Sunday, January 1, 2017

মুসলমানরা ইংরাজী নববর্ষ উদযাপন করতে পারে না



আজ ইংরাজী নববর্ষের শুরু। নববর্ষের ১ম দিনটিতে ‘শুভ নববর্ষ’ বলে শুভকামনা জানানোর ধূম পড়ে যায়। এটা আজকাল বিশ্ব-সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে গিয়েছে আজ আমাকেও অনেকেই ‘শুভ নববর্ষ’ জানিয়েছে। নববর্ষের ১ম দিন মানুষ নতুন বছরকে ধূমধাম করে স্বাগত জানাই, আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠে। আনন্দ-উৎসব তুলনামূলকভাবে সব চেয়ে বেশী হয় ইংরাজী নববর্ষে। এবারো হচ্ছে। যার-পর- নাই উচ্ছ্বাস ও আনন্দে মেতেছে মানুষ বিশ্বজুড়ে। মুসলমানরাও পিছিয়ে নেই। কিন্তু বিপুল এই আনন্দ ও উৎসবের মধ্যেও বিষাদের ছায়া নেমে এসেছে ইস্তাম্বুল শহরে। একটি বড়ো হোটেলে বহু মানুষ যখন মধ্য রাত্রে নববর্ষের মুহূর্তটাকে দারুণভাবে উপভোগ করছে তখনই তাদের উপর রাইফেল থেকে বেরিয়ে এলো ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি। লুটিয়ে পড়লো বহু মানুষ যাদের মধ্যে নববর্ষকে চির বিদায় জানিয়ে চলে গেলো তরতাজা ৩৯টি প্রাণ। কে বা কারা গুলি চালালো  গোটা বিশ্ব তা জানে। নববর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানে মানুষের উপর হামলা চালানো, মানুষকে হত্যা করা নতুন কোনো ঘটনা নয়।  বাংলাদেশ  স্বাধীন হওয়ার পর বিখ্যাত রমনার বটমূলে যেখানে বাংলাদেশে নববর্ষের সব চেয়ে বড়ো অনুষ্ঠান হয়   সেখানেও একবার সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিলো ধর্মান্ধ সাচ্চা মুসলমানরা। সেই হামলাতেও  বহু মানুষের প্রাণ গিয়েছিলো। নববর্ষের অনুষ্ঠানে কেনো হামলা হয়? কারণ আরবি নববর্ষ ছাড়া অন্য নববর্ষ উদযাপন যে শরিয়তবিরোধী 
এখন প্রশ্ন হলো কোনটা ঠিক? কারা ঠিক? আরবি ব্যতীত অন্য জাতির নববর্ষ উদযাপনে মুসলমানদের অংশ গ্রহণ করাটা, না  বিরত থাকাটা? যে মুসলমানরা ইংরাজী নববর্ষ উদযাপন করছে তারা ঠিক, নাকি ঐ সব অনুষ্ঠানে যারা গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করলো তারা? কারা ঠিক আর কারা বেঠিক তা নিয়ে তর্ক-বিতর্কের শেষ নেই। মুসলিম বুদ্ধিজীবীরা বলেন অমুসলিমদের ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুসলমানদের অংশ গ্রহণ কোনো বাধা নেই ইসলামেআর ঐ সব অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্যে যারা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে মানুষকে হত্যা করছে তারা বুক বাজিয়ে বলছে যে তারা যা করছে তা আল্লাহ ও  মুহাম্মদের হুকুম মেনেই করছে। এই তরজায় মানুষ দ্বিধাবিভক্ত, বিভ্রান্ত। বিভ্রান্ত মুসলমানরাও।  