মুহাম্মদ তার ২য় স্ত্রী সওদাকে তালাক দিয়েছিলেন এক সময় । সওদা তখন মুহাম্মদকে কান্নাকাটি করে অনুরোধ করে বলেছিলেন তাঁকে তালাক না দিতে । মুহাম্মদ তার জবাবে বলেন যে আজীবন
তাঁকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে তিনি সম্মত
আছেন, তবে তার জন্যে একটা শর্ত মানতে হবে ।
শর্তটা ছিলো - সওদাকে মুহাম্মদের
সঙ্গে শয্যা ভাগ করে নেওয়ার অধিকার ছাড়তে হবে এবং মুহাম্মদের সঙ্গে দিন রাত্রি যাপনের তাঁর
বরাদ্দ পালা আয়েষাকে ছেড়ে দিতে হবে
। এই শর্তে সওদা সম্মতি প্রদান করতে বিলম্ব করেন নি, এই ভয়ে যে পাছে মুহাম্মদ তাঁকে স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে নিতে অস্বীকার করে বসেন । সওদা শর্ত মেনে নেওয়ার পর মুহাম্মদ তালাক প্রত্যাহার করে নিয়ে তাঁকে স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে নেন, কিন্তু তারপর আর
কোনোদিন তিনি সওদার ঘরে যান নি এবং জীবনের বাকী দিনগুলিতে তাঁকে একবারও কাছে ঘেঁষতে দেন নি । তালাক নাকি সবচেয়ে নিকৃষ্ট বৈধ কাজ এবং আল্লাহ এই বৈধ কাজটি বিশেষ পরিস্থিতি ও উপায়ন্তর ব্যতীত প্রয়োগ না করতেই বলেছেন । তা যদি সত্যি হয় তবে স্বয়ং মুহাম্মদ এমন নিকৃষ্ট কাজটি কেন করেছিলেন সওদার বেলায় ? সওদা কি কোনো গুরুতর অপরাধ করেছিলেন যা নবীর
মান-মর্যাদাকে ধুলিসাৎ করেছিলো ? না কি নবীর সঙ্গে সওদা ক্রমাগত এরূপ রূঢ় আচরণ করতেন যা নবীর জীবনকে দুঃসহ করে তুলেছিলো ? না, এমন কোনো ঘটনার উল্লেখ কোথাও পাওয়া যায় না । মুসলিম ঐতিহাসিকগণ কিংবা মুসলিম সমাজের ধর্মীয় পন্ডিত নেতৃবৃন্দও সওদার বিরুদ্ধে সেরূপ কোনো অভিযোগ আনেন নি । বরং তাঁরা সওদার ভূয়সী প্রশংসাই করেছেন । খাদিজার মৃত্যুর পর সওদা মুহাম্মদকে যেভাবে তাঁর ধর্ম প্রচারের কাজে অত্যন্ত নিষ্ঠা সহকারে ও নিরলসভাবে সর্বপ্রকারের সহযোগিতা করেছিলেন তার প্রশংসাই তাঁরা শতমুখে করেছেন । কীরূপ প্রশংসা তা শোনা
যাক তাঁদের কলমেই । সওদা সম্পর্কে বাংলাদেশের একজন লেখক লিখেছেন – “তাঁর
অতিথিপরায়ণতা ও দানশীলতার জন্য তিনি চিরস্মরণীয়া হয়ে রয়েছেন । স্নেহ ও মমত্ববোধে
তাঁর অন্তর ছিল ভরপুর । এ জন্য তিনি উম্মে কুলসুম ও ফাতেমার মাঝে বেদনার সামান্য
আঁচড়ও লাগতে দেন নি । মাতৃহারা কন্যাদ্বয়কে তিনি স্বহস্তে আদর সোহাগ করতেন এবং
তাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতেন । তাঁর সরলতা ও
অভিলাষহীন চরিত্র রাসূলুল্লাহ [সাঃ]-কে প্রকৃতই বিমুগ্ধ করেছিল । হযরত সওদার [রাঃ] অন্তর ছিলো আল্লাহ ও
রাসূলুল্লাহর [সাঃ] প্রেমে বিভোর ।
হযরত সওদার [রাঃ] দায়িত্ব ও কর্তব্য ছিলো
সুদূর প্রসারি । একদিকে হযরত রাসূলুল্লাহ [সাঃ] – এর দুঃখ কষ্ট দূর করা, তার চলার পথকে সহজ ও সুগম করে তোলা,
অপরদিকে বালিকা উম্মে কুলসুম ও ফাতেমার সুষ্ঠ পরিচর্যা করা । শুধু তাই নয়,
অপ্রাপ্ত বয়স্কা সপত্নী বিবি আয়েশার [রাঃ] জীবনের বিকাশের পথ রচনা করা । যদি তিনি
