Tuesday, April 28, 2015

অষ্টাদশী হাফসাকে মুহাম্মদের বিয়ে করার নেপথ্য কারণ



মুহাম্মদের চতুর্থ বিয়ে হয়েছিলো  হাফসার সঙ্গে ৬২৫ খৃস্টাব্দে তখন তাঁর হারেমে  দু’জন স্ত্রী বর্তমান ছিলেন যাঁদের  নাম সওদা ও আয়েশা । হাফসা ছিলেন তাঁর অন্যতম বিশ্বস্ত ও ঘনিষ্ঠ সাহাবি তথা অনুচর ও সহযোদ্ধা উমর ফারুক বিন খাত্তাবের বিধবা কন্যা ।  ওমর ফারুক কিন্তু বয়সে  মুহাম্মদের চেয়ে ঢের ছোটো ছিলেন । হাফসা ছিলেন বিধবা এবং তাঁর স্বামী [খোনাইস] বদর যুদ্ধে  নিহত হয়েছিলেন ।  ইসলামের প্রথম পর্বে মক্কাতে যে গুটিকয়েক মানুষ ইসলামে দীক্ষিত হয়েছিলেন খোনাইস ছিলেন তাঁদের একজন    যারা প্রথম পর্বে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলো  মক্কার পৌত্তলিক কোরেশগণ তাদের উপর নানাভাবে প্রবল  চাপ সৃষ্টি করতো যাতে তারা স্বধর্মে প্রত্যাবর্তন  করতে বাধ্য হয়  একবার  তারা  মুহাম্মদ ও তাঁর সেই শিষ্যদের সামাজিকভাবে  বয়কটও  করেছিলো । এই বয়কট অনেকদিনই বলবৎ ছিলো  যার  ফলে মুসলমানদের মনোবল ভেঙে পরার উপক্রম হয়েছিলো  তারা পাছে  ইসলাম ত্যাগ করে আবার স্বধর্মে ফিরে না যায় সে ভয়ে মুহাম্মদ তাঁর শিষ্যদের একটা দলকে  আবিসিনিয়া পাঠিয়ে দিয়েছিলেন । প্রথম যে দলটা আবিসিনিয়ায় হিযরত  করেছিলো সে দলে খোনাইস ও হাফসাও ছিলেন মুহাম্মদ  মদিনায় হিজরত করলে  আবিসিনিয়ার সেই দলটি  মদিনায়  মুহাম্মদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলো মুহাম্মদের মদিনা যাওয়ার দু’বছর পর বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিলো যে যুদ্ধে খোনাইস নিহত হন ।   বহুবিবাহ নারীদের জন্যে চরম অবমাননাকর একটা প্রথা । পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এই প্রথা পুরুষগণ  চালু করেছিল নারীদের উপর প্রভুত্ব ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা ও তাদের ইচ্ছে মতো ভোগ করার  জন্যে । পরে  নারীবিদ্বেষী ও নারীলোভী ধর্মগুরুরা  সেটাকে ঈশ্বরের নামে আরো শক্তপোক্ত  করেন ।  মুহাম্মদ নিজেও এই প্রথায় কোনো দোষ দেখেন নি  তিনি নিজেও অসংখ্য বিয়ে করেছিলেন । সামন্ততান্ত্রিক সমাজে রাজা-বাদশারাও অসংখ্য বিয়ে করতেন এবং তাদের হারেম অসংখ্য স্ত্রীদের  ভিড়ে পরিপূর্ণ থাকতো ।   স্ত্রীদের পাশাপাশি থাকতো অগুন্তি উপপত্নী । মুহাম্মদেরও অনেক ক’জন উপপত্নী ছিলো । রাজা-বাদশাদের বহুবিবাহ ও উপপত্নী নিয়ে মানুষ কোনোদিন মাথা ঘামাতো না, এখনও মাথা ঘামায় না । কিন্তু মুহাম্মদের বিষয়টি আলাদা । তিনি দাবি করেছেন যে তিনি ছিলেন আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ খলিফা [দূত/প্রতিনিধি] । স্বভাবতঃই প্রশ্ন মানুষের মনে, তিনি কেনো নারীজাতিকে যথেচ্ছ ভোগ করার জন্যে রাজা-বাদশাদের মতো ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন ? তিনি কেনো নারীজাতির পক্ষে  অবমাননাকর   কোনো প্রথার উচ্ছেদ না করে সেই প্রথাকেই উৎসাহিত করবেন ? তিনি তো দাবি করেছেন যে ইসলাম হলো আল্লাহর সর্বশেষ ধর্ম ও চিরন্তন একটা ধর্ম । তা হলে প্রাচীন যুগ থেকে চলে আসা  বহুবিবাহের মতো কুৎসিত ও  জঘন্য একটা প্রথাকে ইসলাম টিকিয়ে রাখবে ও উৎসাহিত করবে ?  কেনো তিনি নিজে সেই প্রথাকে ব্যবহার করে নারীজাতিকে যথেচ্ছ ভোগ করার দৃষ্টান্ত রেখে যাবেন ?     তিনি তো আবার এও দাবি করেছেন যে ইসলামই একমাত্র  সাম্যবাদী ধর্ম যেখানে নারী-পুরুষ, ধনী-নির্ধন প্রত্যেকেই সমান এবং সকলের সমান মর্যাদা ও অধিকার বিদ্যমান । তাহলে তিনি কেনো বহুবিবাহ করে নারীর অধিকার ও সম্মান হরণ  ও পদদলিত করবেন ?  এ সব প্রশ্ন ওঠা খুবই স্বাভাবিক, প্রশ্নটা তাঁর সময়েও উঠেছিলো,  এখনও উঠছে ।
এ সব প্রশ্ন এড়ানো সম্ভব নয় । তাই মুসলিম সমাজের ধর্মগুরু  ও ঐতিহাসিকগণ  সর্বদা কৈফিয়ত দিয়ে থাকেন এই বলে  যে মুহাম্মদ কখোনোও তাঁর নিজের প্রয়োজনে বিয়ে করেন নি । তাঁরা বলেন যে ইসলামকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনে তাঁকে অনেকগুলি বিয়ে করতে হয়েছিলো এবং প্রত্যেকটা  বিয়েই হয়েছিলো হয় আল্লাহর ইচ্ছায়, না হয় তার নির্দেশে ।  তাঁরা মুহাম্মদ কোন পরিপ্রেক্ষিতে কাকে বিয়ে করেছিলেন তার মনগড়া বাখ্যা ও প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে চলেছেন  এটা  প্রমাণ করার  জন্যে  যে মুহাম্মদের প্রত্যেকটি বিয়েই ছিলো বৈধ এবং আদর্শ স্থানীয়  । স্বভাবতই হাফসাকে বিয়ে করা কেনো বৈধ ও যুক্তিসঙ্গত ছিলো তার কৈফিয়তও তাঁদের দিতে হয়েছে । এ ক্ষেত্রে প্রধানতঃ তিনটি কৈফিয়ত  তাঁরা পেশ করেছেন । প্রথমটি হলো  মুহাম্মদ তাঁর প্রিয় ও বিশ্বস্ত সাহাবি ওমর  ফারুকের সঙ্গে সম্পর্কটিকে আরো মজবুত করা ।   