বিভ্রান্ত মুসলমানদের মধ্যে স্কুল-কলেজের শিক্ষাপ্রাপ্ত মুসলমানরা এক অদ্ভূত চরিত্রের। তারা মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের কথাকেই ধ্রুব সত্য জ্ঞান করে। বলে, ইসলামে শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম, হিংসার স্থান ইসলামে নেই। এমন জোরের সঙ্গে এ কথাগুলি তারা বলে যেনো  কোরান-হাদিস পড়ে সব কিছু জেনে বুঝে বলছে। কিন্তু আসলে ওদের সঙ্গে আলোচনায় এটা বুঝেছি যে ওরা কোরান, হাদিস, তফসির এবং ইসলামের ইতিহাস - এসব কোনোটাই পড়েনি, পড়ে থাকলে নির্বাচিত কিছু নির্দিষ্ট অংশ হয়তো পড়েছে। অমুসলিমদের কী ধারণা? তাদের অধিকাংশই বিশ্বাস করে মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের।  তাদের এই  বিশ্বাসটাও কোরান-হাদিস-তফসির না পড়েই। এরা ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ, কিন্তু মতামত দেয় বিশেষজ্ঞের মতো। অজ্ঞতা সত্ত্বেও  যারা বিশেষজ্ঞর মতো আচরণ করে তাদের দু’টি শ্রেণি আছে।   একদল মূর্খ, একেবারে নিরেট মূর্খ, আর একদল ধান্দাবাজ। এই নিরেট মূর্খ ও ধান্দাবাজদের কথাকে ধ্রুবসত্য জ্ঞান না করে কৌতূহলী মানুষদের উচিৎ  কোনটা ঠিক বা কারা ঠিক জানার জন্যে ইসলামের ধর্মগ্রন্থের সাহায্য নেওয়া। যারা  সঠিক সিদ্ধান্তে আসতে চান তাদের জন্যে কোরান, হাদিস ও তফসির থেকে কিছু সূত্র/উদ্ধৃতি তুলে দিলাম নীচে।
ইংরেজদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ধর্মে খৃষ্টান হলেও নববর্ষ উদযাপনের উৎসব ধর্মীয় নয়,  তাই এতে  ধর্মীয় ভেদাভেদও থাকে না।  হিন্দু, মুসলমান, জৈন, ইহুদী, খৃষ্টান সবাই মিলেমিশে একসঙ্গে ইংরাজী নববর্ষ উদযপনের আনন্দে মেতে ওঠে। আসল কথা বন্ধুত্ব তো আর জাত-ধর্মের বেড়া মানে না।  বন্ধুত্বের প্রশ্নে ইসলাম কিন্তু অলঙ্ঘনীয় বেড়া দিয়ে রেখেছে।  সে বেড়া চীনের প্রাচীরকেও হার মানায়। বেড়াটা এ রকম – মুসলমানরা অমুসলমানদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পারবে না। কোরান বলছে, হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের পূর্ববর্তী গ্রন্থপ্রাপ্তগণ যারা তোমাদের ধর্মকে উপহাস ও খেলার বস্তুরূপে গ্রহণ করেছে তাদের  ও অবিশ্বাসিগণকে  বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। এবং তোমরা যদি বিশ্বাসী হও,  তবে আল্লাহকে ভয় করো  (সুরা মায়দা, ৫/৫৭) একটি আয়াতেই নয়, এ রকম নিষেধাজ্ঞা কোরানে রয়েছে আরো বহু আয়াতেই।  যেমন  ৩/২৮, ৩/১১৮-১২০;  ৪/১৪৪, ৯/২৩,   ৫৮/২২, ৫/৫৫-৫৭, ৫/৫১ ইত্যাদি।  মুসলমানরা যদি কাফেরদের বন্ধু ও অন্তরঙ্গ বন্ধু বানায় তবে ইসলামের চোখে তারা অত্যাচারী। এ প্রসঙ্গে কোরানের কোরানের ভাষ্যটি এ রকম,  হে মুমিনগণ! তোমাদের পিতা ও ভাই ঈমান বাদে কুফরীকে ভালোবাসিলে তাহাদেরকে অন্তরঙ্গ বানাইও না; যাহারা বানাই তাহারাই যালিম। (সুরা – তওবা, /২৩) ‘যালিম’ মানে অত্যাচারী। সুতরাং এটা স্পষ্ট প্রতীয়মান হুচ্ছে যে মুসলিমদের ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন করা মানে কোরানের নির্দেশ লঙ্ঘন করা।