এই দায়িত্ব ও কর্তব্যটুকু পালন না করতেন তা’হলে ইসলামের ইতিহাসের রূপরেখা অন্য রকম হতে বাধ্য
ছিলো ।” [দ্রঃ মহানবী(সঃ) এঁর বিবাহ, মহম্মদ সাদাত আলি, মল্লিক ব্রাদার্স, কলকাতা,
পৃ – ৩৪,৩৫] সকলেই একবাক্যে স্বীকার করেছেন যে সওদা মুহাম্মদকে খাদিজার অভাব বুঝতে দেন নি । তাহলে এ হেন গুণবতী স্ত্রী যিনি খাদিজার মৃত্যুর পর মনপ্রাণ সঁপে এবং অক্লান্ত সেবা ও পরিশ্রম দিয়ে মুহাম্মদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁকে মুহাম্মদ তালাক দিয়েছিলেন কেন ? এর কারণটি কোনো মুসলিম ঐতিহাসিক বা ইসলামি পন্ডিত ব্যক্তিগণ কোথাও বাখ্যা বা আলোচনা করেন নি । করেন নি, কারণ তা ব্যক্ত করা বা উন্মোচন করা মুসলমানদের কাছে খুবই অস্বস্তিকর, বিব্রতকর ও লজ্জাকর । যে কারণে মুহাম্মদ সওদাকে তালাক দিয়েছিলেন তার একমাত্র কারণটি হলো সওদার সঙ্গে মহাম্মদ আর সহবাস করতে চাইছিলেন না । সেটা এজন্যে নয় যে সওদা তখন বিগত-যৌবনা দেওয়ার হয়ে গিয়েছিলেন এবং সওদার আর মুহাম্মদকে কিছু ছিলো না । তবুও মুহাম্মদ সওদাকে বিদায় করে দিতে চেয়েছিলেন এ জন্যে যে তখন ইতিমধ্যেই তাঁর হারেমে একাধিক নারী এসে গিয়েছিলো যারা সওদার চেয়ে বয়সে অনেক ছোটো ও দেখতে অধিক সুন্দরী । কম বয়সী ও অধিক সুন্দরী স্ত্রীদের ছেড়ে সওদার সঙ্গে সময় বা রাত কাটাতে তাঁর খুবই অসুবিধা হচ্ছিল, তাই তিনি তাঁর প্রতি ক্রমশঃ বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন । সেই বিরক্তিই ধীরে ধীরে শত্রুতা ও
নিষ্ঠুরতাইয় পর্যবসিত হয়েছিলো । তারই ফলশ্রুতিতে মুহাম্মদ শেষ অবধি সওদাকে তালাক দেওয়ার মতো কঠিন ও অমানবিক সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করেন নি । সওদার শরীরে মুহাম্মদ আর তৃপ্ত হতে পারছিলেন না বলেই সওদাকে তালাক দিয়েছিলেন । মুহাম্মদ যে সওদাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে
যাপন করার বরাদ্দ সময়টা আয়েষার কাছেই যাপন করতেন তা
কোনো কল্পিত ভিত্তিহীন অভিযোগ নয় । মুহাম্মদ কৃত এই অতি কুৎসিত, অমানবিক ও নিন্দনীয় ঘটনাটি যে সত্যি কোরানের তফসীরে তার প্রমাণ রয়েছে । কোরানের ৩৩/৫১ নং আয়াতের তফসীরে গিরিশচন্দ্র সেন লিখেছেন – ‘‘কোন ব্যক্তির অনেক ভার্যা থাকিলে তাহার পক্ষে উচিত যে,পালাক্রমে প্রত্যেকের নিকট তুল্যভাবে থাকে । ... কিন্তু হযরত প্রত্যেকের পালার মধ্যে কোন প্রভেদ করেন নাই, সকলের সম্বন্ধে তুল্য দৃষ্টি রাখিয়াছিলেন । কেবল বিবি সুদা নিজের পালা বিবি আয়েষাকে দান করিয়াছিলেন ।” এই তফসীরে সওদা তাঁর পালা বা স্বামীর সঙ্গে যাপনের সময়কাল আয়েষাকে ছেড়ে দিয়েছিলেন তার উল্লেখ রয়েছে, কিন্তু উহ্য থেকে গেছে কেন তিনি তাঁর স্বামীর সান্নিধ্যলাভের সুযোগ ও অধিকার ছেড়ে দিয়েছিলেন । সেই কেনোর উত্তরটা খুব সহজেই অনুমেয় । গিরিশ সেনের তফসীরে কিন্তু একটা বিরাট মিথ্যে দাবী করা হয়েছে, সেটা পাঠকদের দৃষ্টিতে আনতে চাই । দাবী করা হয়েছে যে মুহাম্মদ তাঁর স্ত্রীদের