দ্বিতীয় কারণটি হলো  একজন কন্যাদায়গ্রস্ত পিতাকে তার কন্যাদায় থেকে উদ্ধার করা । এ প্রসঙ্গে বলা হয় যে  হাফসার স্বামী বদর যুদ্ধে নিহত  হলে ওমর ফারুক তাঁর মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়েন । তিনি প্রথমে মুহাম্মদের সব থেকে প্রিয়, ঘনিষ্ট বন্ধু ও সাহাবি আবু বকরকে অনুরোধ করেন হাফসাকে বিয়ে করার জন্যে । আবু বকর নিরুত্তর  থাকেন । তখন অনুরোধ করেন আর এক প্রিয় সাহাবি ওসমান গণিকে । তিনিও সাড়া অসম্মতি জানান   ফলে  ওমর ফারুক মেয়ের জন্যে খুবই দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠার মধ্যে পড়েন ।  মুহাম্মদ তখন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে প্রিয় সাহাবির দুশ্চিন্তা দূর  করার জন্যে হাফসাকে বিয়ে করেন । তৃতীয় কারণটি হলো,  একজন অষ্টাদশী বিধবার যৌবন রক্ষা করা ।   বাখ্যাকারগণের অভিমত হলো হাফসাকে বিয়ে করে একদিকে তিনি ইসলামের স্বার্থ রক্ষা করেছেন, অপরদিকে একজন সাহাবিকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার উপযুক্ত প্রতিদান দিয়েছেন, একজন কন্যাদায়গ্রস্ত পিতাকে উদ্ধার করেছেন এবং একজন যৌবনবতী বিধবাকে নতুন জীবন দান করেছেন ।  অর্থাৎ হাফসাকে তাঁর নিজের কোনো স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যে বিয়ে করেন নি, বরং  তাঁকে বিয়ে করে তিনি  এক মহান আদর্শের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এবং  বিরল এক মহা্নুভবতার পরিচয়  রেখে গেছেন    
দু’জন স্ত্রী থাকা সত্বেও মুহাম্মদের হাফসাকে বিয়ে করার পশ্চাতে যে প্রেক্ষাপট ও কারণগুলি  বর্ণনা করা হয়েছে সেগুলি চিন্তাশীল মানুষদের কাছে মোটেই সন্তোষজনক ও গ্রহমণযোগ্য বলে বিবেচিত হওয়ার উপযুক্ত নয় । ওমর ফারুক মুহাম্মদকে আল্লাহর নবি বলে বিশ্বাস করেই ইসলামে দীক্ষা নিয়েছিলেন এবং  নবির আহ্বানে সাড়া দিয়ে মক্কার ধন-সম্পত্তি, খ্যাতি-প্রতিষ্ঠা ও আত্মীয়-স্বজন সব কিছু ত্যাগ করে  মদিনা হিজরত করেছিলেন । সুতরাং তাঁর সঙ্গে সম্পর্কের বন্ধনটি আরো দৃঢ় করার   যুক্তিটি হাস্যকরযুবতী কন্যার বিধবা হওয়াটা  ওমরের কাছে নিশ্চয় দুশ্চিন্তার  বিষয় ছিলো । একজন অনুগামি ও সহযোদ্ধার সেই দুশ্চিন্তা মুহাম্মদের কাছেও একটা দুশ্চিন্তার কারণ হওয়া খুবই স্বাভাবিক ছিলো । সে সময়  ওমরের  প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে  তাঁর বিধবা কন্যা হাফসাকে পাত্রস্থ করার জন্যে তিনি সচেষ্ট  হবেন সেটাও প্রত্যাশিত ছিলো   কিন্তু তাই বলে তিনি দু’জন স্ত্রী থাকা সত্বেও কন্যাসম  একটা মেয়েকে নিজেই  বিয়ে করবেন এটা মানা যায় না, ভাবাও যায় না   এই বিয়েটাকে একটা আদর্শ ও অনুসরণযোগ্য বিয়ের দৃষ্টান্ত বলে প্রশংসা করা তাই শুধু হাস্যকরই নয়, লজ্জাকরও বটে । মুহাম্মদ একজন অষ্টাদশী ভরপুর যুবতী বিধবাকে বিয়ে করে তাঁকে নবজীবন দান করেছেন এমন যুক্তি বা দাবি শুধু অবাস্তবই নয়, এমন দাবি নির্লজ্জতার চূড়ান্ত প্রকাশও বটে  কারণ মুহাম্মদের যখন হাফসাকে বিয়ে করেন তখন  তিনি ছিলেন  ৫৫ বছরের প্রৌঢ় ।  এই বিয়েটাকে বিশ্লেষণ করলে এ কথা কখনোই বলা যায় না যে মুহাম্মদ একজন যুবতী বিধবাকে রক্ষাকরার নিমিত্ত বিয়ে করেছেন । বরং যে কথা বলা যায় তা হলো,  তিনি কন্যাসম একটি মেয়ের জীবনকে নষ্টই  করেছেন । মুহাম্মদ ৬২ বছর বয়সে যখন মারা যান তখন হাফসা ছিলেন  ২৬ বছরের যুবতী  এবং  মারা যান ৬৩ বছর বয়সে । সুতরাং  বাকি জীবন যে তাঁকে নিদারুণ কষ্টের  বৈধব্যের জীবন কাটাতে হয়েছিলো তা বলা বাহুল্য  প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে  মুহাম্মদ আল্লার নামে একটা অর্ডিন্যান্স জারি করে বলেছিলেন যে নবির স্ত্রীদের কেউ বিয়ে করতে পারবে না এবং নবির স্ত্রীরাও আর পুনরায় বিয়ে করতে পারবে না । কোনো বিবেকবান মানুষের পক্ষে  মুহাম্মদ কর্তৃক হাফসাকে বিয়ে করার ঘটনাকে সমর্থন করা সম্ভব  বলে আমার মনে হয় না ।
