে তাঁর ভাষণের তার
প্রমাণ দিচ্ছে তাঁর ভাষণের ভিডিও ফুটেজগুলি। এই ফুটেজগুলিতে দেখা যাচ্ছে যে তিনি বলছেন - জিহাদের জন্যে আত্মঘাতী মানববোমা ইসলামে বৈধ, প্রত্যেক মুসলমানেরই জিহাদি ও সন্ত্রাসবাদী হওয়া কর্তব্য। তিনি বলছেন,
যেহেতু আমেরিকা মুসলমানদের উপর সন্ত্রাস চালাচ্ছে তাইআমেরিকার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস
চালানোয় দোষ নেই । তিনি খোলাখুলি বলেছেন
যে, ৯/১১-র ঘটনার জন্যে লাদেনের কাজকে
তিনি সমর্থন করেন। তিনটি ভিডিও ফুটেজের লিংক নীচে দিলাম।
শুধু মুসলিমরাই নয়, হিন্দু যুবক-যুবকরাও জাকিরজীর ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুসলিম
জিহাদি হয়ে যাচ্ছে। কেরালা পুলিশ জানিয়েছে
যে কেরালা থেকে যে ২১জন নিখোঁজ রয়েছে তারা সম্ভবতঃ আইএস – যোগ দিয়েছে। তাঁরা এরূপ সন্দেহ করছেন পুলিশের
হাতে ধৃত ধর্মান্তরিত একটি হিন্দু দম্পত্তির বয়ান থেকে। এরা হলো বেস্টিন ভিনসেন্ট
ও মেরিল, ধর্মান্তরিত হয়ে যথাক্রমে ইয়াহিয়া ও মরিয়ম নাম ধারণ করেছে এবং সিরিয়া
যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলো। আর একটি মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধ। তিনি
তাঁর সংগঠন ‘ইসলামিক রিসার্চ ফাউণ্ডেশন’ –
এর মাধ্যমে গণহারে হিন্দু ও খৃস্টানদের ধর্মান্তরিত করার কাজ করে চলেছেন। এটা ফাঁস
হয়েছে মহারাষ্ট্রের এ্যান্টি টেররিজম স্কোয়াডের হাতে তাঁর দু’ই প্রধান সহযোগী রিজওয়ান খান ও আরশী কুরেশী ধরা পড়ার পর। তাদের কাছ থেকে ৮০০ হিন্দু ও
খৃস্টানকে ধর্মান্তরিত করার কাগজপত্র পাওয়া গেছে। তাদের কাছ থেকে জানা গেছে যে,
ধর্মান্তরিত করার জন্যে মাথা পিছু পঞ্চাশ
হাজার টাকা দেওয়া হয়, এবং তাতে কাজ না হলে
ভীতি প্রদর্শনও করা হয়। মেরিল ওরফে
মরিয়মের ভাই এডিনও জ্যাকোব কেরালা পুলিশের
কাছে এই একই অভিযোগ করেছেন। তিনি পুলিশের
কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন যে, বেস্টিন ভিনসেন্ট ওরফে ইয়াহিয়া তাকে জোর করেই কুরেশীর কাছে মুম্বায় নিয়ে গিয়েছিলো যে তাকে ইসলাম গ্রহণ করে আইএস –
এ যোগদান করতে চাপ দিয়েছিলো।
জাকির নায়েক যে
শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের মগজ ধোলাই করে আইএস – এর রিক্রুটিং এজেন্ট হিসেবে
কাজ করছেন এবং মোটা অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে ও ভীতি প্রদর্শন করে গণহারে ধর্মান্তরকরণের
কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তা অজানাই থেকে যেতো
যদি গুলশান হামলায় একজন জঙ্গী জীবিত অবস্থায় এবং ‘ইসলামিক রিসার্চ ফাউণ্ডেশন’ - এর
দুই চাঁই পুলিশের হাতে ধরা না পড়তো। জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি যখন এতোই
গুরুতর তখন শুধু পিস টিভি বন্ধ করলেই হবে
না। আইএস ও জাকির নায়েকের মধ্যে সম্পর্ক
কী পর্যায়ে আছে, কতোটা গভীর সম্পর্ক আছে এসব অবশ্যই খতিয়ে দেখা উচিৎ। এটাও তদন্ত
করে দেখা উচিৎ আইএস যখন গুলশানে জঙ্গী হামলা
চালায় ঠিক সে সময়েই তিনি সৌদি আরবে অবস্থান করছিলেন কেনো? তাহলে কি তাঁর কাছে ঐ
জঙ্গী হামলার খবর ছিলো? তাঁর বিরুদ্ধ ওঠা
সব অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবী করলেও কেনো তিনি ভারতে ফিরছেন না তাও খতিয়ে দেখা উচিৎ। এসবের উত্তর জানার জন্যে তাঁকে ভারতে অবিলম্বে
ফিরিয়ে নিয়ে এসে জিজ্জাসাবাদ করা দরকার।