প্রতি পালা বন্টনে সমান সুবিচার করেছিলেন । এটা যে মিথ্যা দাবি তার প্রমাণ তো সওদাই । মুসলমান পন্ডিতগণ বলেন যে সওদা স্বেচ্ছায় তার ভাগ ছেড়ে দিয়েছিলেন । সওদা ‘স্বেচ্ছায় তার ভাগ ছেড়ে দিয়েছিলেন’ – এই উত্তরটি অবিশ্বাসযোগ্য ও অগ্রহণযোগ্য । কোনো স্ত্রী বিনা কারণে তার অধিকার ছাড়ে ? থাক সে কথা । বরং আমি চোখ ফেরাতে চাই সেখানে যেখানে আরো প্রমাণ দেখতে পাওয়া যায় যে মুহাম্মদ তাঁর স্ত্রীদের প্রতি মোটেই ন্যায় এবং সমান বিচার করেন নি । শুধু সওদাকেই নয়, মুহাম্মদ আরো কয়েকজন স্ত্রীকে তাঁর নিকট থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলেন এবং কয়েকজনকে তাঁর কাছে টেনে নিয়েছিলেন । মুহাম্মদ কোন কোন স্ত্রীদের দূরে ঠেলে দিয়েছিলেন এবং কোন কোন স্ত্রীকে তাঁর বুকের কাছে পরম আদরে টেনে নিয়েছিলেন তার উল্লেখ রয়েছে গিরিশ সেনের উক্ত তফসীরের শেষ ভাগে । তিনি লিখেছেন – ‘‘সুদা, সফিয়া, জ্ববিরা, ওম্ম
হবিবা, ময়মুনা এই পাঁচ পত্নীকে তিনি দূরে রাখিয়াছিলেন, কিন্তু যখন যে প্রকার ইচ্ছা করিতেন তাহাদের ভাগের প্রতি লক্ষ্য রাখিতেন । বিবি আয়েষা, হফসা, উম্মসালমা, এবং জয়নবকে হযরত নিকটে রাখিয়াছিলেন ।’’ যাদেরকে দূরে রেখেছিলেন তাদের সকলের ভাগের প্রতি লক্ষ্য রাখতেন – এ দাবি যেমন অসত্য ও পরষ্পরবিরোধী, তেমনি শিশুসুলভ ও হাস্যকর । যাদের মুহাম্মদ দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন তাদের মধ্যে একমাত্র সফিয়ার বয়স ছিল বেশ কম, বাকিদের বয়স আয়েষা, যয়নব ও হফসার চেয়ে বেশী ছিলো । অল্প বয়সী সফিয়াকে মুহাম্মদ কেন দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন তা এক রহস্য বটে । তবে সে রহস্য অনন্মোচনযোগ্য মোটেই নয় । সফিয়াকে দূরে ঠেলে দেওয়ার পেছনে সম্ভাব্য প্রধান কারণ হতে পারে সফিয়ার মুহাম্মদের প্রতি যান্ত্রিক ও বিরূপ আচরণ । সফিয়া কোনদিনই মুহাম্মদকে তাঁর স্বামী বলে মন থেকে গ্রহণ করতে পারেন নি এবং তিনি[সফিয়া] তাঁকে[মুহাম্মদকে] মোটেই পছন্দ করতেন না । যেভাবে মুহাম্মদ তাঁকে বিয়ে করেছিলেন তাতে তাঁর পক্ষে মুহাম্মদকে মনে প্রাণে মেনে নেওয়া সম্ভব ছিলো না । সফিয়া ছিলেন
মদিনা থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত একটি সম্পদশালী ইহুদি মহল্লা খায়বারের সেনাপতি
কেনানের অল্প বয়সী স্ত্রী । একদা মুহহাম্মদ অতর্কিতে খায়বার আক্রমণ করেন । সেই
আক্রমণ প্রতিহত করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় নি । বহু ইহুদিকে মুহাম্মদের বাহিনী
হত্যা করে খায়বারকে লুঠ করে নিয়ে এসেছিলো । লুঠ করে নিয়ে এসেছিলো নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে অনেক মানুষকেও যাদের
মধ্যে সফিয়াও ছিলেন ।