একজন মেয়ের জীবন রক্ষার নামে আর একজন বা একাধিক মেয়ের জীবন নষ্ট করা কখনোই  সমীচীন ও সমর্থনযোগ্য হতে পারে না ।  একজন পুরুষ একাধিক বিয়ে করলে সকল স্ত্রীদের সঙ্গে সে ন্যায় বিচার করতে পারে না । মুহাম্মদ নিজেই সে কথা বলেছেন । কোরানে তার প্রমাণও রয়েছে ।  কোনো একজন স্ত্রীর প্রতি  স্বামীর বিশেষ দুর্বলতা থাকবেই, এবং বাকি স্ত্রীরা তাদের ন্যায্য অধিকার ও সম্মান থেকে বঞ্চিত হবেই । সুতরাং কোনো অবস্থাতেই বহুবিবাহকে সমর্থন করা যায় না ।   যিনি নিজেকে নবি [আল্লাহর প্রতিনিধি] বলে দাবি করেন  তাঁর কাছে মানুষ এটাই প্রত্যাশা করবে যে তিনি সেই কাজগুলিই করবেন যা সর্বকালের জন্যে মানুষের কাছে অনুসরণযোগ্য ও আদর্শ স্থানীয় হবে ।  একজন সাহাবিকে তাঁর কন্যাকে পাত্রস্থ করার চিন্তা ও দায় থেকে মুক্ত করার জন্যে নবি  কেন নিজে তাঁর  কন্যাকে বিয়ে করবেন ? কিংবা নিজের হারেমে দু’জন স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও তিনি কেনো আর  একজন নারীকে  বিয়ে করবেন ?  ওমর ও তাঁর কন্যা হাফসার পাশে দাঁড়াবার জন্যে  মুহাম্মদের সামনে তো অনেক বিকল্প পথই খোলা ছিলো ।  তিনি যেটা সহজেই করতে পারতেন তা হলো তাঁর শিষ্যদের মধ্য থেকে উপযুক্ত কোনো  ছেলের সঙ্গে হাফসার  বিয়ে দিতে পারতেন । বদর যুদ্ধের পর সে রকম বহু শিষ্য তাঁর সঙ্গে ছিলো যাঁরা বয়সে ও সামাজিক মর্যাদায় হাফসার উপযুক্ত ছিলেনতিনি তাঁর চাচাতো ভাই আলির সঙ্গে বিয়ে দিতে পারতেন যাঁর সঙ্গে তাঁর নিজের মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন ।   প্রখ্যাত সাহাবি যুবায়েরের সঙ্গেও বিয়ে দিতে পারতেন যিনি ছিলেন মুহাম্মদের আত্মীয় ও আলির মতোই একজন তরতাজা ও প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর যুবক ।  এ ছাড়া আরো অনেক উপযুক্ত যুবক  শিষ্য ছিলো মুহাম্মদের সাথে যাদের কোনো একজনের  সঙ্গে  হাফসার বিয়ে দিতে পারতেন ।  রূপে, গুণে ও সামাজিক মর্যাদায় হাফসা পাত্রী হিসাবে ছিলেন অত্যন্ত লোভনীয় ও আকর্ষণীয়, যার ফলে হাফসার জন্যে একজন ভালো ও উপযুক্ত পাত্র পাওয়া মোটেই কঠিন  ছিলো না ।
কোনো একজন উপযুক্ত পাত্রের সঙ্গে হাফসার বিয়ের ব্যবস্থা করলে সমস্ত দিক থেকেই  উত্তম  ও সঠিক পদক্ষেপ হতো । তার ফলে বিধবা মেয়েকে নিয়ে যেমন ওমরের দুশ্চিন্তার অবসান ঘটতো  তেমনি হাফসাও হয়তো সত্যিকারের নতুন জীবন লাভ করতে পারতেন । এমনটা হলে  নবির প্রতি ওমর ও  হাফসা উভয়েই চির কৃতজ্ঞ  থাকতেন এবং তাঁদের মধ্যেকার সম্পর্কের বন্ধন আরো দৃঢ় ও মজবুত হওয়ার থাকলে এভাবেই হতো এবং অন্যান্য সাহাবিদেরও তাঁর প্রতি আস্থা ও শ্রদ্ধা বহুগুণে বৃদ্ধিলাভ করতো ।  কিন্তু মুহাম্মদ সে ব্যবস্থা করেন নি । এখন প্রশ্ন হলো,  কেনো করেন নি ?  করেন নি এজন্যে যে হাফসার বিয়ের ব্যবস্থা করে ওমরকে দুশ্চিন্তার হাত থেকে রক্ষা করা কিংবা হাফসাকে অকাল বৈধব্যের হাত থেকে করে নতুন জীবন দান করা  – এর কোনোটাই তাঁর অভিপ্রায় ছিলো নাতাঁর একমাত্র অভিপ্রায় ছিলো  হাফসাকে স্ত্রীরূপে পাওয়া   তিনি যে নিজেই হাফসাকে বিয়ে করে ঘরে তুলতে চেয়েছিলেন সে কথা আবু বকর  একান্তে ওমরকে জানিয়েছিলেন । আবু বকর  এ প্রসঙ্গে  ওমরকে কী বলেছিলেন  সে কথা সীরাতুন্নবীর ২য় খণ্ড থেকে একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম লেখক তাঁর গ্রন্থে উদ্ধৃত করেছেন । উদ্ধৃতিটি হলো – “রাসুলুল্লাহর সাথে হাফসার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর, হযরত আবু বকর হযরত ওমরের সাথে সাক্ষাত করে বলেন, ওমর! যখন তুমি আমার নিকট হাফসার বিবাহের প্রস্তাব করেছিলে, তখন আমার নীরবতা তোমাকে ব্যথিত করেছিল । কিন্তু আমার নীরব থাকার কারণ ছিল এই যে, একদা রাসুলুল্লাহ [সাঃ] হাফসা সম্পর্কে নিজেই আলোচনা করেছিলেন । আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, রাসুলুল্লাহ [সাঃ] অবশ্যই হাফসাকে স্বীয় পত্নীতে বরণ করে নেবেন । এ গোপন কথাটি আমি আর কারও নিকট প্রকাশ করিনি । যদি রাসুলুল্লাহ [সাঃ] হাফসাকে বিয়ে না করতেন, তাহলে আমি অবশ্যই তাকে বিবাহ করতাম । [দ্রঃ মহানবী (সঃ) এর বিবাহ, মহম্মদ সাদাত আলী, পৃ-৫৫]  আবু বকরের এই উক্তি থেকে দুটো জিনিষ স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় – এক] মুহাম্মদ স্বয়ং হাফসাকে স্ত্রীরূপে পেতে ব্যাকুল ছিলেন,  এবং  দুই]  হাফসাকে বিয়ে করতে আবু বকর সহ অনেক  সাহাবিই -  যুবক থেকে শুরু করে প্রৌঢ় ও বৃদ্ধ সবাই - মনে মনে ব্যাকুল ছিলেন । সুতরাং একজন উপযুক্ত পাত্রের সঙ্গে হাফসার বিয়ে দেওয়া কোনো সমস্যা ছিলো না । এই ঘটনাটি থেকে এটাও প্রতীয়মান হয় যে ওমর হাফসার জন্যে খুবই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন বলে যে কথাটা প্রচার করা হয় তা একটা মনগড়া গল্প মাত্র । এই গল্পটা বানানোর প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায় মুহাম্মদের হাফসাকে  বিয়ে করার ঘটনাটিকে বৈধতা দেওয়ার অজুহাত  হিসাবে খাড়া করার জন্যে     