ইংরাজী নববর্ষ উদযাপন কোনো ধর্মীয় বিষয় নয়, এটা অধর্মীয় ও অসাম্প্রদায়িক বিষয়। কিন্তু ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে এটাও ভুল নয় যে এটা মুসলিমদের অনুষ্ঠান মোটেই নয়। কারণ ইসলাম যে ক্যালেণ্ডার অনুসরণ করে সেটা আরবি ক্যালেণ্ডার।  রোযা, নামায, হজ সবকিছু পালন করতে হয় আরবি ক্যালেণ্ডার অনুসারেই। সুতরাং আরবি ক্যালেণ্ডার বাদে আর সব ক্যালেণ্ডার হলো অবিশ্বাসীদের ক্যালেণ্ডার। কাফেরদের সঙ্গে যেখানে মেলামেশায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে সেখানে সেই ক্যালেণ্ডার অনুযায়ী মুসলমানদের নববর্ষ উদযাপন করা শরিয়তসম্মত কাজ না শরিয়তবিরোধী কাজ তা নির্ণয় করা নিশ্চয় কঠিন নয়।
কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব না করা মানে তাকে শত্রু জ্ঞান করতে হবে এমন হওয়ার কথা নয়। কোরান কিন্তু এর উল্টো কথা বলে। বলে যে বন্ধু নয় সে শত্রু।  কোরান বলেছে,  হে মুমিনগণ! তোমরা মুমিন ব্যতীত  অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করিও না, তারা তোমাদের অমঙ্গল সাধনে ত্রুটি করে নাতোমরা কষ্টে থাক তাতেই তাদের আনন্দশত্রুতাপ্রসূত বিদ্বেষ তাদের মুখেই ফুটে ওঠে আর যা কিছু তাদের মনের মধ্যে লুকিয়ে আছে তা আরও অনেকগুণ বেশী জঘন্য তোমাদের জন্য নিদর্শন বিশদভাবে বর্ণনা করে দেওয়া হলো, যদি তোমরা তা অনুধাবন করতে সামর্থ হও  (সুরা – ইমরান, /১১৮)  এ তো গেলো সমস্ত অবিশ্বাসীদের সম্পর্কে একটা সাধারণ মনোভাব। কিন্তু ইহুদি ও খৃষ্টানদের সম্পর্কে একেবারে তাদের নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে তারা মুসলমানদের শত্রু। কোরান বলছে, “- ইহুদীরা বলে - ওজায়ের আল্লাহর পুত্র, এবং খৃষ্টানরা বলে – মসীহ আল্লাহর পুত্র। এটি তাদের মুখের কথা, তারা পূর্ববর্তী অবিশ্বাসীদের কথা ও মত অনুকরণ করছে, আল্লাহ তাদের ধ্বংস করুক।” (সুরা – তওবা, ৯/৩০) এখানে ইহুদী ও খৃষ্টানদের ধ্বংস কামনা করা হয়েছে।  শুধু ধ্বংস কামনা নয়, কোরান ঘোষণা করেছে ইহুদিরা আল্লাহর কাছে চির অভিশপ্ত, কোনো কালেই ক্ষমা পাবে না এ প্রসঙ্গে কোরানের আয়াতটি বা ভাষ্যটি হলো,   ইহুদিগণ বলে যে আল্লাহর হাত আবদ্ধ। তাদের হস্তসমূহ শৃঙ্খলাবদ্ধ হবে  এবং তারা যা বলছে তার জন্যে  অভিশপ্ত হবে।  বরং তার উভয় হস্তই প্রসারিত, তিনি যেরূপ ইচ্ছা দান করে থাকেন এবং তোমার প্রতিপালক হতে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে তাদের অনেকেরই বিদ্রোহ ও অবিশ্বাস বাড়বে।  