সফিয়াকে তাঁর স্বামী, পিতা-ভ্রাতা ও আত্মীয়স্বজনের লাশের উপর দিয়ে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে মুহাম্মদের কাছে সমর্পণ করা হয়েছিলো । তাঁর সেই নিহত হয়ে যাওয়া আত্মীয়স্বজনদের জন্যে তাঁকে একটু কাঁদবার সময় ও সুযোগও না দিয়ে মুহাম্মদ সে রাত্রেই তাঁকে বিয়ে করে তাঁর সঙ্গে সহবাস করে তাঁর পাশবিক যৌনকামনা চরিতার্থ করেছিলেন । এ ঘটনাকে অনেক ঐতিহাসিক সফিয়াকে মুহাম্মদ কর্তৃক ধর্ষণের কুৎসিত ঘটনা বলেই চিহ্নিত করেছেন । স্বভাবতই সফিয়ার পক্ষে এ রকম একজন নিষ্ঠুর ও পিশাচসম মানুষকে স্বামী হিসেবে মনে প্রাণে গ্রহণ করা ও ভালোবাসা সম্ভব ছিলো না । মুহাম্মদ নিজেও সেটা নিশ্চয় বিলক্ষণ বুঝতে পারতেন । এর ফলশ্রুতিতে মুহাম্মদ নিজেও সফিয়ার সান্নিধ্যে খুব একটা আনন্দ পেতেন না । সম্ভবতঃ এই কারণেই মুহাম্মদ সফিয়ার থেকে দূরে থাকতেই তাঁকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলেন ।
মুহাম্মদ ও সওদার ঘটনা, অর্থাৎ সওদাকে তাঁর
অধিকার থেকে বঞ্চিত করে এবং তাঁর প্রাপ্য ভাগ বা পালা আয়েষাকে বরাদ্দ করে তাঁকে
দূরে ঠেলে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিশেষ মতভেদ নেই । মতভেদ সামান্য যা আছে তা হলো এই বিষয়ে - মুহাম্মদ সওদাকে তাঁর পালা আয়েষার অনুকূলে
ছেড়ে দিতে চাপ দিয়েছিলেন, নাকি সওদা নিজে থেকেই তাঁর পালা ছেড়ে দিয়েছিলেন আয়েষাকে । দুটো মতই পাওয়া যায় হাদিস
ও তফসীরে । একটা মত হলো এ রকম – “হযরত সওদা বিনতে যামআ’ [রাঃ] যখন খুবই বৃদ্ধা হয়ে যান এবং বুঝতে পারেন
যে, রাসূলুল্লাহ [সঃ] তাঁকে পৃথক করে দেয়ার ইচ্ছা রাখেন তখন তিনি রাসূলুল্লাহ [সঃ]
– কে বলেনঃ ‘আমি আমার পালা হযরত আয়েষা
[রাঃ] – কে দিয়ে দিলাম ।’ রাসূলুল্লাহ
[সঃ] এটা স্বীকার করে নেন, এবং এর উপরেই সন্ধি হয়ে যায় ।” [সূত্রঃ ইবনে কাথিরের তফসীর, ৪র্থ – ৭ম খন্ড,
পৃ – ৫৮৪] অন্য মতটি বলছে যে মুহাম্মদ
নিজেই সওদাকে তাঁর পালা আয়েষাকে ছেড়ে দিতে বলেছিলেন । সে মতটি এরূপঃ “মুজাম–ই-আবুল
আব্বাসের একটি মুরসাল হাদিসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ [সঃ] হযরত সওদা [রাঃ] – এর
নিকট তালাকের সংবাদ পাঠিয়েছিলেন । তিনি হযরত আয়েষা [রাঃ] – এর নিকট বসেছিলেন ।
হুযূর তথায় আগমন করলে হযরত সাওদা [রাঃ] তাঁকে বলেনঃ ‘যে আল্লাহ আপনার উপর স্বীয়
বাণী অবতীর্ণ করেছেন এবং স্বীয় মাখলুকের মধ্যে আপনাকে স্বীয় বান্দা মনোনীত করেছেন
তাঁর শপথ ! আপনি আমাকে ফিরিয়ে নিন । আমার বয়স খুব বেশি হয়ে গেছে । পুরুষের প্রতি
আমার আর আসক্তি নেই । কিন্তু আমার বাসনা এই যে,
আমাকে যেন কিয়ামতের দিন আপনারে স্ত্রীদের মধ্যে উঠান হয় ।‘ রাসূলুল্লাহ [সঃ] এতে সম্মত হন এবং তাঁকে ফিরিয়ে
নেন । অতঃপর তিনি বলেনঃ ‘হে আল্লাহর রাসূল [সঃ] ! আমি আমার পালার দিন ও রাত্রি আপনার প্রিয় পত্নী হযরত আয়েষা [রাঃ] –
কে দান করে দিলাম ।’” [দ্রঃ- ঐ, পৃ – ৫৮৫]
ঘটনা যাই হোক, সওদা সহ কয়েকজন স্ত্রীদের
দূরের সরিয়ে রাখাটা মুহাম্মদের শিষ্যদের মধ্যে ব্যাপক গুঞ্জন সৃষ্টি করেছিল ।
স্ত্রীদের প্রতি মুহাম্মদের এহেন এতো দৃষ্টিকটু, বৈষম্যমূলক ও অমানবিক আচরণ মুসলমানদের ভীষণ আহত করেছিলো ।
