Saturday, February 27, 2016

ইসলামের চোখে টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা-হীরা প্রভৃতি ধনদৌলতের মতো নারীও গণিমতের মাল



কোরানের চোখে নারী যে ভোগ্যবস্তু তার প্রমাণ ‘গণিমত’-এর ইসলামি তত্ত্বেও নিহিত আছে। এই তত্ত্বের প্রবক্তা স্বয়ং মুহাম্মদ। বিধর্মীদের বিরুদ্ধে জিহাদে (পবিত্র যুদ্ধ!) মুসলিমরা বিজয়ী হলে তাদের সমস্ত স্থাবর সম্পত্তি লুট করে নিয়ে আসতো, লুট করা জিনিষপত্রের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশুরাও থাকতো। মুসলিমরা  জিহাদে  বিধর্মীদের  নির্মমভাবে ব্যাপকহারে হত্যা করতো। বিজিত বিধর্মীদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকতো এবং আত্মসমর্পণ করতো তাদের বন্দি করে নিয়ে আসতো। বিধর্মীদের উপর আক্রমণ করা, হত্যা করা, তাদের সর্বস্ব লুট করা, ও বন্দি করে নিয়ে আসার দস্যুসুলভ হিংস্র ও  পৈশাচিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছিলো মুহাম্মদের নেতৃত্বেই।  লুটের এই  সব সামগ্রী কোরান বা ইসলামের পরিভাষায় হলো  গণিমতের মাল। লুটের   সমস্ত  সামগ্রী (লুটের মাল বলতে লজ্জা পায় বলে মুসলিম বুদ্ধিজীবী ও ধর্মগুরুগণ এখন লুটের মালকে বলেন যুদ্ধলব্ধ ধন) বণ্টন করা হতো যারা আক্রমণে (জিহাদে) অংশ নিতো তাদের মধ্যেবন্দি  বিধর্মীদের ক্রীতদাস বানিয়ে নিজেদের অধীনে  রাখাকে ইসলাম বৈধতা দিয়েছিলো  জিহাদে অংশ গ্রহণকারী মুসলমানদের মধ্যে। এমনকি  বণ্টন করা হতো নারী, পুরুষ ও শিশুদেরও, এবং  তারপর তাদের ক্রীতদাস করে রাখা হতো।  ক্রীতদাস ও ক্রীতদাসীদের বেগার খাটানো, বিক্রি করা,  এবং  যৌনদাসী রূপে যথেচ্ছ  ভোগ করাকেও ইসলাম  বৈধতা দিয়েছিলো আধুনিক যুগে ইসলামে এটা রহিত হয়ে গেছে এমনটা  ভাববার অবকাশ নেই। কারণ, কোরানের আইন তথা আল্লাহর আইনে পরিবর্তন আনার  অধিকার কারোর নেই । মুহাম্মদই  এ কথা বলে গিয়েছেন যার প্রমাণ রয়েছে কোরানেএ প্রসঙ্গে কোরানে বলা হয়েছে, “যখন আমার সুস্পষ্ট আয়াত (নিদর্শনসমূহ) তাদের নিকট পাঠ করা হয়, তখন  যারা আমার সাক্ষাতের আশা করে না, তারা বলে, - এটি ব্যতীত অন্য কোরয়ান আনো অথবা একে বদলাও । তুমি বলো আমার পক্ষে এটা বদলানো সম্ভব নয় । আমার প্রতি যা ওহি (প্রত্যাদেশ) হয় – আমি তাই-ই অনুসরণ করি, যদি আমি আমার প্রতিপালকের অবাধ্যতা করি, নিশ্চয়   মহা দিবসে আমার শাস্তির আশংকা আছে।”  (দ্রঃ- সুরা ইউনুছ, ১০/১৫, অনুবাদ – ড.