হাফসার বৈধব্য দশাকে মুহাম্মদ সুযোগ হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন । প্রশ্ন হলো হাফসাকে তাঁর হারেমে পেতে  মুহাম্মদ কেন ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলেন ? এর অনেকগুলি কারণ আমরা অনুমান করতে পারি । প্রথমতঃ হাফসা ছিলেন ভরপুর যৌবনবতী যাঁর বয়স ছিলো মাত্র ১৮ বছর, দ্বিতীয়তঃ হাফসা ছিলেন খুবই সুন্দরী, তৃতীয়তঃ হাফসা ছিলেন বিদুষী এবং চতুর্থতঃ হাফসা ছিলেন ওমরের কন্যা যাঁর সামাজিক মর্যাদা ছিলো উচ্চবর্গীয়হাফসার রূপ-সৌন্দর্য ও শিক্ষা সম্পর্কে ঐতিহাসিক ও লেখকরা কী বলেছেন তা দেখা যাক । হাফসার বয়স সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের অভিমতের কথা  জানিয়েছেন  মহম্মদ সাদাত আলি তাঁর উপরে উল্লেখিত গ্রন্থে  – “অত্র গ্রন্থকার এ পর্যন্ত যে ক’টা সীরাতগ্রন্থ পর্যালোচনা করেছেন যেমন, হেইকল, হাফিজ গোলাম সারওয়ার, জয়নাল আবেদীন রাহনমো,  মার্টিন লিঙ্গস, সবাই বিবি হাফসার বয়স ১৮ বলে উল্লেখ করেছেন [দ্রঃ ঐ, পৃ-৬২]  হাফসার রূপ ও গুণ সম্পর্কে সাদাত আলি লিখেছেন – “হাফসা ছিলেন অসাধারণ সুন্দরী, অতুলনীয়া স্বাস্থ্যবতী এবং রণনীতিতে বুদ্ধিশালিনী । পিতার বহুগুণই এই কন্যার উপর বর্তেছিল । ... হযরত হাফসা ছিলেন শিক্ষিতা রমণী । পিতার মতো তিনিও কাব্য, সাহিত্য ও কলাবিদ্যার উৎকৃষ্ট সমালোচক ছিলেন । পিতার সাহচর্যে কন্যাও সাহিত্য, কলা ও ইতিহাসে গভীর ব্যুৎপত্তি লাভ করেন ।” [প্রাগুক্ত, পৃ-৬৩]  হাফসার এই কাঁচা বয়স, রূপ-সৌন্দর্য ও উচ্চমানের শিক্ষাই তাঁর জীবনের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলো ।   ৫৫ বছরের প্রৌঢ় নবির চোখ আটকে গিয়েছিলো তাঁর রূপ ও যৌবনের উপর ।  নবির ইচ্ছাকে যেমন অমান্য ও অগ্রাহ্য করতে পারেন নি আবু বকর এবং তাঁর ছ’বছরের কন্যা আয়েশাকে তুলে দিতে বাধ্য  হয়ছিলেন কয়েক বছর আগে পঞ্চাশোর্দ্ধ বয়সের নবির হাতে, তেমনি ওমরও পারেন নি হাফসাকে নবির  হাত থেকে রক্ষা করতে । রূপবতী ও যৌবনবতী হাফসাকে মুহাম্মদ যে কোনোদিনই তৃপ্ত করতে পারেন নি তা বলা বাহুল্য । তাছাড়া বিয়ের মাত্র আট বছর পরেই মুহাম্মদ মারা যান, ফলে ২৬ বছর বয়সেই তাঁকে পুনরায় বিধবা হতে হয় ।  সুতরাং মুহাম্মদের সঙ্গে হাফসার বিয়ে তাঁর জীবনে ছিলো এক চরম অভিশাপ । শুধু হাফসা নয়, আরো অনেক নারীর জীবনকেই  মুহাম্মদ এভাবে  অভিশপ্ত করে তুলেছিলেন ।
হাফসার প্রতি মুহাম্মদের দুর্বার আকর্ষণের পেছনে আরো দুটি বড়ো কারণ ছিলো  বলে মনে হয়  । হাফসাকে মুহাম্মদ যখন বিয়ে করেন তখন তাঁর স্ত্রী আয়েশার বয়স ছিলো মাত্র এগারো কিংবা বারো বছর এবং অপর স্ত্রী সওদার বয়স ছিলো পঁয়ত্রিশ বছর ।   অপ্রাপ্ত বয়স্কা আয়েশা এবং  যৌবন যাঁর অস্তগামী সেই সওদা কেউই নবিকে পূর্ণ তৃপ্তি দিতে পারছিলেন নাএ প্রসঙ্গে ইমাম আল-গাজ্জালির কথা প্রণিধানযোগ্য । তিনি ছিলেন এমন একজন ধর্মগুরু ও পণ্ডিত যাঁর সম্পর্কে বলা হয় যে আল্লাহ যদি মুহাম্মদের পরে কাউকে নবি পাঠাতেন তবে তার  উপযুক্ত ছিলেন তিনি । সেই ইমাম আল-গাজ্জালি বলেছেন চল্লিশ জন পুরুষের সমান যৌনশক্তি ও ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন মুহাম্মদ । কথাটা নিশ্চয় অতিরঞ্জিত তা হোক, তবে এ কথাটা থেকে যে ইঙ্গিত পাওয়া যায় তা হলো মুহাম্মদের যৌনকামনা ছিলো অতিশয় তীব্র যা মুহাম্মদকে অসংযমী ও বহুগামী করে তুলেছিলোফলতঃ  আয়েশা ও সওদাতে  তিনি  মোটেই তৃপ্ত ছিলেন না  এবং সে সময়  তিনি আরো যুবতী ও সুন্দরী রমণীদের তাঁর হারেমে পাওয়ার জন্যে উতলা হয়ে উঠেছিলেন । তাঁর এই উগ্র যৌন-অতৃপ্তি পূরণের অনুকূল পরিবেশও তখন তৈরী হয়ে গিয়েছিলো । একদিকে বদর যুদ্ধ্ব ও উহুদ যুদ্ধে  তাঁর বহু  শিষ্য মারা গিয়েছেন [বদর যুদ্ধে ১৪ জন ও ওহুদ যুদ্ধে কম পক্ষে ৭৭ জন]  যাঁরা রেখে গেছেন অনেকেই অল্প বয়সী ও অতি সুন্দরী বিধবা স্ত্রীঅপরদিকে মুহাম্মদের হাতে তখন এসে গেছে অঢেল বিষয়-সম্পত্তি ও ধন-দৌলত এ সবই এসেছে বিধর্মীদের ধন-সম্পত্তি লুণ্ঠন করে । বদর যুদ্ধে কোরেশদের বহু টাকা-পয়সা এবং উট-ঘোড়া-ভেড়া  ও জিনিষপত্র  লুণ্ঠন করে এনেছিলেন এবং এনেছিলেন বন্দি করে  ৭০জন কোরেশকে । পরে তাদের কাছ থেকে মোটা টাকার পণ আদায় করেছিলেন ।   সমস্ত লুণ্ঠিত  টাকা-পয়সা, পশুপ্রাণী  ও ধন-দৌলত থেকে তিনি নিয়েছিলেন এক-পঞ্চমাংশ আল্লাহর হুকুমের দোহাই দিয়ে আর বিনা যুদ্ধে বিধর্মীদের ধন-সম্পত্তির দখল পেলে তার সবটাই তিনি আত্মসাৎ করতেন । এ সবের  প্রমাণ কোরান ও হাদিসে  রয়েছে মুহাম্মদ বদর যুদ্ধের পর ৬২৫ সালে মদিনার  ইহুদিদের বানু কানুইকা গোষ্ঠীর মহল্লাকে সামান্য  অজুহাতে অবরোধ করেন । ইহুদিরা উপায়ন্তর না দেখে  মুহাম্মদের কাছে আত্মসমর্পণ করে ও ক্ষমা ভিক্ষা  চায়কিন্তু  তিনি ক্ষমা করেন নি ।  