এর কোনো সদুত্তর ছিলো না মুহাম্মদের কাছে । এ রকম ক্ষেত্রে সাধারনতঃ যা ঘটে,
এক্ষেত্রেও তাই ঘটেছিলো । মুহাম্মদ তাঁর এহেন পৈশাচিক ও অমানবিক কাজের পক্ষে আল্লাহকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে শিষ্যদের মুখ বন্ধ
করছিলেন । সেই ঢালটি যে একটি ওহি তা বলা
বাহুল্য । ওহি নিয়ে এসে মুহাম্মদ বললেন যে
তিনি যা করেছেন তা আল্লাহর ইচ্ছানুসারেই করেছেন । সেই
ওহি বা আয়াতটি (৩৩/৫১,
সুরা আহযাব) হলো – “তুমি ওদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা তোমার নিকট হতে দূরে রাখতে পারো
এবং যাকে ইচ্ছা গ্রহণ করতে পারো, এবং যাকে দূরে রেখেছো তাকে কামনা করলে কোনো অপরাধ
নেই ।”
এই ঘটনার
পরিপ্রেক্ষিতে সওদার ভূমিকা নিয়েও কিছু প্রশ্ন ওঠা
অস্বাভাবিক নয় । কেন তিনি অবমাননাকর শর্তে সম্মত হয়েছিলেন ? আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদা সম্পন্ন
নারীর পক্ষে এমন নীচ শর্ত মানা কি সম্ভব ?
সে সময়ে আরবের নারীদের মধ্যে আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদাবোধ যথেষ্ট মাত্রায় ছিলো তার
বহু প্রমাণ পাওয়া যায় । প্রাক ইসলাম যুগে নারীরা অনেক স্বাধীনতা অধিকার ভোগ করতো,
ফলে তাদের মধ্যে আত্মসম্মানবোধ ও
আত্মমর্যাদাবোধ থাকাটাই স্বাভাবিক ছিলো । সওদাও তার ব্যতিক্রম ছিলেন না । এই বোধের
কারণেই তিনি তাঁর প্রাক্তন স্বামী সাফরা বিন আমরকে ত্যাগ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা ও বিলম্ব করেন
নি । মক্কা থেকে মুহাম্মদের শিষ্যদের যে দলটি প্রথম আবিসিনিয়া হিজরত [পলায়ন] করেছিলো সে দলে ছিলেন সওদা ও
তাঁর স্বামী সাফরা । আবিসিনিয়ায় খৃষ্টানদের সান্নিধ্যে থাকাকালীন সাফরা
উপলব্ধি করেন যে মুহাম্মদ তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন এবং ইসলাম ধর্ম নয়,
খৃষ্টান ধর্মই ঈশ্বরের সত্যিকারের ধর্ম ।
এই উপলব্ধি থেকে তিনি ইসলাম ত্যাগ করে খৃষ্টান
ধর্ম গ্রহণ করেন এবং সওদাকেও খৃষ্টান ধর্ম গ্রহণ করার পরামর্শ দেন । সওদা শুধু সেই
পরামর্শটাই প্রত্যাখান করেন নি,
প্রত্যাখান করেছিলেন তাঁর স্বামীকেও । তারপর সওদা আর আবিসিনিয়ায় থাকেন নি, মক্কা
শহরে ফিরে চলে এসেছিলেন । সওদা যখন মকায় ফিরে আসেন তার মাত্র কয়েকদিন আগে খাদিজার
মৃত্যু হয়েছে । মুহাম্মদ সব শোনার পর সওদাকে বিয়ে করে নেন । মুহাম্মদ খাদিজার
জীবদ্দশায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন নি । এটাকে
দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরা দাবী করা হয় যে
মুহাম্মদ শুধু মানুষ হিসেবে সর্বশ্রেষ্ঠই ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন
শ্রেষ্ঠ আদর্শবান পতিও যিনি সে সময়ে বহু বিবাহের প্রথা ব্যাপকহারে চালু থাকা
সত্বেও বয়স্কা স্ত্রী খাদিজার জীবদ্দশায়
আর দ্বিতীয় বিয়ে করেন নি । সেই
মুহাম্মদই কিন্তু তাঁর সেই প্রাণপ্রিয় (!)