অসমান গণি)   ‘আইএস’ – এর জঙ্গীরা সিরিয়া ও ইরাকে এবং ‘বোকো হারাম’  নাইজিরিয়ায় বিধর্মী ও শিয়া সম্প্রদায়ের নারীদের অপহরণ বন্দি করছে এবং তাদের যৌনদাসী রূপে যথেচ্ছ  ভোগ করছে , অথবা  বিক্রি  করছে । ‘আইএস’  জঙ্গীরা কীভাবে বন্দি করা নারীদের ধর্মের নামে ভোগ (ধর্ষণ) করছে তার মর্মন্তুদ আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছি তাদের ডেরা থেকে কোনোক্রমে পালিয়ে আসা বা মুক্তি পাওয়া  নারীদের মুখ থেকে।  এ রকম একটি বীভৎস অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন ইরাকের একজন ইয়াজিদি (ইয়াজিদিরা অমুসলিম) রমণী। সেই যুবতী  নারী সন্ত্রাসীদের হাতে অত্যাচারিত হওয়ার  যা বর্ণনা দিয়েছেন তার কয়েকটি কথা এ রকম -  ৩০ বারের বেশী ধর্ষতা হয়েছি। খাওয়ার সময় পাই না, বাথরুমে যাওয়ার সময় নেই।  মেয়েটি সব শেষে বলেছেন তাঁরা আর বাঁচতে চাই না।  মৃত্যু কামনা করে  তাই কাতর স্বরে সাংবাদিকদের অনুরোধ করে  বলেছেন, “দয়া করে মার্কিন বিমানগুলোকে বলুন, তারা যেন আমাদের এই ঘাঁটিতে বোমা মারে, আমরা মরতে চাই।” এই  নির্যাতিতা নারীদের  অপরাধ কী? অপরাধ হলো  তাঁরা বিধর্মী তথা  ইয়াজীদি সম্প্রাদায়ের মেয়ে। শুধু ইয়াজিদি নারীরাই নয়, এভাবে  য়ে শয়ে  খৃস্টান ও ইয়াহুদি, এবং এমনকি  শিয়া সম্প্রদায়ের মুসলিম  নারী ও  শিশুকন্যাদের বন্দি করে তাঁদের উপর অনুরূপ  অত্যাচার চালানো হচ্ছে।”  (সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৯/১০/২০১৪, পুরো সংবাদটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন -  http://www.anandabazar.com/international/%E0%A6%86%E0%A6%87%E0%A6%8F%E0%A6%B8-%E0%A6%AD-%E0%A6%AE-%E0%A6%AE-%E0%A6%A4-%E0%A6%AF-%E0%A6%95-%E0%A6%AE%E0%A6%A8-%E0%A6%A7%E0%A6%B0-%E0%A6%B7-%E0%A6%A4-%E0%A6%B0- %E0%A6%95-%E0%A6%89-%E0%A6%95-%E0%A6%89-%E0%A6%B8-%E0%A6%96-1.81850 )
একটু আগেই উল্লেখ করেছি যে স্বয়ং মুহাম্মদই আল্লাহর নামে আরবের মাটিতে  এই বর্বর প্রথার প্রবর্তন করেছিলেন। গণিমতের মাল বণ্টনের সময় তিনি একাই নিতেন পাঁচ ভাগের এক ভাগ, চার ভাগ  বণ্টন করতেন জিহাদে অংশ নেয়া বাকি মুসলিম দস্যুদেরদের মধ্যে। খুব সম্ভবতঃ  ৬২৪ খৃস্টাব্দে বদর যুদ্ধে এই প্রথা প্রথম প্রবর্তন করেন তিনি। সেই যুদ্ধে মক্কার  কোরেশদের পরাজিত করে যে সব সামগ্রী লুট করে নিয়ে এসেছিলেন তাদের মধ্যে  ৭০ জন বন্দিও ছিলো।   লুণ্ঠিত এ সব মাল  কী রূপে বন্টন করা হবে  এ প্রশ্ন উঠলে  মুহাম্মদ তাঁর শিষ্যদের আল্লাহ্‌র দোহাই দিয়ে বলেছিলেন  যে,  লুটের সমস্ত সামগ্রীর মালিক  আল্লাহ এবং তার রসুল তথা   মুহাম্মদ।  