বলেছিলেন প্রাণে বাঁচতে চাইলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে হবে, নতুবা বিষয়-আসয় ও ধন-সম্পত্তি সব কিছু ফেলে রেখে মদিনা  ছেড়ে চলে যেতে হবে । প্রাণ বাঁচাতে ইহুদিরা সব কিছু ফেলে মদিনা ত্যাগ করে চলে গিয়েছিলো । বানু কানুইকা গোষ্ঠীর লোকেদের প্রচুর ধন-সম্পদ ছিলো   তাদের সেই বিপুল স্থাবর-অস্থাবর ধন-সম্পত্তির পুরোটাই আত্মসাৎ করেছিলেন মুহাম্মদ । এ ছাড়া ঐ সময়ের মধ্যে বিধর্মীদের বিরুদ্ধে আরো কয়েকটা আচমকা হানা দিয়ে আরো বিপুল পরিমাণ ধন-সম্পত্তি লুণ্ঠন  করা হয়েছিলো   যার প্রত্যেকটার এক-পঞ্চমাংশ ভাগ নিয়েছিলেন তিনি এভাবে মদিনা যাওয়ার মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই মুহাম্মদ সহসা একজন ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন । ফলে তাঁর হারেমে আরো কয়েকজন স্ত্রীকে নিয়ে আসার পরিস্থিতি তৈরী হয়ে গিয়েছিলো । প্রখ্যাত  ঐতিহাসিক  আনোয়ার হেকমত এ প্রসঙ্গে যা লিখেছেন তা হলো -  “As a chief of this marauding band Muhammad suddenly found himself in a better position. From the wealth of the plunder, he was able to acquire another wife. ‘Umar, his closed friend and companion, had a proud widowed daughter, Hafsa, a charming but temperamental eighteen-year-old woman. Omar was delighted to hear that Allah’s apostle was interested in her, therefore, the marriage contract was drawn up between the father and the bridegroom, who once again some years older than his father-in-law.  [Vide: Woman and the Koran, p-46]
মুহাম্মদ একদিকে বিশাল ধনবান হয়ে উঠেছেন, অপরদিকে তাঁর শিষ্যদের মধ্যে  প্রায় একশ’ জন শিষ্য শহিদ হয়েছেন যাঁরা অনেকেই পেছনে রেখে গেছেন তাঁদের বিধবা স্ত্রীদের যাঁদের মধ্যে অনেকেই যুবতী ও অসাধারণ সুন্দরী ছিলেন  বহুগামী ব্যক্তির কাছে এই তো আদর্শ পরিবেশ ও পরিস্থিতি । মুহাম্মদ লুফে নিলেন পরিস্থিতির এই সুযোগ । ডাক দিলেন তাঁর ইমানদার মুসলিম ভাইদের – তোমরা এগিয়ে এসে বিধবা মুসলিম নারীদের পাশে দাঁড়াও । তাদের  জীবন ও যৌবন রক্ষার জন্যে  তাদের একজন দু’জন করে বিয়ে করো । সেই মহৎ [!] কাজের সূচনাও  তিনি করলেন । প্রথম বেছে নিলেন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ওমর ফারুকের বিধবা কন্যা হাফসাকে । তাঁকেই প্রথম কেনো বাছলেন ? ওমর ফারুকের কন্যা বলে ? না, মোটেই তা নয় । তাঁকে বাছলেন কারণ তিনি ছিলেন  রূপ, গুণ,  যৌবন ও সামাজিক মর্যাদায়  অনন্যা ও অতুলনীয়া । মুহাম্মদ হাফসাকে বিয়ে করে এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন – প্রিয় এক সাহাবির বিধবা কন্যাকে উদ্ধার করা হলো, আবার রূপে,গুণে ও যৌবনে ভরপুর একজন যুবতীকেও অনায়াসে  হারেমে তোলা হলো । না,  হাফসাতেই  মুহাম্মদ থেমে থাকেন নি । কারণ তাঁর উদ্দেশ্য তো ছিলো ওমর ফারুককে কন্যাদায় থেকে উদ্ধার করা কিংবা  বিধবাদের পাশে দাঁড়ানো । প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো তাঁর বহুগামীতার চাহিদা ও খায়েস পূরণ করা । তাই হাফসাকে বিয়ে করার কিছুদিন পরেই আবার বিয়ে করলেন জয়নাব বিনতে খুজাইমাকে যাঁর পতিও মারা গিয়েছিলেন বদর   যুদ্ধে । বলা বাহুল্য যে জয়নাবও ছিলেন যুবতী ও সুন্দরী । যয়নাব কিন্তু বিয়ের কয়েক মাস পরেই মারা যান । মুহাম্মদ তারপর  বিয়ে করেন হিন্দা ওরফে উম্মে সালমাকে যার পতি আবু সালমা ওহুদ যুদ্ধে আহত হয়ে পরে মারা যান । উম্মে সালমা এতোই আকর্ষণীয় ছিলেন যে শীর্ষস্থানীয় নেতা আবু বকর ও ওমরও নাকি তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন । কিন্তু উম্মে সালমা তাঁদের প্রস্তাবে রাজী হন নি । কেননা তিনি তাঁর পূর্বতন স্বামীর মতো একজন যোগ্য স্বামী খুঁজছিলেন । এ কথা জানতে পেরে মুহাম্মদ নিজেই তাঁকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন, কেননা তিনি সালমার পূর্বের স্বামীর সমান নয়, তাঁর চেয়ে অধিক যোগ্য ছিলেন । উম্মে সালমা শুধু অসাধারণ সুন্দরীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন ভরা-যৌবনা যুবতীও । তাঁর বয়স এতো কম ছিলো যে তিনি মুহাম্মদের মৃতুর পরও পঞ্চাশ বছর বেঁচে ছিলেন । না, মুহাম্মদ  সালমাতেও  থেমে থকেন নি । আরো অনেক বিয়ে  করেছিলেন । আর শুধু মুসলিম বিধবা নারীদেরই বিয়ে করে তাঁর হারেম আলোকিত করেছিলেন তা নয়  বিয়ে করেছিলে তাঁর পালিত পুত্রের স্ত্রী আর এক  জয়নাবকেও যিনিও ছিলেন যুবতী ও  অসাধারণ সুন্দরী । বিয়ে করেছিলেন কয়েকজন খৃস্টান ও ইহুদি নারীকেও তাঁদের পতি ও প্রিয়জনদের হত্যা করে ।  আসলে বহুগামি মুহাম্মদকে পেয়ে বসেছিলে বিয়েতে, আরো স্পষ্ট করে বললে বলতে হয় তাঁকে পেয়ে বসেছিল অসাধারণ সুন্দরী ও পরস্ত্রী যুবতী মেয়েতে । 