স্ত্রী খাদিজার মৃত্যুর শোকের রেশ কাটতে না কাটতেই মাত্র কয়েকদিনের মাথায় সওদাকে
বিয়ে করতে সংকোচ করেন নি । মুহাম্মদ কি
সত্যিই খাদিজার প্রেমে আপ্লুত ছিলেন তাই দ্বিতীয় বিয়ে করেন নি ? সত্যিই কি তিনি আদর্শবান ও ন্যায়বান পতি ছিলেন ? সত্যিই কি তিনি খাদিজার প্রতি
বিশ্বস্ত ছিলেন ? সে সময়ে সত্যিই কি আরবে
বহু বিবাহের ব্যাপক প্রচলন ছিল ? এই প্রশ্নগুলির সঠিক উত্তর নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে প্রবল মতভেদ দেখা যায় । মুহাম্মদ খাদিজার
জীবদ্দশায় কেনো দ্বিতীয় বিয়ে করেন নি তা আলোচনা করার অবকাশ এখানে নেই । তবে এ কথা
জানিয়ে রাখা ভালো যে, খাদিজার প্রতি মুহাম্মদ
মুগ্ধতা ও বিশ্বস্ততার জন্যে বিয়ে দ্বিতীয় করেন নি
এমনটা নয় । খাদিজার জীবদ্দশায় দ্বিতীয় বিয়ে করার অবস্থা
মুহাম্মদের ছিলো না বলে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন নি । সে কথা থাক, সওদার কথায় ফেরা যাক । সওদা যখন তাঁর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে মক্কায় ফিরে আসেন তখন একবারও
ভাবেন নি তাঁর ভবিষ্যতের কথা । আর নিজের ব্যক্তিত্বকে ও স্বধর্ম বিসর্জন দিয়ে স্বামীর
ধর্মকেই নিজের ধর্ম বলে ভেবে নিয়ে স্বামীর
সংসারে পরগাছা হয়েও বাঁচতে চান নি; এবং অনিশ্চিত ও অন্ধকার ভবিষ্যত জেনেও স্বামীকে ত্যাগ করে
আবিসিনিয়া থেকে তৎক্ষণাৎ মক্কায় এক বস্ত্রেই
ফিরে আসতেও দ্বিধা বা ভয় করেন নি । এতো কঠিন ও বন্ধুর পথে পা বাড়িয়েছিলেন তিনি কোন শক্তি
ও সাহসের জোরে ? সে তো প্রবল ব্যক্তিত্ব এবং আত্মসম্মানবোধের জোরেই । সেই সওদাই মুহাম্মদের
দেওয়া ঘৃণ্য শর্ত মেনে নিয়েছিলেন কেন ? এ বিষয়ে সওদা কী বলছিলেন তা বিশেষ জানা
যায় না । তবে এর কারণ
নিশ্চয় এটা হতে পারে না যে, তিনি শুধু ভরণ-পোষণের জন্যেই মুহাম্মদের ঐ
অবমাননাকর শর্তটি মেনে নিয়েছিলেন । সেটা
সত্যি হতে পারে না এজন্যে যে, তাহলে তাঁর পূর্বতন স্বামীকে ত্যাগ করে চলে আসতে
পারতেন না । মুহাম্মদের ঘৃণ্য শর্ত তিনি মেনে নিয়েছিলেন মনে হয় ইহকালের কথা নয়,
একমাত্র পরকালের কথা ভেবেই । তিনি
বিশ্বাস করতেন নিঃসংশয়ে যে মুহাম্মদ ছিলেন আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ ও নবী , এবং নবীর
স্ত্রীরা মৃত্যুর পর নিশ্চিতিভাবেই
বেহেস্ত [স্বর্গ] লাভ করবে । পরকালে বেহেস্ত লাভের সুযোগ সম্ভবতঃ তিনি হারাতে চান নি এবং
সেজন্যেই যে কোনো শর্তে তিনি মুহাম্মদের স্ত্রী
থেকে যেতে চেয়েছিলেন ।
মুহাম্মদ সওদাকে
যেভাবে তালাকের ভয় দেখিয়ে দূরে সরিয়ে দেওয়াটা যেমন নিন্দনীয় ও ঘৃণ্য
কাজ, তেমনি সওদার কাজটিও [শর্তটি
মেনে নেওয়া] সমর্থনযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য
নয় । মুহাম্মদের এটা না বোঝার কোনো কারণ ছিলো না, তাই তাঁর এই