আমি তাদের মধ্যে উত্থানদিবস (কিয়ামত) পর্যন্ত শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চার করেছি, যখন তারা যুদ্ধের অগ্নি প্রজ্বলিত করে, আল্লাহ তা নির্বাপিত করেন; এবং তারা পৃথিবীর বুকে অশান্তি করে বেড়ায়, বস্তুত আল্লাহ অশান্তি উৎপাদনকারীদের ভালোবাসেন না।” (সুরা – মায়দা, ৫/৬৪)    না, ওদের শুধু ধ্বংস কামনা করে এবং অভিশাপ দিয়েই মুহাম্মদ ক্ষান্ত হন নি, ওদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করারও আদেশ দিয়েছেন তিনি। সে আদেশটি হলো – “যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে না,  এবং আল্লাহ ও রাসুল যা বৈধ করেছেন, যারা তা বৈধ জ্ঞান করেনা, এবং যাদের গ্রন্থ দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে যারা সত্য ধর্ম স্বীকার করে না, তোমরা তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করো, যে পর্যন্ত তারা অধীনতা স্বীকার করে স্বহস্তে জিজিয়া দান না করে।”  (সুরা – তওবা, ৯/২৯)  – এই কথাগুলি বলা হয়েছে ইহুদী ও খৃষ্টানদের উদ্দেশ্যে।  যদি ‘সত্য’ ধর্ম স্বীকার না করে তার কী পরিণাম হবে? পরিণাম হবে মুণ্ডুচ্ছেদ যা এখন বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরাক, ইরান, নাইজিরিয়ায় এখন হরবকত হচ্ছে। এই দেশগুলিতে  অবিশ্বাসীদের নৃশংসভাবে যে হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে তার শিক্ষা তো পেয়েছে মুহাম্মদের কাছ থেকেই। মুহাম্মদ নিজে হাতেই এরূপ শাস্তি দিতেন ইহুদি, খৃষ্টান ও পৌত্তলিকদের। এ প্রসঙ্গে স্মরণ করতে বলবো মদিনার ইহুদীদের বানু কোরাইজা গোষ্ঠীর ৯০০ জন পুরুষদের গলা কেটে হত্যা করার কথা। এই বীভৎস গণহত্যাকাণ্ডটি যে ঘটেছিলো সে কথা মুসলিম ধর্মগুরু এবং ঐতিহাসিকরাও অস্বীকার করেন না। আর তাছাড়া  কোরানেও এই ঘটনাটির উল্লেখ ও সমর্থন আছে ৩৩/২৬, ও ৩৩/২৭ নং আয়াতে। আয়াত দু’টি  হলো,  আর গ্রন্থধারীদের মধ্যের যারা তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলো তাদের তিনি নামিয়ে এনেছিলেন তাদের দূর্গ থেকে, আর তাদের হৃদয়ে ভীতি সঞ্চার করেছিলেন; একদলকে তোমরা হত্যা করেছিলে ও বন্দি করেছিলে আর এক দলকে।  (৩৩/২৬)  আর তিনি তোমাদের উত্তরাধিকার করতে দিলেন তাদের জমিজমা ও তাদের বাড়িঘর ও তাদের ধনসম্পত্তি এবং এক দেশ যেখানে তোমরা অভিযান চালাও নি। আর আল্লাহ সব কিছুর উপরেই ক্ষমতাবান।” (৩৩/২৭)  একদলকে হত্যা করা বলতে ৯০০ জন পুরুষ ইহুদীকে হত্যা করার কথা বলা হয়েছে, আর একদলকে বন্দী করা বলতে তাদের শিশুসন্তান ও নারীদের কথা বলা হয়েছে। হ্যাঁ, সমস্ত নারী এবং নাবালক সন্তানদের ক্রীতদাস বানিয়ে মুসলমানদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিলো। 

হাদিসেও ভুরিভুরি নির্দেশ রয়েছে খৃষ্টান ও ইহুদিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার এবং তাদেরকে হত্যা করার। সে রকম একটি হাদিস হলো, - “রাসুলুল্লাহ (সাঃ বলেছেন, তোমরা ইহুদিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। এমনকি তাদের কেউ যদি পাথরের আড়ালে ত্মোগোপন করে তাহলে পাথরও বলবে, ‘হে আল্লাহ আমার পেছনে ইহুদি আছে, তাকে হত্যা করো।” (বোখারী, ৫ম খন্ড, হাঃ নং- ২৭২৪)    