কোরানের সেই ভাষ্যটি হলো – “তারা তোমাকে (যুদ্ধলব্ধ) অতিরিক্ত সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছে, তুমি বলো – যুদ্ধলব্ধ দ্রব্যসম্ভার আল্লাহ ও তার  রাসুলের, অতএব  আল্লাহকে ভয় করো  এবং  তোমাদেরনিজেদের মধ্যে  সদ্ভাব স্থাপন করো, এবং আল্লাহ্‌ ও তার রাসুলের স্বীকার করো যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।”  (সুরা আনফাল, ৮/১, অনুবাদ – ড.ওসমান গণি)  মুহাম্মদের এ কথা শুনে তাঁর শিষ্যদের একাংশ তীব্র আপত্তি ও প্রতিবাদ জানায়। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে মুহাম্মদ আর একটি ওহির অবতারণা করেন। সেটা হলো – “এবং আরো জেনে রেখো যে – যুদ্ধে যা তোমরা লাভ করো, তার এক-পঞ্চমাংশ আল্লাহ্‌র ও রসুলের এবং রসুলের আত্মীয়-স্বজন ও পিতৃহীন ইয়াতীম ও দরিদ্র এবং পথিকদের জন্য, যদি তোমরা আল্লাহ্‌র প্রতি বিশ্বাস করো এবং যেদিন উভয় দল সম্মিলিত হয়েছিলো, সেই মীমাংসার দিবসে আমি স্বীয় দাসের উপর যা অবতীর্ণ করেছিলাম, তার প্রতি বিশ্বাসী হও । ” (৮/৪১,অনুবাদ – ড.ওসমান গণি)    মুহাম্মদ এই  কথাগুলি আবৃত্তি  করার পর তাঁর  শিষ্যগণ তথা জিহাদিগণ শান্ত হয় এবং সেভাবেই লুটের সামগ্রীগুলো বণ্টন করা হয় । প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে,  পরের ধন-সম্পদ লুট করা মদিনার মানুষদের সংস্কৃতি ছিলো না। এমনকি মক্কার  যাযাবর প্রকৃতির অধিবাসীগণের মধ্যে  মরুপথে বাণিজ্য করতে যাওয়া বণিকদের কাফেলার উপর হামলা করা ও লুট করার রেওয়াজ ছিলো ঠিকই, কিন্তু কোনো মহল্লার উপর  অতর্কিতে আক্রমণ করে  তাদের সর্বস্ব লুট করতো এবং তাদের বন্দি করে নিয়ে এসে ক্রীতদাস বানাতো এমনটা বিশেষ শোনা যায় না।   ফলে মুহাম্মদের শিষ্যদের অনেকের  মধ্যেই পরাজিত ও বন্দিদের ক্রীতদাস বানানোর মতো অমানবিক কুৎসিত আদেশটি মন থেকে মেনে নিতে আপত্তি ছিলো । আপত্তি ছিলো পরনারীকে স্ত্রীর ন্যায় ভোগ করায়। এমনকি লুটের মালের ভাগ নিতেও আপত্তি ছিলো অনেকের । ডাকাতি করে নিয়ে আসা লুটের মালের ভাগ নিতেও আপত্তি ছিলো অনেকের।  বিবেকের তীব্র  দংশন অনুভব করছিলেন  তাঁরা । তাঁদের এই বিবেকবোধ এবং  উচ্চ মূল্যবোধগুলিকে মুহাম্মদ আল্লাহর ওহির দোহাই দিয়ে ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন  যাঁরা লুটের মাল নিতে, কিংবা পরনারীকে ভোগ করতে আপত্তি জানিয়েছিলেন বা  দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন তাঁদেরকে মুহাম্মদ  বলেছিলেন যে তোমাদের জন্যে আল্লাহ্‌ এগুলো বৈধ করেছেন, তোমরা নির্ভয়ে ও নিঃশঙ্কোচে এ সব ভোগ করবে।   