ঘৃণ্য কাজটিকে বৈধ করার জন্যে যেমন তাঁর
একটি ওহির প্রয়োজন ছিলো, তেমনই
প্রয়োজন ছিলো এমন একটা ওহিরও যেটা সওদার কাজকেও বৈধতা প্রদান করতে সক্ষম । এর পূর্বে
মুহাম্মদ যখন যা চেয়েছেন, কিংবা তাঁর যখন
যা প্রয়োজন হয়েছে, আল্লাহ তৎক্ষণাৎ তা পূরণ করে মুহাম্মদকে বাধিত করেছেন ।
এক্ষেত্রেও কোনো ব্যতিক্রম হয় নি, আল্লাহর ওহি পৌঁছে গেছে তড়িৎবেগে মুহাম্মদের
কাছে । ওহিটি হলো - “কোনো স্ত্রী যদি
তার স্বামীর দুর্ব্যবহার ও উপেক্ষার আশংকা করে তবে তারা আপোষ নিষ্পত্তি করতে চাইলে
তাদের কোনো দোষ নেই এবং আপোষ-নিষ্পতিই শ্রেয় ।” [আয়াতঃ ৪/১২৮]
সওদাকে দূরে সরিয়ে রেখে তাঁর চেয়ে কম বয়সী ও অপেক্ষাকৃত অধিক সুন্দরী
স্ত্রীদের সাথে আনন্দঘন জীবন যাপন করার হীন অভিলাষ চরিতার্থ করতে মুহাম্মদ যে দুটি
ওহি বা আয়াত পাঠ করেছিলেন সে ওহি দুটিই শরিয়তী আইনের দুটি ধারা হিসেবে আজো স্বীকৃত হয়ে রয়েছে । এই ধারা দুটি মুসলিম
নারীদের কী ভয়ঙ্কর ক্ষতি ও সর্বনাশ করেছে তা পরিমাপ করা মানুষের অসাধ্য । সওদার জীবনে ঘটা ঐ সর্বনেশে ঘটনার পর মুহাম্মদের অনুগামীরা তাদের যাকে অপছন্দ হতো তাদের হয় বিনা দ্বিধায় তালাক দিয়ে বিদায় করে দিতো, না হয় করুণাবশতঃ তালাক না দিয়ে দূরে আস্তাকুঁড়ে
ফেলে রাখতো । যাদের একটু বয়স বেশী হতো, কিংবা অসুস্থতাজনিত কারণে যাদের শ্রী
কিছুটা নষ্ট হতো, কিংবা অন্য কোনো কারণে স্বামী যাদেরকে অপছন্দ করতো সেই সব
স্ত্রীদের এটাই ছিল অবশ্যম্ভাবী পরিণতি । কাঁচা বয়সের স্ত্রীদের কাছে থাকার জন্যে
একটু বয়স্ক স্ত্রীদের দূরে ঠেলে দেওয়া বা একেবারেই তালাক দিয়ে দেওয়া একটা
মুসলিমদের সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছিল । না, মুহাম্মদ কিংবা ইসলাম ধর্মকে হেয় করার
জন্যে এগুলো বানানো কোনো গল্প নয় । এর
ভুড়িভুড়ি প্রমাণ পাওয়া যাবে সে সময়ের ইতিহাসে এবং
হাদিস ও কোরানে । সেই সংস্কৃতির রূপটি কি রকম ছিলো তা কিছুটা হলেও আন্দাজ করা যাবে নীচের একটি ঘটনা ও একজন বিখ্যাত সাহাবীর উক্তি থেকে ।
৪/১২৮ নং আয়াতে নারীদের জন্যে ওই কুৎসিত নির্দেশ
আসার পর কীভাবে তার প্রয়োগ শুরু হয়েছিল তার বহু ঘটনার বর্ণনা রয়েছে ইবনে কাথিরের
তফসীরে । সে রকম একটা ঘটনা হলো এ রকম – “হযরত রাফে’ ইবনে খুদায়েজ আনসারী [রাঃ] –
এর স্ত্রী যখন বৃদ্ধা হয়ে যান তখন তিনি এক নব যুবতীকে বিয়ে করেন । অতঃপর তিনি ঐ নব বিবাহিতা স্ত্রীকে পূর্বের
স্ত্রীর উপর গুরুত্ব দিতে থাকেন । অবশেষে তাঁর স্ত্রী বাধ্য হয়ে তালাক যাচ্ঞা করেন
। হযরত রাফে’ [রাঃ] তাকে তালাক দিয়ে দেন । কিন্তু ইদ্দত শেষ হওয়ার সময় নিকটবর্তী
হলে তাকে ফিরিয়ে নেন । কিন্তু এবারেও ওই একই অবস্থা হয় যে তিনি যুবতী স্ত্রীর