কোরানে ও ইসলামের ইতিহাসে এ রকম আয়াত ও দৃষ্টান্ত আরো অনেক রয়েছে।  উপরের আলোচনা থেকে নিশ্চয় আমাদের বুঝতে অসুবিধা হয় না যে মুসলমানদের অ-আরবীয়  কোনো কোনো ক্যালেণ্ডারের নববর্ষ উদযাপন করা ইসলাম মতে বৈধ, না অবৈধ। আর কোনো মুসলমান কাফেরদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করলে সে আর মুসলমান থাকে কী না সে বিষয়েই কোরান, হাদিস এবং মুহাম্মদের নিজস্ব কার্যকলাপ কোনো অস্পষ্টতা রাখে নি। আর এটাও বুঝতে অসুবিধা হয় না আল্লাহ ও মুহাম্মদের সংবিধানে কাফেরদের জন্যে কী কঠোর, নৃশংস ও বীভৎস শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। অতএব এটাও বোধগম্য না ওয়ার কোনো কারণ দেখি না যে ইস্তাম্বুলে ইংরাজী নববর্ষ  এবং বাংলাদেশে রমনার বটমূলে বাংলা নববর্ষ উদযাপনকারীদের  গুলি চালিয়ে হত্যা করা ইসলাম অনুমোদন  করে কী না। আমি নিশ্চিত যে একদল মুসলমান আছে তারা এক কথায় বলবে যে আমি যা লিখেছি তা সব মথ্যে। দয়া করে তারা যেন সুনির্দিষ্ট করে বলে আমি কোনটা মিথ্যে লিখেছি। 


পরিশেষে মুসলিম বন্ধুদের উদ্দেশ্যে বলি যে ধর্মটার জন্যে নিজেদের সব থেকে বেশী গৌরবান্বিত বোধ করেন সেই ধর্মটাকে ভালো করে জানুন। এখন তো হাত বাড়ালেই সব কিছু পাওয়া যায়, জ্ঞানভাণ্ডার তো এখন বিজ্ঞানের দৌলতে হাতের মুঠোয়। পরের মুখে ঝাল খাওয়া আর কেনো, আর কতোদিন? নিজেরা পড়াশোনা করে যুক্তি ও বুদ্ধি দিয়ে সিদ্ধান্তে আসুন ইসলাম সম্পর্কে কারা ঠিক আর কারা ভুল বলছেন। ইসলাম সম্পর্কে মুসলিম বুদ্ধিজীবীরা যা বলছেন সেটা ঠিক, না কি লাদেন, মোল্লা ওমর, আবুবকর আল-বাগদাদি এবং জিহাদের জন্যে নিজেদের উৎসর্গ করেছে এমন অসংখ্যা মেধাবি মুজাহিদরা যা বলছে সেটা? যদি বোঝেন জিহাদিরা যা বলছে এবং করছে সেটাই আসল ইসলাম তাহলে আপনাদের কী করণীয় তা স্থির করুন। যদি মনে হয় একমাত্র আল্লাহর ধর্মই ঠিক এবং সেই ধর্মের পতাকার নীচে সবাইকে আনতে হবে যে কোনো উপায়ে তবে দেরী না করে যে কোনো একটা সন্ত্রাসবাদী জিহাদি গ্রুপে নাম লিখিয়ে ফেলুন। যদি মনে হয় ইসলাম শান্তি, সম্প্রীতি, সৌহার্দ, সহিষ্ণুতা ও মানবতার পক্ষে একটি বিপজ্জনক ধর্ম তাহলে কী করবেন সেটাও  নির্ণয় করুন। যদি আপনাদের বিবেক বলে সংকীর্ণতার ঊর্ধে উঠে মানবতার পক্ষে দাঁড়াতে তাহলে ইসলামের আসল স্বরূপ উন্মোচন করতে মুখ খুলুন এবং পারলে কলম ধরুন। যদি ভয়কে জয় করতে না পারেন চুপচাপ থাকুন, দয়া করে বুদ্ধিজীবীদের মতো ইসলাম শান্তি-সম্প্রীতি-সহিষ্ণুতা এবং দয়া-মায়া-ক্ষমার ধর্ম বলে ভণ্ডামি করবেন না।         

        
     

KARBALA: Truth and Lies

  KARBALA : Truth and Lies           GIASUDDIN                 Translated by SRIJIB BISWAS        ...