Sunday, April 19, 2015

মুহাম্মদের ছ’বছরের আয়েশাকে বিয়ে করার ঘটনা আজো মুসলিমদের বিব্রত করে


মুহাম্মদ যতগুলি  বিয়ে করেছিলেন তার সবগুলিই নিয়েই বিতর্ক আছে । কিন্তু  তার মধ্যে প্রথম দুটি  বাদ দিলে  বাকি বিয়েগুলির গ্রহণযোগ্যতা  নিয়েই জনমানসে রয়েছে  প্রচুর প্রশ্ন শুধু প্রশ্নই নয়,রয়েছে প্রবল সমালোচনাও    এই বিয়েগুলির মধ্যে দুটি বিয়েতে প্রবল আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিলো সে সময়েও  । সেই আলোড়ন আজো থামে নি ।   বিয়ে দুটির একটি হলো আয়েশার সঙ্গে, আর একটি যয়নবের সঙ্গে  । যয়নব ছিলেন মুহাম্মদের পালিত পুত্রের স্ত্রী এবং আয়েশা ছিলে তাঁর সবচেয়ে প্রিয়, ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত বন্ধু আবুবকরের মেয়েআবুবকর  বয়সেও মুহাম্মদের চেয়ে দু’ বছরের ছোটো ছিলেন মুহাম্মদ সওদাকে বিয়ে করেন খাদিজার মৃত্যুর মাত্র কয়েকদিন পর আর সওদাকে বিয়ে করার মাত্র দু’ সপ্তাহের মধ্যেই বিয়ে করেন আয়েশাকে । না,  মুহাম্মদকে কালিমালিপ্ত করার জন্যে মনগড়া কোনো তথ্য এটা নয় ।  বাংলাদেশের লেখক মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ , যিনি মুহাম্মদকে আল্লাহর শেষ ও শ্রেষ্ঠ নবী বলে অন্ধভাবে বিশ্বাস করেন, এ প্রসঙ্গে ‘নবীগৃহ সংবাদ’ গ্রন্থে লিখেছেন – “সাওদার বিবাহের পর অনুমান  দুই সপ্তাহ অন্তে নবীর সহিত আয়েশার আকদ সম্পাদিত হইল  [দ্রঃ মহানবী (সাঃ)  এঁর বিবাহ, মহম্মদ সাদাত আলী, বাংলাদেশ,  পৃ-৪২]   আয়েশা যখন মাত্র ছ’ বছরের শিশুকন্যা তখন তাঁর সঙ্গে  মুহাম্মদের বিয়ের চুক্তি সম্পাদিত হয় ।  মুহাম্মদ  তখন ৫১/৫২ বছরের প্রৌঢ় । বিয়ের  তিন বছর পর অর্থাৎ বালিকা আয়েশা যখন মাত্র নয় বছরের তখনই মুহাম্মদ তাঁকে স্ত্রী রূপে তাঁর  শয্যাসঙ্গিনী করে নেন ।   এই ঘটনা অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে, কিন্তু ঘটনাটির প্রতিটি বর্ণ সম্পূর্ণ সত্যি । ঘটনাটি ঠিক কী ছিলো তা  আয়েশার মুখ থেকেই শোনা যাক  “The Messenger of God married me when I was six years old and wedding was celebrated when I was nine. We came to Medina and then I had the fever for a month. Then my hair, which had fallen out because of my illness, began to grow thickly again. Umm Ruman [her mother] came to find me while I was playing with my friends on a swing. She called me and I went to her, not knowing what she wanted of me. She took me by the hand and stopped me on the threshold. I cried out “Oh! Oh!” until I was out of breath. She took me into a house in which were some women of Medina, who said, “Happiness and blessings! Good fortune!” My mother gave me into their keeping and they washed my head and made me beautiful. I was not frightened, except in the morning, when the messenger of God came and they gave me to him.” [Vide: Women and the Koran, Anwar Hekmat, p – 43, 44]   না, বর্ণণাটি আনোয়ার হেকমতের মনগড়া  নয় । তিনি একটা হাদিসকে উদ্ধৃত করেছেন মাত্র ।  উদ্ধৃতি সূত্রটি হলোঃ (Al-Bukhari, Al-Shahih; see Maxime Rodinson, -  Mohammed [New York, 1974], p.151.)   আয়েশার বিয়ের বয়স ও বিয়ের এই ঘটনা নিয়ে মুসলিম সমাজেও বিশেষ কোনো মতভেদ বা বিতর্ক নেই । মহম্মদ সাদাত আলী এ  প্রসঙ্গে লিখেছেন– “আয়েশা তখন সাত বৎসরের বালিকা বিবাহের ‘আকদ’ তখনই সম্পন্ন হয় ।  তিন বৎসর পর ১০ বৎসর বয়সে বিবি আয়েশা হযরতের [সাঃ] সঙ্গে সংসার করতে স্বামীর সংসারে আসেন ।” [দ্রঃ মহানবী (সাঃ) এঁর বিবাহ , পৃ-৪১]  
ন’ বছরের কোনো বালিকার শরীর ও মন  যৌন-সম্পর্ক স্থাপনের জন্যে মোটেই উপযুক্ত  নয় । তাই  শরীরবিজ্ঞানে এই বয়সের বালিকার সঙ্গে পুরুষের যৌন-সম্পর্ক স্থাপন নিষিদ্ধ ।  এমন যৌন-সম্পর্ক অনুমোদন করে না আধুনিক যুগের সমাজ-ব্যবস্থাও   তাইতো বাল্যবিবাহ বেআইনী ।  কারণ, এই অল্প বয়সের মেয়েদের  পক্ষে যৌনমিলন আনান্দদায়ক হয় না, যা হয় তা হলো  তীব্র কষ্টকর ও যন্ত্রণাদায়ক ।  এরূপ যৌনমিলনকে কখনই স্বাভাবিক যৌনমিলন বলা যায় না, বলা হয় যৌনপীড়ন বা যৌননির্যাতন যা বলাৎকারের সমতুল্য অপরাধআয়েশাকে প্রথম কয়েকবছর এরূপ অমানবিক যৌনপীড়ন সহ্য করতে হয়েছিলো ।  তাঁকে যৌনপীড়নের সেই  অসহ্য  কষ্ট ও যন্ত্রণা  কীভাবে দিনের পর দিন মুখ বুঁজে  ভোগ করতে হয়েছিলো তা ভাবতে গেলে  আজো আমাদের গায়ে কাঁটা দেয়  ।   এ  