প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন । পূর্ব স্ত্রী আবার তালাক প্রার্থনা করেন । তিনি তাঁকে
এবারও তালাক দিয়ে দেন । কিন্তু পুনরায় ফিরিয়ে নেন । এবারও অনুরূপ অবস্থাই ঘটে ।
অতঃপর ওই স্ত্রী কসম দিয়ে তালাক প্রার্থনা করে ।
তখন তিনি তাঁর ঐ বৃদ্ধা স্ত্রীকে বলেনঃ ‘চিন্তা করে দেখো, এটা কিন্তু শেষ
তালাক । যদি তুমি চাও তবে তালাক দিয়ে দেই,
নতুবা এই অবস্থায় থাকাই স্বীকার করে নাও ।’
সুতরাং তিনি স্বীয় অধিকার ছেড়ে দিয়ে ঐভাবেই বাস করতে থাকেন ।” [৪র্থ-৭ম খন্ড, পৃষ্ঠা – ৫৮৭]
আলি ছিলেন
মুহাম্মদের খুড়তুতো ভাই ও আপন জামাতা । তিনি তাঁকে প্রাণাধিক ভালোবাসতেন এবং তাঁর
জ্ঞানে ও শৌর্যে তিনি এতই মুগ্ধ ছিলেন যে তাঁকে
জ্ঞানের দরজা বলে আখ্যায়িত করেছিলেন
। সেই আলিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো একজন লোকের প্রায় অনুরূপ কৃতকর্মের
পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর অভিমত । কৃতকর্মটি
এরূপ - একজন লোকের স্ত্রী রয়েছে, কিন্তু সে বৃদ্ধা হয়ে গেছে এবং তার আর ছেলেমেয়ে
হয় না । তখন লোকটি একটি যুবতী নারীকে বিয়ে করে । এই বিষয়ে আলীকে জিজ্ঞেস করা হলে
তিনি বলেনঃ “হযরত আলী এ সম্বন্ধে
জিজ্ঞাসিত হয়ে বলেনঃ ‘এর দ্বারা ঐ স্ত্রীকে বোঝানো হয়েছে, যে তার বার্ধক্যের কারণে
বা বিশ্রী হওয়ার কারণে বা অথবা দুশ্চরিত্রতার কারণে কিংবা অপরিচ্ছন্নতার কারণে তার
স্বামীর নিকট দৃষ্টিকটূ হয়ে গেছে, সে কিন্তু কামনা করে যে, তার স্বামী যেন তালাক
না দেয় । এ অবস্থায় সে যদি তার সমস্ত প্রাপ্য বা আংশিক প্রাপ্য ছেড়ে দিয়ে তার
স্বামীর সঙ্গে সন্ধি করে নেয় তবে তা করতে পারে । ]” [সূত্রঃ ঐ]
মুহাম্মদ তাঁর স্ত্রী
সওদার সঙ্গে যে আচরণ করেছেন তা অত্যন্ত নিকৃষ্ট ও মানবতাবিরোধী । এরূপ আচরণ করে নারীজাতির তিনি যে অপমান করেছেন তা
ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ । নারী যে ভোগ্যপণ্য বৈ নয় – এই বার্তাই তিনি দিয়ে যান এই আচরণের মাধ্যমে । নিজের স্ত্রীর
প্রতি চরম অবমাননাকর আচরণ করেই তিনি ক্ষান্ত হন নি, তিনি এহেন চরম কুৎসিত,
নিকৃষ্ট, ঘৃণ্য, জঘন্য এবং মানবতাবিরোধী
অপরাধকে আল্লাহর নামে বৈধ বলে ঘোষণাও দিয়ে যান । তাঁর সাহাবীরাও এতো বিবেকহীন ও
মনুষ্যত্বহীন ছিলেন যে কেউ তাঁর কৃত উক্ত
অন্যায় ও অপরাধের প্রতিবাদ করেন নি । বরং তাঁরা মুহাম্মদের সেই অপকর্ম ও কুকর্ম
এবং তার সপক্ষে আল্লাহর নামে বানানো বিধানকে
শরিয়তি আইনের স্বীকৃতি দিয়ে দেন । ফলে আজো মুসলিম সমাজ সেই মানবতাবিরোধি
অপরাধ ও অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারে নি । বর্তমান যুগে তার প্রয়গের মাত্রা হয়তো
কিছুটা কমেছে, কিন্তু সেই কুৎসিত ঐতিহ্যটি আজো
বিশ্বজুড়ে মুসলিম সমাজে বহমান থেকে গেছে ।