কোরানে বর্ণিত সেই কুৎসিৎ আদেশনামাটি হলো, - “যুদ্ধে যা তোমরা লাভ করেছ তা বৈধ ও উত্তম ভেবে ভোগ করো, আল্লাহ্‌কে ভয় করো, আল্লাহ্‌ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু ” (সুরা  আনফাল। ৮/৬৯,  অনুবাদ – ড.ওসমান গণি)    বিধর্মী ক্রীতদাসীরা মুসলমানদের কাছে  ভোগের জন্যে যে হালাল (বৈধ)  সে কথা কোরানে  অসংখ্যবার বলা হয়েছে। কোরান বলেছে পুরুষদের,  তোমরা স্বাধীন মুসলিম নারীদের বিয়ে করতে পারো দু’ই, তিন বা চারটি, কিন্তু  তোমাদের অধিকারে  যতো সংখ্যক  দাসী আছে  তাদেরকে  তোমরা  অবাধে ভোগ করতে পারবে, সেক্ষেত্রে সংখ্যার কোনো সীমা নেই।   কোরানের সেই আয়াত টি হলো (হে নবী! আমি তোমার জন্য বৈধ করেছি তোমার স্ত্রীগণকে যাদের তুমি দেনমোহর দান করেছ, এবং বৈধ করেছি – তোমার অধিকারভুক্ত দাসীগণকে, যাদের আমি দান করেছি, এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি, তোমার চাচাতো ভগ্নি ও ফুফুতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি ও খালাতো ভগ্নি যারা তোমার জন্য দেশ ত্যাগ করেছে, এবং কোনো বিশ্বাসী নারী নবীর নিকট নিবেদন করলে এবং নবী তাকে বিয়ে করতে চাইলে - সেও বৈধ, এটা বিশেষ করে তোমার জন্য, অন্য বিশ্বাসিদের জন্য নয়, যাতে তোমার অসুবিধা না হয়।” (৩৩/৫০, অনুবাদ – ড. ওসমান গণি)  এটা বিশেষ লক্ষ্যণীয় যে,  আয়াতে স্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া  হয়েছে, ‘বৈধ করেছি – তোমার অধিকারভুক্ত দাসীগণকে যাদের আমি দান করেছি’অর্থাৎ দাসীর সংখ্যা দু’/চারশো বা দু’/চার হাজার যাই হোক না কেনো সবকেই ভোগ করা বৈধ। ইসলামের এই বিধি অনুসারেই খলিফারা হাজার হাজার দাসী বা উপপত্নী রাখতেন। একটি উদাহরণ দেয়া যাক – “অপর এক বর্ণনা থেকে পাওয়া যায়, আল-মুতাওয়াক্কিলের  চার হাজার উপপত্নী ছিল । তারা প্রত্যেকেই ছিল তাঁর শয্যাসঙ্গিনী ।  একবার তার এক সেনা প্রধানের কাছ থেকে উপহারস্বরুপ ২০০ জন ক্রীতদাসী লাভ করেছিলেন ।  রাজ্যপাল ও সেনাপ্রধানরা নিয়মমাফিক খলিফা অথবা উজিরদের কাছে অন্যান্য উপহারের সঙ্গে নারীও পাঠাতেন ।  সেই উপঢৌকন প্রেরণে ব্যর্থ হলে তাকে বিদ্রোহী বলে গণ্য করা হতউপহার হিসেবে প্রাপ্ত বিশ্বস্ত দাসদের নিয়ে আল-মামুন একটি পরিকল্পনা রচনা করেছিলেন। তিনি তাদেরকে সন্দেহজনক ক্ষেত্রে গুপ্তচর হিসেবে অথবা প্রয়োজনমাফিক হইচই সৃষ্টি করার কাজে নিয়োজিত করতেন।” (সূত্রঃ আরব জাতির ইতিহাস, ফিলিপ কে হিট্টি, পৃ – ৩২৬ )  উপরের দেওয়া তথ্যটি ফিলিপ কে হিট্টির মস্তিষ্ক প্রসূত নয় । তিনি যে যে সূত্র থেকে এই তথ্যগুলি পেয়েছেন সেগুলি হলো “নুওয়াইরি, নিহায়া, ৪ খন্ড, ৯২ পৃঃ  এবং মাসঊদী, ৭ খন্ড, পৃঃ ২৮১” 