যুগে আইনের  চোখে এটা একটা জঘন্য এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ   সমাজের চোখেও এটা   ক্ষমার অযোগ্য ও  অতিশয়  ঘৃন্য অপরাধ         

 এই অমানবিক ও ঘৃণ্য ঘটনাটি ঘটেছে আজ থেকে ১৩৯০ বছর আগে । ফলে  সে সময়েও এই  ঘটনাটি মক্কা ও মদিনার সমাজে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো  যে আলোড়ন  আজও সম্পূর্ণ থেমে যায় নি,  বরং ঘটনাটি আজো তাড়া করে মুসলিমদের ।  তাই ঘটনাটির গায়ে বৈধতার তকমা দেয়া আবশ্যক হয়ে ওঠে  মুসলিম সমাজের ধর্মগুরু,  মুসলিম ঐতিহাসিক এবং মুসলিম লেখক ও বুদ্ধিজীবীদের । তাঁদের তাই  নানা রকম (অপ)যুক্তির আশ্রয়  নিতে হয়, এবং সে সব (অপ)যুক্তি খাড়া করতে গিয়ে বানাতে হয়েছে অনেক গল্প । তাঁরা বলেন আয়েশাকে বিয়ে করার সঙ্গে যৌনতার সম্পর্ক ছিলো না । তবে কী কী কারণে মুহাম্মদ আয়েশাকে বিয়ে করেছিলেন ? যে কারণগুলি  দেখানো হয় তার কয়েকটি এ রকমঃ  এক]. আবুবকরের খুব সাধ ছিলো যে মুহাম্মদ যেন তাঁর মেয়েকে বিয়ে করেন,  তাই তিনি বিয়ের উপযুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও  আয়েশাকে স্ত্রীরূপে গ্রহণ করার জন্যে মুহাম্মদকে অনুরোধ করেছিলেন ।  আবুবকর ইসলামের জন্যে যে ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন তার প্রাপ্য সম্মান ও প্রতিদান দেয়ার জন্যে মুহাম্মদ  তাঁর অনুরোধ প্রত্যাখান করতে পারেন নি । দুই]. তিনি যদি আয়েশাকে বিয়ে না করতেন তা হলে মুসলমানরা কেউই  কম বয়সী মেয়েদের বিয়ে  করতো না ।   আয়েষাকে বিয়ে করার উদ্দেশ্য ছিলো  একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যাতে  তাঁর শিষ্যরা কম বয়সী মেয়েদের বিয়ে করতে দ্বিধা না করে   তিন].  অল্প বয়সী মেয়েদের বয়স্ক স্বামীর প্রতি কী করণীয় সে শিক্ষা দেয়ার  প্রয়োজনে  আয়েশাকে বিয়ে করেছিলেন ।   সে সময় তরুণী মেয়েরা যারা ইসলামে দীক্ষা নিয়েছিলো  তারা সহজেই আয়েশার নিকটে   মিশতে পারতো । সেই তরুণী মেয়েদের   সামাজিক ও পারিবারিক কী করণীয় তার প্রশিক্ষণ তারা আয়েশার কাছ থেকে পেতো । তাই কিশোরী আয়েশাকে মুহাম্মদের বিয়ে করার বিশেষ দরকার ছিলো ।   চার].  অনুগামিদের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরো সুসংহত, সুদৃঢ় ও মজবুত করার জন্যে আয়েশাকে বিয়ে করেছিলেন পাঁচ]. আয়েশার সঙ্গে মুহাম্মদের বিয়েটা আল্লাহর ইচ্ছানুসারেই হয়েছে । এই   যুক্তিগুলি  এতোই  শিশুসুলভ    হাস্যকর   যা আমাদের ঢাকার সেই প্রবাদটা স্মরণ করিয়ে দেয় – বাবু ও কথা কইয়েন না, ঘোড়ায় হাসবো ।  পঞ্চাশ বছরের প্রৌঢ়ের সঙ্গে ছ’ বছরের মেয়ের বিয়ে দেয়ার অর্থ হলো তাকে অগ্নিকুণ্ডে  নিক্ষেপ করা । আবুবকর পিতা হয়ে তাঁর ছ’ বছরের মেয়েকে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করার জন্যে মুহাম্মদের পায়ে ধরবে এমন কথা কোনো শিশু বা পাগলেও বিশ্বাস করবে না । আর  মুহাম্মদের সঙ্গে  আবুবকরের  সম্পর্ক এতোই দৃঢ় ও মজবুত ছিলো যে তিনি মুহাম্মদের জন্যে সর্বস্ব ত্যাগ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেন নি । সুতরাং তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক আরো দৃঢ় ও মজবুত করার যুক্তিটি অবান্তর আসল ঘটনাটি হলো মুহাম্মদ নিজেই বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন  আবুবকরের কাছে   আবুবকর কিন্তু  তাতে সম্মতি দেন নি । মুহাম্মদ তখন আল্লাহর দোহাই পেড়ে বলেছিলেন যে  এটা তাঁর [মুহাম্মদের] ইচ্ছা নয়,  আল্লাহর ইচ্ছাই তিনি জানিয়েছেন মাত্র  । ফলে আবুবকরের তখন  আর  সম্মতি জানানো ছাড়া গত্যন্তর ছিলো না  মুহাম্মদ যে স্বয়ং আবুবকরের কাছে প্রস্তাব রেখেছিলেন তা   মুসলিম ঐতিহাসিক ও লেখকগণও অনেকেই স্বীকার করেছেন । এ প্রসঙ্গে একজন ঐতিহাসিককে উদ্ধৃত করে মহম্মদ সাদাত আলী লিখেছেন, “অতঃপর তিনি আবুবকরের কাছে তার কন্যা আয়েশাকে বিবাহের জন্যে প্রস্তাব রাখেন । আয়েশা যদিও নাবালিকা ছিলো, তথাপি সর্বসম্মতিক্রমে আকদ এবং তিন বৎসর পর বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয় যতদিন না আয়েশা এগারো বছরে পদার্পণ করেন ।” [দ্রঃ মহানবী (সাঃ) এঁর বিবাহ , পৃ-৪২] আয়েশাকে বিয়ে করার  প্রস্তাব  মুহাম্মদ স্বয়ং  সরাসরি আবুবকরের কাছে রেখেছিলেন এবং আবুবকরের তাতে সম্মতি ছিলো না  তার প্রমাণ হাদিসেও রয়েছে । সে রকম একটি হাদিস হলো – “হযরত উরওয়া [রাঃ] থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকর [রাঃ] –এর কাছে আয়িশা [রাঃ] –এর বিয়ের প্রস্তাব করলেন । আবু বকর [রাঃ] বললেন, কিন্তু আমি তো আপনার ভাই । নবী করিম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তদুত্তরে বললেন, তুমি আমার আল্লহর দ্বীন ও কিতাবের ভাই, কিন্তু সে আমার জন্যে হালাল ।” [বোখারী শরীফ, ১ম থেকে ৭ম খণ্ড একত্রে, মল্লিক ব্রাদার্স, হাঃ – ২০৪৩]
আয়েশাকে বিয়ে করার পেছনে যৌনকামনা ছিলো না এমন দাবি লজ্জা থেকে মুখ লুকানোর করুণ প্রয়াস ছাড়া  কিছু নয় । যেদিন মুহাম্মদ ও আয়েশার বিয়েটা সম্পন্ন হয় সেদিনের ঘটনা থেকেই জানা যায় যে মুহাম্মদ আয়েশার সঙ্গে যৌনমিলনের জন্যে  কতো  ব্যাকুল ও উতলা হয়ে উঠেছিলেন । সেদিন আয়েশার জন্যে তিনি রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করার ধৈর্য  রাখতে পারেন নি ।  বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে  দিনের বেলাতেই  আয়েশার মাকে বলেছিলেন আয়েশাকে তাঁর  শয়নকক্ষে পাঠিয়ে দিতে । এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত ঐতিহাসিক  আনোয়ার হেকমত  যে বর্ণনা দিয়েছেন তা হলো -   “Three years later, when Muhammad  fled his home town and entered Medina, the little girl of nine was delivered to harem. The Apostle of Allah was, in his passion to posses her, was in such a hurry that he did not event wait for nightfall; he asked the bride’s mother to send her to send her to his bedchamber in the morning hours after the wedding ceremony.”[Vide: Women and the Koran, Anwar Hekmat, p – 43]  মুহাম্মদের প্রত্যেকটি বিয়ের পশ্চাতেই যে প্রধান কারণ ছিলো উগ্র যৌনকামনা তা নানা ঘটনায় প্রমাণিত । তিনি যাঁদের বিয়ে করেছিলেন তাঁরা বিধবা হতে পারেন, কিন্তু প্রত্যেকেই ছিলেন অতি সুন্দরী ও যুবতী এবং তাঁদের প্রত্যেকের বয়স ছিলো সতেরো থেকে ত্রিশের বছরের মধ্যে । [একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন খাদিজা, যদিও তাঁর বয়স নিয়ে বিতর্ক আছে ।]  যৌবনশক্তিতে ভরপুর সুন্দরী মেয়েদের বিয়ে করার পেছনে মুহাম্মদের কামশক্তিই যে প্রধান কারণ ছিলো তার স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে হাদিসেওএকটা হাদিস এ প্রসঙ্গে বলছে – “হযরত  কাতাদা [রাঃ] কত্তৃক বর্ণিত, আনাস ইবনে মালেক [রাঃ] তাদের নিকট বর্ণনা করেছেন, নবী করিম সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একই রাতে তার সকল স্ত্রীর সাথে সঙ্গমে মিলিত হতেন এবং এ সময় তাঁর ন’জন স্ত্রী ছিল । [বোখারী শরীফ, ১ম থেকে ৭ম খণ্ড একত্রে, মল্লিক ব্রাদার্স, হাঃ – ২০৬৭]   মুহাম্মদের যৌনক্ষমতা যে সাধারণ পুরুষদের থেকে অনেকগুণ বেশী ছিলো তা জানিয়েছেন ইমাম আল গাজ্জালিও যাঁকে মুহাম্মদের পর সর্বশ্রেষ্ঠ ইসলামি পণ্ডিত বলে মানা হয় ।  গাজ্জালি কী বলেছেন সে বিষয়ে প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ইবন ওয়ারাক লিখেছেন, “The Prophet enjoyed the embraces of nine wives and, according to al-Ghazali, Muhammad was able to perform his conjugal duties to all his nine wives in the morning.” [Vide: Why I am not a Muslim, p-303]  
আয়েশার সঙ্গে বিয়ের ঘটনা থেকে যে সব সিদ্ধান্তে আমরা উপনীত হতে পারি তা হলোঃ
এক]. ইসলামে বাল্যবিবাহ বৈধ । এমনকি ছ’ বছরের শিশু কন্যার বিবাহও ইসলাম সম্মত । এ ক্ষেত্রে বিয়ের চুক্তি সম্পাদিত হবে মেয়ের বাবা ও বরের সঙ্গে যেখানে মেয়ের অনুমতির    প্রয়োজন নেই । এর  অর্থ হলো ইসলাম  পিতাকে তার শিশুকন্যাকে বিক্রি করে অধিকার  প্রদান করেছে ।  
দুই].   ন’ বছরের কিশোরীর সঙ্গেও যৌনমিলন ইসলাম অনুমোদন করে । অর্থাৎ অপ্রাপ্ত বয়স্ক  বালিকাদের উপর বৈধ যৌনমিলনের নামে যৌননির্যাতন করা  ইসলামে বৈধ যা পৃথিবীর বহু দেশেই কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ  
তিন]. পঞ্চাশোর্ধ পুরুষের সঙ্গেও  ছ’ বছরের বালিকার বিয়ে ইসলামে বৈধ । 
চার]. মুসলিম সমাজে  নাবালক মেয়েদের বিয়ে দেয়াটা শুধু প্রথাই নয়, এটা মুসলমানদের কাছে সুন্নত যা প্রত্যেক মুসলমানের পালন করা উচিত ।
  
·        
·         
·         

KARBALA: Truth and Lies

  KARBALA : Truth and Lies           GIASUDDIN                 Translated by SRIJIB BISWAS        ...