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, ইরাক ও সিরিয়ায় জিহাদে নিযুক্ত  মুসলিমদের মধ্যে বন্দি নারীদের তথা যৌনদাসীদের  ভোগ করা নিয়ে প্রবল বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে যা আইএস-এর খলিফা আবুবকর  আল-বাগদাদী একেবারেই  নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না মুহাম্মদের সময়ে তিনি  নিজে নারী বন্দি-সহ  সমস্ত  লুণ্ঠিত দ্রব্য বণ্টন করতেন। তাঁর পরে সে কাজের দায়িত্ব পালন করতেন ইসলামি রাষ্ট্রের খলিফাগণ।  মুহাম্মদ এবং তাঁর পর পরই যাঁরা খলিফা হয়েছিলেন তাঁদের যে কর্তৃত্ব, আধিপত্য ও নিয়ন্ত্রণ ছিল ইসলামি খেলাফত (রাষ্ট্র) ও  জিহাদী মুসলিমদের উপর  সে কর্তৃত্ব, আধিপত্য ও নিয়ন্ত্রণ নেই  আবুবকর আল-বাগদাদীর। ফলে  ইসলামি স্টেট (আইএস) পরিচালিত ইসলামি খেলাফতে বিশৃঙ্খলা ও  সংকট তৈরী হয়েছে। এই সংকট সমাধানের জন্যে কীভাবে শরিয়তি আইন মেনে যৌনদাসীদের ভোগ (ধর্ষণ) করতে হবে তার জন্যে আইএস সম্প্রতি একটা  ফতোয়া (এখানে ফতোয়া মানে বিধিমালা)  জারি  করেছে।  ২০১৪ সালে এ ফতোয়াটি জারি করা হলেও আইএস-এর ‘কমিটি ফর রিসার্চ এণ্ড ফতোয়াজ’  ফতোয়াটি  ঘোষণা করেছে ২০১৫ সালের ২৯শে জানুয়ারী   এই ফতোয়ায় আইএস-এর  ধর্মতাত্ত্বিকগণ রীতিমতো বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছে কেনো বিধর্মী নারীদের যৌনদাসী করা ন্যায়সঙ্গত এবং তাদের কাকে, কখন ও কীভাবে ধর্ষণ করা বৈধ।  আইএস তার ৬৪ নং এই ফতোয়ায় ইসলামিক স্টেটের মধ্যে উদ্ভূত সংকটের কথা স্বীকার করে বলেছে যে, “আমাদের কিছু ভাই যৌনদাসীদের ব্যবহার করার আইন ভাঙছে । শরিয়তে এই বেআইনি কার্যকলাপের কোনো জায়গা নেই । তবে, এই বিষয়ক আইন নিয়ে বহু বছর আলোচনা হয়নি।”  তারপরই উক্ত ফতোয়ায়  বন্দি করা নারীদের কীভাবে ভোগ বা ধর্ষণ করলে তা হালাল (ইসলাম মতে বৈধ/আইন সিদ্ধ) হবে সে বিষয়ে পনেরোটি বিধি দেওয়া হয়েছেতার মধ্যে দু’টি বিধি হলো এ রকম – এক). বাবা ও ছেলে একই যৌনদাসীকে ভোগ করতে পারবে না। দুই). কোনো একজন মালিকের অধীনে মা ও মেয়ে  দু’জনই থাকলে তাদের একজনকে বেছে নিতে হবে । (সূত্রঃ
http://www.anandabazar.com/international/islamic-state-issues-fatwa-on-how-to-rape-a-woman-slave-1.273529)  এই ফতোয়াটি প্রকাশ্যে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বজুড়ে তীব্র  আলোড়ন  সৃষ্টি হয়েছে।  মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১২০ জন মুসলিম ধর্মগুরু  এটাকে অনৈসলামিক আখ্যা দিয়েছেন এবং অবিলম্বে নারীদের উপর এই জঘন্য পাশবিক অত্যাচার বন্ধ করার জন্যে আইএসের খলিফা আবুবকর আল-বাগদাদিকে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু বলা বাহুল্য যে আল-বাগদাদি এই চিঠিটাকে  মুনাফেকদের পাঠানো একটি ফালতু চিঠি বলে ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। ইসলামের পরিভাষায় তাদেরকে মুনাফেক বলে যারা ইসলামের কিছু অংশকে বিশ্বাস করে আর কিছু অংশকে করে না। যারা জিহাদের বিরোধিতা করে তারা তাই আইএসের কাছে মুনাফেক।  তাছাড়া আইএস এই চিঠিটার বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি কারণ তারা জানে যে তাদের উক্ত ফতোয়াটি কোরানের  আলোকে রচনা করা হয়েছে।  কোন কোন নারী পুরুষের বিয়ের পাত্রী হিসেবে
বৈধ এবং কোন কোন নারি অবৈধ তা কোরানে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া আছে।   ৩৩/৫০ নং আয়াতে (যা উপরে উদ্ধৃত করা হয়েছে) বর্ণনা করা হয়েছে  বৈধ নারীর তালিকা এবং অবৈধ নারীর  তালিকা রয়েছে  ৪/২৩ নং আয়াতে। এই আয়াতের কথাগুলি হলো, -“তোমাদের জন্য অবৈধ করা হয়েছে – তোমাদের মাতৃগণ, তোমাদের কন্যাগণ, তোমাদের ভগ্নিগণ,  তোমাদের ফুফুগণ, তোমাদের খালাগণ, তোমাদের ভ্রাতৃকন্যাগণ, তোমাদের ভগ্নিকন্যাগণ, তোমাদের সেই মাতৃগণ যারা তোমাদেরকে স্তন্য দান করেছে, তোমাদের দুগ্ধ ভগ্নিগণ,  তোমাদের স্ত্রীদের মাতৃগণ, তোমরা যাদের অভ্যন্তরে উপনীত হয়েছে সেই স্ত্রীদের যে সকল কন্যা তোমাদের ক্রোড়ে অবস্থিতা, কিন্তু তোমরা যদি তাদের অভ্যন্তরে উপনীত না হয়ে থাক তবে তোমাদের কোনো অপরাধ নেই; এবং যারা তোমাদের ঔরসজাত সে পুরুষদের পত্নিগণ, এবং যা অতীতে হয়ে গেছে তদ্ব্যতীত দু’ ভগ্নীকে কে একত্রিত করা।” এই আয়াত থেকে এটা স্পষ্ট যে,  মা ও মেয়েকে,  দুই সহদোর বোনকে  এবং  পুত্রবধূকে বিয়ে করা যাবে না। আইএস কোরানের এই বিধি মেনেই যৌনদাসীদের  ভোগ (ধর্ষণ)  করার ফতোয়া (বিধি-নিষেধ) প্রণয়ন করেছে। সুতরাং এ কথা বলা বাহুল্য যে, তাদের উক্ত ফতোয়াটি মোটেই  অনৈসলামিক নয়।      
 


           

KARBALA: Truth and Lies

  KARBALA : Truth and Lies           GIASUDDIN                 Translated by SRIJIB BISWAS        ...